প্রেম থেকে ধর্ষণ, যুবক ও তাঁর বন্ধু কারাগারে

ধর্ষণ
প্রতীকী ছবি

প্রথমে তরুণীর সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কে গড়ে তোলেন যুবক মো. আলিউল (৩০)। বিয়ের কথা বলে তাঁর সঙ্গে শারীরিক সম্পর্কে জড়ান। পরে বন্ধুদের নিয়ে তরুণীকে দলবদ্ধ ধর্ষণ করেছেন। এ ঘটনায় তরুণী মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন। একপর্যায়ে বিয়ের দাবিতে আলিউলের বাড়িতে গিয়ে টানা ১০ দিন অবস্থান করেন।

পরে তরুণীর করা ধর্ষণ মামলায় অভিযুক্ত মো. আলিউল ও তাঁর বন্ধু হারিছ উল্লাহকে গ্রেপ্তার করে শুক্রবার কারাগারে পাঠিয়েছে পুলিশ। শুক্রবার পুলিশ ও মামলার এজাহার সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়।

ওই তরুণী ময়মনসিংহে নান্দাইল উপজেলার একটি গ্রামের বাসিন্দা। তিনি স্থানীয় একটি কলেজ থেকে ২০২২ সালে এইচএসসি পাস করেছেন। গত বুধবার ওই তরুণী বলেন, নান্দাইলের চণ্ডীপাশা ইউনিয়নের চামারউল্লাহ গ্রামের মো. আলিউলের সঙ্গে তাঁর পরিচয় হয়। পরিচয় থেকে প্রেমের সূত্রপাত। একপর্যায়ে আলিউল তাঁকে বিয়ের প্রস্তাব দেন। বিয়ের কথা বলে তাঁর সঙ্গে একাধিকবার শারীরিক সম্পর্ক করেন আলিউল।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, গত ৩০ জুন আলিউল তাঁর মাকে দেখানোর কথা বলে মুঠোফোনে গ্রামের বাড়ি থেকে নান্দাইল শহরে ডেকে আনেন তরুণীকে। তাঁকে নান্দাইল পৌরসভার চণ্ডীপাশা মহল্লার এক বাসিন্দার নির্মাণাধীন বাসায় নিয়ে যান। তিনি ওই বাসার একটি কক্ষে বসে আলিউলের মায়ের জন্য অপেক্ষা করছিলেন। কিছুক্ষণ পর আলিউল ওই কক্ষে প্রবেশ করে তরুণীকে ধর্ষণ করেন। পরে তরুণীকে কক্ষের ভেতরে রেখে বাইরে থেকে দরজা আটকে দেওয়া হয়। তখন তরুণী ভেতর থেকে দরজা খুলে দেওয়ার জন্য চিৎকার-চেঁচামেচি করতে থাকেন। কিছুক্ষণের মধ্যে দরজা খুলে গেলে তিনি দেখতে পান আলিউলের তিন বন্ধু হারিছ উল্লাহ (২৮), এহতেশাম (২৮) ও রুমান মিয়া (২৮) কক্ষে প্রবেশ করছেন। এঁদের মধ্যে দুজন তাঁকে ধর্ষণ করেন। অপরজন দরজায় দাঁড়িয়ে পাহারা দেন। ধর্ষণ শেষে আলিউলের বন্ধুরা হত্যা করে লাশ গুমের হুমকি দিয়ে চলে যান।

এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার রাতে ওই তরুণী থানায় ধর্ষণ মামলা করেন। নান্দাইল মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মিজানুর রহমান আকন্দ মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, মামলার পর সেদিন রাতেই অভিযুক্ত আলিউল ও তাঁর বন্ধু হারিছ উল্লাহকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। শুক্রবার দুজনকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। মামলার এজাহারভুক্ত অন্য আসামিদের গ্রেপ্তার করতে চেষ্টা চলছে।

এর আগে ঘটনাটি মীমাংসা করতে এলাকায় সালিস করেছিলেন স্থানীয় চেয়ারম্যান মো. শাহাব উদ্দিন ভূঁইয়া। শুক্রবার দুপুরে মুঠোফোনে তিনি বলেন, গ্রামের কয়েক শ বাসিন্দার উপস্থিতিতে সালিস হয়। সালিসে তিনি আলিউলের বাবাকে মেয়েটিকে পুত্রবধূর মর্যাদা দিয়ে ঘরে তুলে নিতে সিদ্ধান্ত দিয়েছিলেন। তবে সালিসের সময় আলিউল বাড়িতে ছিলেন না। পরে তাঁর বাবা সেই কথা রাখেননি।