ঢাকা নদীবন্দর সদরঘাট টার্মিনাল
ঢাকা নদীবন্দর সদরঘাট টার্মিনাল

ঈদ উপলক্ষে ৬ এপ্রিল থেকে দক্ষিণাঞ্চলের ৪১টি রুটে চলবে বিশেষ লঞ্চ

পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে আগামী ৬ এপ্রিল থেকে ঢাকা নদীবন্দর সদরঘাট টার্মিনাল থেকে বিশেষ লঞ্চ চলাচল করবে। দক্ষিণাঞ্চলের ৪১টি রুটে চলাচলের জন্য ইতিমধ্যে ১৩০টি লঞ্চ প্রস্তুত রয়েছে। তবে আজ বুধবার থেকেই লঞ্চের অগ্রিম টিকিট সংগ্রহ করতে এসে টিকিট না পেয়ে ফিরে গেছেন বেশ কিছু যাত্রী।

লঞ্চমালিকপক্ষের ভাষ্য, প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির কেবিনের যাত্রীর চাপ কম। যাঁরা লঞ্চে নিয়মিত যাতায়াত করেন, সাধারণত তাঁরাই অগ্রিম টিকিট সংগ্রহ করে থাকেন। অগ্রিম টিকিট ছাড়ার ব্যাপারে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি।

বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) নৌ নিরাপত্তা ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা বিভাগের ঢাকা নদীবন্দরের যুগ্ম পরিচালক ইসমাইল হোসেন বলেন, আগামী ৬ এপ্রিল ঢাকা নদীবন্দর সদরঘাট টার্মিনাল থেকে বিশেষ লঞ্চ চলাচল শুরু করবে। ইতিমধ্যে ১৩০টি লঞ্চ প্রস্তুত করা হয়েছে। ঈদে নদীপথে ঘরমুখী মানুষের নিরাপদ যাত্রা নিশ্চিতে এমন সিদ্ধান্ত হয়েছে।

আজ বুধবার সকালে সরেজমিনে দেখা যায়, দক্ষিণাঞ্চলগামী বেশ কয়েকজন যাত্রী সদরঘাট টার্মিনালে এসে লঞ্চের কেবিনের অগ্রিম টিকিটের জন্য ঘুরছেন। তাঁরা টার্মিনালের পন্টুনে ভেড়ানো লঞ্চগুলোতে গিয়ে অগ্রিম টিকিটের খোঁজ করেন। ঢাকার বাড্ডা থেকে লঞ্চের কেবিনের অগ্রিম টিকিট নিতে সদরঘাট টার্মিনালে আসেন আদিলুর রহমান। তিনি বলেন, ‘৮ এপ্রিল গলাচিপায় গ্রামের বাড়ি যাব। তাই ভিড় এড়াতে আগে থেকেই লঞ্চের অগ্রিম টিকিট বুকিং দিতে এসেছি। এসে জানলাম, এখনো লঞ্চের কেবিনের অগ্রিম টিকিট বিক্রি শুরু হয়নি। শিগগিরই অগ্রিম টিকিট বিক্রি শুরু হবে। এ কথা শুনে সেখান থেকে ফিরে আসি। ভাবছি, দুই থেকে তিন দিন পর আবার আসব।’

ঢাকার মিরপুর এলাকা থেকে আসা ইয়াসমিন বেগম বলেন, ‘আমরা প্রতিবছর পরিবার নিয়ে গ্রামের বাড়িতে ঈদ উদ্‌যাপন করি। লঞ্চের অগ্রিম টিকিট বিক্রির ঘোষণার পর টিকিট নিতে এলে অনেক ভিড় থাকে। আবার প্রায় সময় টিকিটও পাওয়া যায় না। সেই কথা ভেবে আগেভাগে টিকিট নিতে এসেছি। চর ফ্যাশনগামী এমভি টিপু লঞ্চে খোঁজ নিয়ে জানতে পারি, কিছুদিন পর অগ্রিম টিকিট বিক্রি শুরু হবে। তখন এসে টিকিট সংগ্রহ করব।’

চর ফ্যাশনগামী এমভি টিপু লঞ্চের কর্মচারী ইমরান হোসেন বলেন, এখনো লঞ্চের প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির অগ্রিম টিকিট বিক্রি করা শুরু হয়নি। কবে থেকে বিক্রি হবে, সে ব্যাপারে মালিকপক্ষ জানে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে অগ্রিম টিকিটপ্রত্যাশী এক ব্যক্তি বলেন, ট্রেন ও বাসের ক্ষেত্রে আগে থেকেই ঘোষণা দিয়ে নির্ধারিত দিন থেকে অগ্রিম টিকিট বিক্রি করা হয়। অথচ লঞ্চের ক্ষেত্রে সেটি হয় না। লঞ্চ মালিকপক্ষ অগ্রিম টিকিট নিজেদের নিয়ন্ত্রণে রেখে সেগুলো বিক্রি করেন। এতে সাধারণ যাত্রীরা বঞ্চিত হন। যাত্রী হয়রানি বন্ধে সরকারের এসব বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।

অভ্যন্তরীণ নৌ চলাচল সংস্থার ঢাকা নদীবন্দরের যুগ্ম পরিচালক ও এমভি অভিযান-১০ লঞ্চের মালিক হামজা লাল বলেন, যাত্রীদের ওপর নির্ভর করে বিশেষ লঞ্চের ব্যবস্থা করা হবে। সরকার নির্ধারিত ভাড়া যাত্রীদের কাছ থেকে নেওয়া হবে। ইতিমধ্যে যাত্রীরা লঞ্চের অগ্রিম টিকিটের জন্য আসছেন। তবে অগ্রিম টিকিট বিক্রির বিষয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি।