পঞ্চগড়ে নৌকাডুবিতে লাশের সংখ্যা বেড়ে ৬৮, এখনো নিখোঁজ ৪

নৌকাডুবিতে মারা যাওয়া আরও একজনের লাশ উদ্ধারের পর স্থানীয়দের ভিড়। আজ মঙ্গলবার দুপুরে পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলার আউলিয়ার ঘাট থেকে প্রায় ৩০০ মিটার দক্ষিণে
ছবি: রাজিউর রহমান

পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলায় করতোয়া নদীতে নৌকাডুবির ঘটনায় আজ মঙ্গলবার বিকেল ৪টা পর্যন্ত মোট ৬৮ জনের লাশ উদ্ধার হয়েছে। ঘটনার দিন রোববার উদ্ধার হয়েছিল ২৪টি লাশ। গতকাল সোমবার উদ্ধার করা হয় ২৬টি লাশ।

স্বজনদের দাবি অনুযায়ী করা তালিকায় এখনো চারজন নিখোঁজ। তাঁদের উদ্ধারে স্থানীয় লোকজনের সহায়তায় ফায়ার সার্ভিসের রংপুর, রাজশাহী ও কুড়িগ্রামের তিনটি ডুবুরি দল উদ্ধার অভিযান অব্যাহত রেখেছে।

আজ মঙ্গলবার বিকেল চারটায় উপজেলার মাড়েয়া বামনহাট ইউনিয়ন পরিষদে খোলা তথ্যকেন্দ্রে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন পঞ্চগড়ের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) ও ঘটনার তদন্ত কমিটির প্রধান দীপঙ্কর রায়।

সোমবার গভীর রাত থেকে মঙ্গলবার বিকেল ৪টা পর্যন্ত ১৮ জনের লাশ উদ্ধার হয়। তাঁরা হলেন শৈলবালা (৫১), সনেকা রানী (৫৫), হরিকিশোর (৪৫), শিল্টু বর্মণ (৩২), মহেন চন্দ্র (৩০), ভূমিকা রায় পূজা (১৫), আখি রানী, (১৫), সুমি রানী (৩৮), পলাশ চন্দ্র (১৫), ধৃতি রানী (১০), সজিব রায় (১০), পুতুল (১৫), কবিতা (৯), রত্না রানী (৪০) মালিন্দ নাথ বর্মণ (৫৬), মণিভূষণ বর্মণ (৪৬), মুনিকা রানী (৩৬), দোলা রানী (৫)। উদ্ধার লাশগুলো স্বজনদের কাছে হস্তান্তরের প্রক্রিয়া চলছে।

নৌকাডুবিতে নিখোঁজদের সন্ধানে করতোয়া নদীর পাড়ে স্বজনেরা

এখন পর্যন্ত মারা যাওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে ২১ শিশু, ৩০ জন নারী ও ১৭ জন পুরুষ রয়েছেন। তাঁদের মধ্যে ঘটনার দিন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়ার পর আটজনের মৃত্যু হয়েছে। বাকিদের লাশ মাড়েয়া আউলিয়ার ঘাট, দেবীগঞ্জ করতোয়া সেতু ও দিনাজপুরের খানসামা সেতু এলাকা থেকে উদ্ধার করা হয়েছে।

গত রোববার দুপুরে মাড়েয়া বাজারের পাশে আউলিয়া ঘাট থেকে শতাধিক মানুষ নিয়ে শ্যালো ইঞ্জিনচালিত নৌকা বড়শশী ইউনিয়নের বদেশ্বরী মন্দিরের দিকে যাচ্ছিল। ঘাট থেকে কিছু দূর যাওয়ার পর নৌকাটি ডুবে যায়।

এ ঘটনায় পঞ্চগড়ের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট দীপঙ্কর রায়কে প্রধান করে পাঁচ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তিন কার্যদিবসের মধ্যে কমিটিকে প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়েছে।

তদন্ত কমিটির প্রধান দীপঙ্কর রায় বলেন, অন্যান্য কাজের সঙ্গে তদন্তের কাজও চলছে। মঙ্গলবার রাত ১২টার মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জেলা প্রশাসকের কাছে জমা দিতে পারবেন বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।

নিখোঁজ ব্যক্তির সংখ্যা কমে যাওয়ার বিষয়ে দীপঙ্কর রায় বলেন, প্রথম দিকে ৬৬ জন নিখোঁজ হওয়ার বিষয়ে স্বজনেরা এসে নাম তালিকাভুক্ত করেন। একই ব্যক্তির একাধিক নাম (ডাকনাম সহ) থাকায় অনেকের নাম দুবার লেখা হয়েছে। তবে শেষ সময় পর্যন্ত আর চারজন নিখোঁজ রয়েছেন বলে তাঁরা নিশ্চিত হয়েছেন।