ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইলে বিএনপির কর্মী সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তৃতা করছেন বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সহসম্পাদক ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা। শুক্রবার বিকেলে স্থানীয় অন্নদা সরকারি উচ্চবিদ্যালয় মাঠে
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইলে বিএনপির কর্মী সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তৃতা করছেন বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সহসম্পাদক ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা। শুক্রবার বিকেলে স্থানীয় অন্নদা সরকারি উচ্চবিদ্যালয় মাঠে

আমরা যদি ঐক্যবদ্ধ না থাকতে পারি, বিজয় ধূলিসাৎ হয়ে যাবে: রুমিন ফারহানা

বিএনপির নেতা-কর্মীদের ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সহসম্পাদক রুমিন ফারহানা। তিনি বলেন, ‘ষড়যন্ত্র বন্ধ হয় নাই। ষড়যন্ত্র চলছে। আমাদের ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। আমরা যদি ঐক্যবদ্ধ না থাকতে পারি, তবে এ বিজয় ধূলিসাৎ হয়ে যাবে। আমরা ঐক্যবদ্ধ থাকলে ষড়যন্ত্রকারীর শক্তি নাই, আমাদের বিএনপিকে পরাজিত করতে পারে।’

আজ শুক্রবার বিকেলে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইলে বিএনপির এক কর্মী সমাবেশে তিনি এ কথা বলেন। সরাইল অন্নদা সরকারি উচ্চবিদ্যালয় মাঠে আয়োজিত এ সমাবেশে উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেনের সভাপতিত্বে প্রধান বক্তা ছিলেন জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌরসভার সাবেক মেয়র হাফিজুর রহমান মোল্লা (কচি)।

সমাবেশে রুমিন ফারহানা বলেন, ‘আমার কোনো পরিবার নাই। কিন্তু আমার পরিবারের হাজার হাজার সদস্য এখানে উপস্থিত আছেন। আমি আপনাদের কাছে কৃতজ্ঞ। আমি যখন বিভিন্ন জেলায় যাই, সেখানকার চকচকা রাস্তা দেখে আমার ব্যথা লাগে। অথচ আমি এখানে আগে যে রাস্তা দেখেছিলাম, এখনো তা–ই আছে। এমপি আসে, এমপি যায়। আমার সরাইলবাসীর ভাগ্যের পরিবর্তন হয় না।’

নির্বাচনী নানা প্রতিশ্রুতি দিয়ে সংরক্ষিত নারী আসনের সাবেক এই সংসদ সদস্য আরও বলেন, ‘আপনারা যদি আমাকে ভোট দিয়ে নির্বাচিত করেন, আমি আমার শেষ রক্তবিন্দু দিয়ে আপনাদের সেবা করে যাব।’

রুমিন ফারহানা আরও বলেন, ‘আমাদের নেতা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান পরিষ্কার বলেছেন, “এই সরকার (অন্তর্বর্তী সরকার) আমাদের সরকার। এই সরকারকে কোনোভাবেই ব্যর্থ হতে দেওয়া যাবে না।” আমরা চাই না, এই সরকার ব্যর্থ হোক। এই সরকার নির্বাচনের আয়োজন করবে। আমরা ষড়যন্ত্র দেখতে চাই না। আমরা চাই না, এই সময় কোনো দুষ্কৃতকারী চক্র আবার বাংলাদেশের মানুষের ঘাড়ে চেপে বসুক।’

সরাইল উপজেলা ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও সদর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আবদুল জব্বারের সঞ্চালনায় সমাবেশে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন জেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক জহিরুল হক, উপজেলা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি সৈয়দ ইসমাইল হোসেন, সাবেক আহ্বায়ক রিফাত বিন জিয়া, পাকশিমুল ইউপির চেয়ারম্যান কাউছার হোসেন প্রমুখ।

সমাবেশে উপজেলা বিএনপির তিনজনের আংশিক কমিটির কোনো নেতাকে দেখা না গেলেও উপজেলার প্রতিটি ইউনিয়নের নেতা-কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। দুপুরের পর থেকেই ট্রাক, ভ্যান, পিকআপসহ বিভিন্ন যানবাহনে নেতা-কর্মীরা সমাবেশস্থলে জড়ো হন।

বিএনপির উপজেলা পর্যায়ের একাধিক নেতা নাম প্রকাশ না করে বলেন, ‘এখানে বিএনপির মধ্যে একাধিক গ্রুপ আছে। কিছুদিন পরপর সংঘর্ষও ঘটছে। আজকের সমাবেশ বানচাল করতে একটি গ্রুপ চেষ্টা করেছে। কিন্তু তারা ব্যর্থ হয়েছে। এখানে রুমিন ফারহানার নেতৃত্বে কর্মী-সমর্থকেরা ঐক্যবদ্ধ আছেন।’

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে থেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ (সরাইল-আশুগঞ্জ) আসন থেকে সংসদ নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থী হওয়ার জন্য প্রচার চালিয়ে আসছেন রুমিন ফারহানা। মাঝেমধ্যে এলাকায় এসে গণসংযোগসহ নানা সামাজিক অনুষ্ঠানে অংশ নিচ্ছেন তিনি। তবে উপজেলা বিএনপির একটি পক্ষ সেটি ভালোভাবে নিচ্ছে না।