ভালো বেতনের প্রলোভনে গ্রামের এক যুবকের মাধ্যমে ছেলেকে লিবিয়ায় পাঠিয়েছিলেন বাবা। লিবিয়ায় পৌঁছানোর পর ওই ছেলেকে আটকে রেখে নির্যাতন করা হয়। গ্রামে থাকা বাবাকে সেই নির্যাতনের ভিডিও দেখিয়ে আদায় করা হয় মোটা অঙ্কের মুক্তিপণ। পরে মানবপাচার চক্রের মূল হোতা ওই যুবককে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব।
ঘটনাটি টাঙ্গাইলের ঘাটাইল উপজেলার পোড়াবাড়ী গ্রামের। ওই গ্রামের আবদুল কুদ্দুসের ছেলে লিটনকে লিবিয়ায় পাঠিয়েছিলেন হাফিজুর রহমান (৪৫)। লিবিয়ায় সহযোগীদের মাধ্যমে তিনি লিটনকে নির্যাতনের ভিডিও দেখিয়ে আবদুল কুদ্দুসের কাছ থেকে ১৩ লাখ টাকা মুক্তিপণ আদায় করা হয়।
র্যাব জানায়, মঙ্গলবার ভোররাত সাড়ে তিনটার দিকে ঢাকার নয়াপল্টন এলাকায় অভিযান চালিয়ে হাফিজুরকে গ্রেপ্তার করা হয়। তিনি ঘাটাইল উপজেলার পোড়াবাড়ী গ্রামের আ. সাত্তারের ছেলে।
র্যাব-১৪–এর ৩ নম্বর কোম্পানি কম্পান্ডার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রফিউদ্দীন মোহাম্মদ যোবায়ের বলেন, গ্রেপ্তার হাফিজুর ভালো বেতন ও সুযোগ–সুবিধার প্রলোভন দেখিয়ে ৩ জানুয়ারি লিটনকে লিবিয়ায় পাঠান। লিবিয়ায় পৌঁছানোর পর হাফিজুরের সহযোগীরা লিটনকে আটকে রেখে মারধর করেন এবং বাবাকে ফোন করে বলতে বলেন, তিনি লিবিয়ায় ভালোভাবে পৌঁছেছেন এবং ভালো আছেন। এ জন্য হাফিজুরকে যেন ৩ লাখ ২৫ হাজার টাকা দিয়ে দেন। লিটনের কথামতো তাঁর বাবা হাফিজুরকে ওই টাকা দিয়ে দেন।
র্যাবের এই কর্মকর্তা আরও বলেন, ৯ ফেব্রুয়ারি লিটনের বাবাকে আবার লিবিয়া থেকে ভিডিও কল দেওয়া হয়। কলে লিটনকে মারধরের ভিডিও দেখিয়ে মুক্তিপণ বাবদ ১৩ লাখ টাকা দাবি করে চক্রের সদস্যরা। অন্যথায় লিটনকে হত্যার হুমকি দেওয়া হয়। বিষয়টি জানার পর চক্রের মূল হোতা হাফিজুর রহমানকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। তাঁর কাছ থেকে বিভিন্ন ব্যক্তির আটটি পাসপোর্ট, দুটি চেক বই, একটি ডেভিড কার্ড ও নগদ ১০ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়।
হাফিজুরকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে র্যাব জানায়, হাফিজুর তাঁর সহযোগী শফিক ও শাকিলের মাধ্যমে লিটনকে লিবিয়ায় পাঠান। সেখানে লিটনকে আটকে রেখে তাঁর বাবার কাছ থেকে মুক্তিপণ আদায় করেন।
এ ঘটনায় লিটনের বাবা বাদী হয়ে আজ সকালে ঘাটাইল থানায় মানবপাচার আইনে একটি মামলা করেছেন। হাফিজুরকে ঘাটাইল থানা–পুলিশের কাছে হস্তান্তরের প্রক্রিয়া চলছে বলে জানিয়েছে র্যাব।