নেত্রকোনার মদনে ভারপ্রাপ্ত ইউএনওর অপসারণ দাবিতে বিএনপির বিক্ষোভ

নেত্রকোনার মদন উপজেলার ভারপ্রাপ্ত উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. রেজোয়ান ইফতেকারের অপসারণ দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল। সোমবার দুপুরে পৌরসভার মহিউদ্দিন মার্কেট এলাকায়
ছবি: প্রথম আলো

নেত্রকোনার মদন উপজেলার ভারপ্রাপ্ত উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. রেজোয়ান ইফতেকারের অপসারণ দাবিতে স্থানীয় বিএনপির নেতৃত্বে বিক্ষোভ মিছিল হয়েছে। আজ সোমবার দুপুরে পৌরসভার মহিউদ্দিন মার্কেট এলাকায় উপজেলা বিএনপির কার্যালয়ের সামনে থেকে এই মিছিল বের হয়। এ সময় মিছিলের সামনে থাকা বিক্ষোভকারী নারীরা হাতে ঝাড়ু নিয়ে ওই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন স্লোগান দিয়ে তাঁর অপসারণের দাবি জানান।

প্রত্যক্ষদর্শী ও ইউএনও কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, বিসিএস ৩৮ ব্যাচের কর্মকর্তা রেজোয়ান ইফতেকার গত ২২ আগস্ট সহকারী কমিশনার (ভূমি) হিসেবে মদন উপজেলায় যোগদান করেন। ২২ অক্টোবর ওই উপজেলার ইউএনও মো. শাহ আলম মিয়া বদলি হয়ে রাজশাহী বিভাগে চলে যান। এরপর রেজোয়ান ইফতেকার নিজ দায়িত্বের পাশাপাশি ইউএনওর দায়িত্ব পালন করছেন। আজ দুপুর পৌনে ১২টার দিকে তাঁর বিরুদ্ধে অসদাচরণ, ওএমএসের ডিলার নিয়োগে অনিয়মসহ বিভিন্ন অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ এনে ঝাড়ুমিছিল বের করা হয়। মিছিলে নেতৃত্ব দেন উপজেলা বিএনপির সভাপতি ও চানগাঁও ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান নূরুল আলম তালুকদার, উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মো. রফিকুল ইসলাম আকন্দ, পৌর বিএনপির সভাপতি মো. কামরুজ্জামান চন্দন, সাধারণ সম্পাদক আবদুল কাদের প্রমুখ। মিছিলটি পৌরসভার প্রধান সড়কগুলো ঘুরে উপজেলা পরিষদসংলগ্ন প্রেসক্লাবের সামনে গিয়ে শেষ হয়। সেখানে নেতৃত্ব দেওয়া বিএনপির ওই নেতারা ইউএনও অপসারণের দাবি জানিয়ে সংক্ষিপ্ত বক্তব্য দেন। ঝাড়ুমিছিলের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।

উপজেলা বিএনপির সভাপতি নূরুল আলম তালুকদার বলেন, ‘রেজোয়ান ইফতেকার যোগদানের পর থেকেই অনিয়ম-দুর্নীতি করে আসছেন। সম্প্রতি ওএসএস ডিলার নিয়োগে অনিয়ম করছেন। তিনি মানুষের সঙ্গেও মন্দ ব্যবহার করেন। তাঁকে দ্রুত অপসারণের দাবি জানাচ্ছি।’

তবে এ ব্যাপারে জানতে চাইলে রেজোয়ান ইফতেকার প্রথম আলোকে মুঠোফোনে বলেন, ‘মদন পৌরসভায় ওএমএসের ছয়জন ডিলার নিয়োগপ্রক্রিয়ার কাজ চলছে। এর মধ্যে ১৬টি বৈধ আবেদন জমা পড়েছে। নিয়ম মেনে লটারির মাধ্যমে ডিলার নিয়োগ করা হবে। কিন্তু উপজেলা বিএনপির সভাপতি ও চানগাঁও ইউপি চেয়ারম্যান নূরুল আলম তালুকদার তাতে বাধা দিচ্ছেন। ওই ইউপি চেয়ারম্যান গতকাল রোববার সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে আমার কার্যালয়ে এসে তাঁর পছন্দের তিনজনকে ডিলার নিয়োগ দিতে চাপ প্রয়োগ করেন। আমি তা না মানায় তিনি রেগে আমাকে অকথ্য-অশ্রাব্য গালিগালাজ করে আমাকে ফ্যাসিবাদের দালাল হিসেবে আখ্যায়িত করেন। বলেন, “আমি উপজেলা বিএনপির সভাপতি। আমার কথামতো লোকজনকেই দিতে হবে। আপনার এসব আমার উপজেলায় এসব চলবে না। কথা না মানলে এখান থেকে দ্রুত চলে যান।”’

রেজোয়ান ইফতেকার বলেন, ‘আমি তাঁর অন্যায়-অনৈতিক প্রস্তাবের কাছে মাথা নত না করায় আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা-ভিত্তিহীন অভিযোগ এনে তিনি ঝাড়ুমিছিল করিয়েছেন। শুনেছি, যেসব নারী মিছিলে অংশ নিয়েছেন, তাঁদের কার্ড করে দেবেন বলে মিছিলে এনেছেন।’

ইউএনওর বক্তব্য শোনার পর নূরুল আলম তালুকদারের সঙ্গে কথা বলতে ফোন করলে তিনি আর কল ধরেননি।

নেত্রকোনা জেলা প্রশাসক বনানী বিশ্বাস বলেন, ‘বিষয়টি শুনেছি। এ ব্যাপারে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।’