অপসারণের খবর পেয়ে এক বছর চার মাস পর আজ সোমবার নিজের কার্যালয়ে গিয়ে মারধরের শিকার হয়েছেন ময়মনসিংহের গফরগাঁও পৌরসভার মেয়র ইকবাল হোসেন ওরফে সুমন। বিএনপি সমর্থক কিছু লোকজন তাঁকে মারধর করে পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছেন। আজ বেলা ১১টার দিকে গফরগাঁও পৌরসভা কার্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে।
ইকবাল হোসেন আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়ে টানা দুইবার গফরগাঁও পৌরসভার মেয়র নির্বাচিত হন। ২০২৩ সালের এপ্রিলে ময়মনসিংহ-১০ (গফরগাঁও) সাবেক সংসদ সদস্য ফাহমি গোলন্দাজ ওরফে বাবলের সঙ্গে বিরোধ সৃষ্টি হলে তিনি গফরগাঁও ছেড়ে দেন।
একাধিক প্রত্যক্ষদর্শী জানান, আজ সকাল সোয়া ১০টার দিকে ইকবাল হোসেন পৌরসভার কার্যালয়ে যান। যাওয়ার কিছুক্ষণ পরেই দল বেঁধে বিএনপি সমর্থক কিছু লোক পৌরসভা কার্যালয়ে গিয়ে মেয়রকে মারধর ও পৌরসভার অদূরে গফরগাঁও থানায় নিয়ে পুলিশের হাতে তুলে দেন। বেলা আড়াইটার দিকেও ইকবাল হোসেন পুলিশি হেফাজতে ছিলেন বলে জানা গেছে।
এ বিষয়ে বক্তব্যের জন্য গফরগাঁও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহিনুজ্জামানের মুঠোফোন নম্বরে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি ধরেননি। থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আবু বক্কর সিদ্দিক বলেন, ইকবাল হোসেন গফরগাঁও থানায় পুলিশি হেফাজতে আছেন, তবে তাঁকে মারধর করা হয়েছে কি না, সেটি জানা নেই। দুপুর আড়াইটা পর্যন্ত তাঁর নামে কোনো মামলা হয়নি।
উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানদের পাশাপাশি আজ স্থানীয় সরকার বিভাগ আদেশ জারি করে দেশের ৬০টি জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও সব পৌরসভার মেয়রদের অপসারণ করে। সে খবর পেয়েই ইকবাল হোসেন নিজের কার্যালয়ে গিয়েছিলেন বলে জানা গেছে।
ময়মনসিংহ জেলা দক্ষিণ বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক এবং গফরগাঁও উপজেলার পাগলা থানার বাসিন্দা আক্তারুজ্জামান আজ বিকেলে প্রথম আলোকে বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সরকারের সময় মেয়ররা মানুষের ভোটে নির্বাচিত হননি। যে কারণে সাধারণ মানুষই তাঁকে ধরে পুলিশে দিয়েছে। মারধরের বিষয়টি আমার জানা নেই।’
গফরগাঁওয়ের স্থানীয় লোকজন জানান, আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য ফাহমি গোলন্দাজ ও ইকবাল হোসেন মিলে গফরগাঁওয়ে ত্রাসের রাজত্ব তৈরি করেন। তবে ২০২৩ সালে সংসদ সদস্যের সঙ্গে মেয়রের বিরোধ সৃষ্টি হয়। সংসদ সদস্যের হুমকির কারণে তখন থেকেই ইকবাল হোসেন গফরগাঁও ছাড়া হন। এর এক বছর চার মাস পর আজ তিনি গফরগাঁও পৌরসভায় নিজের কার্যালয়ে যান।