কুষ্টিয়ায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কর্মসূচি পণ্ড, মোড়ে মোড়ে তল্লাশিতে আটক ৩০

কুষ্টিয়া শহরের চৌড়হাস মোড়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সর্তক অবস্থান। সোমবার বেলা তিনটার দিকে তোলা
ছবি: প্রথম আলো

কুষ্টিয়ায় পুলিশের ধরপাকড়ের মুখে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বিক্ষোভ কর্মসূচি পণ্ড হয়েছে। কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে সংঘর্ষে সারা দেশে শিক্ষার্থী হত্যার প্রতিবাদে আজ সোমবার বেলা তিনটার দিকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের এ বিক্ষোভ কর্মসূচি ছিল। তবে সকালে থেকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ধরপাকড়ে শেষ পর্যন্ত এ কর্মসূচি করতে পারেননি শিক্ষার্থীরা।

শহরের চৌড়হাস মোড়ে ডাকা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কর্মসূচিকে ঘিরে আজ দিনভর মোড়ে মোড়ে পুলিশ, র‍্যাব ও বিজিবি তল্লাশি চালিয়েছে। তাদের সঙ্গে জেলা প্রশাসনের দুজন ম্যাজিস্ট্রেটও ছিলেন। কাউকে সন্দেহ হলেই আটক করে নেওয়া হয়েছে থানায়। এভাবে সন্ধ্যা ছয়টা পর্যন্ত অন্তত ৩০ জনকে আটক করে থানায় নিয়েছে পুলিশ। এর মধ্যে ১৮ জনই ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী।

বেলা সাড়ে তিনটার দিকে চৌড়হাস মোড় এলাকায় দেখা যায়, সেখানে র‍্যাব বিজিবি ও পুলিশের টহল জোরদার করা হয়েছে। বাস, সিএনজিচালিত অটোরিকশা থেকে কোনো যাত্রী নামার পর তাঁদের ছাত্র মনে হলে জিজ্ঞাসাবাদ ও ব্যাগ তল্লাশি করা হচ্ছে। সন্দেহ হলে তাঁদের আটক করে গাড়িতে করে কুষ্টিয়া মডেল থানায় নেওয়া হয়। ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই শিক্ষার্থী একসঙ্গে বাস থেকে নামলে পুলিশ তাঁদের ব্যাগ তল্লাশি করে। পরে ৫ মিনিট পর গাড়িতে করে তাঁদের থানায় নেওয়া হয়। গাড়িতে তোলার সময় একজন শিক্ষার্থী গণমাধ্যমকর্মীদের বলেন, তাঁরা দুজন শহরে ব্যক্তিগত কাজে এসেছিলেন। কিন্তু পুলিশ ধরে নিয়ে যাচ্ছে।

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের দুজন শিক্ষার্থীকে আটক করে পুলিশ থানায় নিয়ে যাচ্ছে। সোমবার বিকেলে তোলা কুষ্টিয়া শহরের চৌড়হাস মোড়ে

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কোনো নেতার সঙ্গে যোগাযোগ করতে না পারায় তাঁদের বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি। এদিকে বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে কুষ্টিয়া সদর উপজেলা যুবলীগের বেশ কয়েকজন নেতা-কর্মীকে চৌড়হাস মোড়ে বসে থাকতে দেখা যায়।

সন্ধ্যা সাতটার দিকে কুষ্টিয়া মডেল থানার পরিদর্শক (অপারেশন) আবদুল আলীম প্রথম আলোকে বলেন, এখন পর্যন্ত ৩০ জনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নেওয়া হয়েছে। তাঁদের ব্যাপারে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। শীর্ষ কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

কুষ্টিয়া পুলিশ সুপার মুহাম্মদ আলমগীর হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে শহরে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়। দুষ্কৃতকারীদের ধরতে অভিযান চলেছে। আটক ৩০ জনের মধ্যে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৮ জন শিক্ষার্থী রয়েছেন। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে ছাত্রদের ছেড়ে দেওয়া হবে। কোনো ছাত্রকে আটক করা হবে না। তবে কোনো দুষ্কৃতকারীর তথ্যপ্রমাণ পেলে তাঁদের আইনের আওতায় নেওয়া হবে।