পানিতে ডুবে মৃত্যু
পানিতে ডুবে মৃত্যু

মাঠে ধান লাগাচ্ছিলেন মা–বাবা, পুকুরে ভাসছিল সন্তানের লাশ

অন্যের জমিতে আমন ধানের চারা রোপণ করছিলেন দিনমজুর হাসিবুল হক ও আমিনা খাতুন দম্পতি। বাড়িতেই খেলছিল তাঁদের তিন ছেলে। কিছুক্ষণ পরই লোকজনের চিৎকার শুনে কাজ রেখে বাড়িতে এসে দেখেন, তাঁদের ১৪ মাস বয়সী ছেলে আমির হোসেন বাড়ির পাশের পুকুরে ভাসছে। শিশুটিকে উদ্ধার করে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়ার পর চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

আজ রোববার বেলা তিনটার দিকে পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া উপজেলার দেবনগড় ইউনিয়নের খাটিয়াগছ এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। মারা যাওয়া শিশু আমির হোসেন ওই এলাকার হাসিবুল হকের ছেলে। এ ঘটনায় এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।

মৃত শিশুর পরিবার ও এলাকাবাসীর বরাত দিয়ে দেবনগড় ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান ছলেমান আলী প্রথম আলোকে বলেন, দুপুরে দিনমজুর দম্পতি তাঁদের তিন ছেলেকে বাড়িতে রেখে প্রতিবেশী এক কৃষকের ধানের চারা রোপণ করছিলেন। তিন শিশু ঘরের ভেতরেই খেলছিল। কিছুক্ষণ পর শিশুদের দাদি হাসিনা খাতুন ঘরে গিয়ে বড় ও মেজ ছেলেকে টেলিভিশন দেখতে দেখেন। কিন্তু ছোট্ট শিশু আমিরকে দেখতে না পেয়ে আশপাশে খুঁজতে যান।

ইউপি চেয়ারম্যান ছলেমান আলী বলেন, প্রতিবেশী নারীরা খুঁজতে খুঁজতে বাড়ির পশ্চিম পাশে পুকুরে শিশুটিকে ভাসতে দেখে চিৎকার দেন। তাঁদের চিৎকারে আশপাশের লোকজন ছুটে আসেন। তখন শিশুটির মা–বাবাও কাজ ফেলে দৌড়ে বাড়িতে আসেন। স্থানীয় লোকজনের সহায়তায় তাঁরা শিশুটিকে পুকুর থেকে তুলে তেঁতুলিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

প্রতিবেশী কামিজুল ইসলাম বলেন, শিশুটির মা–বাবা অন্যের খেতে আমন ধানের চারা রোপণের কাজে যাওয়ার সময় শিশুটিকে সঙ্গে নিয়ে গিয়েছিলেন। পরে অন্য ভাইদের সঙ্গে তাকে বাড়িতে রাখার জন্য পাঠিয়ে দেন। নতুন হাঁটতে শেখা শিশুটি হয়তো দুই ভাইয়ের অজান্তে বাড়ির পাশের পুকুরে গিয়ে পড়ে যায়।

তেঁতুলিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা রাজিনুল হক বলেন, ‘শিশুটিকে আমরা মৃত অবস্থায় পেয়েছি। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আনার আগেই শিশুটির মৃত্যু হয়।’

তেঁতুলিয়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সুজয় কুমার রায় পুকুরের পানিতে ডুবে শিশুটির মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, এ ঘটনায় থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা হয়েছে।