হলফনামা অনুযায়ী, ব্যক্তিগত আয় বেশি আওয়ামী লীগের প্রার্থী আজমত উল্লা খানের।
গাজীপুরে মেয়র প্রার্থীদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি সম্পদ স্বতন্ত্র প্রার্থী গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলমের। কিন্তু ব্যক্তিগত আয় বেশি আওয়ামী লীগের প্রার্থী আজমত উল্লা খানের। তবে আজমত উল্লা খানের চেয়ে তাঁর স্ত্রীর সম্পদের পরিমাণই বেশি।
জাহাঙ্গীর তাঁর বার্ষিক আয় দেখিয়েছেন ৯ লাখ ৫০ হাজার টাকা। পাঁচ বছর আগে ২০১৮ সালে তাঁর বার্ষিক আয় ছিল ২ কোটি ১৬ লাখ ৩৮ হাজার টাকা।
প্রার্থীদের হলফনামা বিশ্লেষণ করে এসব তথ্য পাওয়া গেছে। গাজীপুর সিটি করপোরেশনের রিটার্নিং কর্মকর্তা ফরিদুল ইসলাম বলেন, প্রার্থীদের শিক্ষাগত যোগ্যতা, স্থাবর-অস্থাবর সম্পদ ও মামলার বিষয়সহ অন্যান্য তথ্য লিফলেট আকারে প্রচার করা হবে।
পাঁচ বছর আগে জাহাঙ্গীরের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা ছিল না। মেয়র পদ থেকে বরখাস্ত হওয়ার পর তাঁর বিরুদ্ধে আটটি মামলা হয়েছে। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনেও মামলা হয়েছে। আজমত উল্লার বিরুদ্ধে তিনটি মামলার একটিতে অব্যাহতি পেয়েছেন। বাকি দুটি মামলা ‘রাজনৈতিক হয়রানিমূলক বিবেচনায়’ প্রত্যাহার করা হয়েছে।
আজমত উল্লা এলএলএম পাস। তাঁর বার্ষিক আয় ৩১ লাখ ৬৫ হাজার ৫০৫ টাকা। আইন পেশা থেকে বার্ষিক আয় ছয় লাখ টাকা। শেয়ার, সঞ্চয়পত্র ও ব্যাংক সুদ থেকে আয় ৬২ হাজার ৫০৫ টাকা। কৃষি ও তৈরি পোশাকসহ তিনটি প্রতিষ্ঠান থেকে তিনি বার্ষিক ২৪ লাখ ৩ হাজার টাকা সম্মানী পান। তাঁর লেখা দুটি বই থেকে আয় এক লাখ টাকা। তাঁর হাতে নগদ ৪ লাখ ৩১ হাজার ৭৩৬ টাকা টাকা। স্ত্রীর কাছে ৯২ হাজার ৬১৬ টাকা। ব্যাংকে আজমতের নামে আছে ৪৯ লাখ ৮০ হাজার ৩১১ এবং স্ত্রীর নামে আছে ২ লাখ ৩৪ হাজার ৫০৬ টাকা রয়েছে। স্ত্রীর নামে একটি প্রাডো গাড়ি রয়েছে। নিজের সোনা ২০ তোলা এবং স্ত্রীর সোনা ৩০ তোলা। অকৃষি জমি নিজের নামে ১৪০ দশমিক ৬৩৭৯ শতাংশ এবং স্ত্রীর নামে ২৩৭ দশমিক ৮ শতাংশ রয়েছে। ৭ শতাংশ জমির ওপর তার নির্মাণাধীন বাড়ি।
জাহাঙ্গীর এম এ পাস। তাঁর পাঁচ বছর আগে কৃষি খাত থেকে বার্ষিক আয় ছিল দেড় লাখ টাকা। এবারে কৃষি খাতে আয় দেখিয়েছেন ২ লাখ ২০ হাজার টাকা। বাড়ি ও দোকান ভাড়া থেকে আয় ৪ লাখ ৩০ হাজার টাকা। ব্যবসা থেকে আয় মাত্র ৩ লাখ টাকা। আগে অকৃষি জমি ছিল ৩৩ দশমিক ৭১২৫ শতাংশ। এবার অকৃষি জমি বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৮১৫ দশমিক ২১ শতাংশ। আবাসিক সম্পদ আগে ছিল ৭ দশমিক ৪৩৭ শতাংশ। এবার ৪১ দশমিক ১৫ শতাংশ। হাতে রয়েছে নগদ ৪০ লাখ টাকা। ব্যাংকে জমা ৫০ হাজার টাকা। তাঁর দুটি গাড়ি, ৩৫ ভরি সোনা, একটি বন্দুক ও একটি পিস্তল রয়েছে।
জাতীয় পার্টির প্রার্থী সাবেক সচিব এমএম নিয়াজ উদ্দিনের বার্ষিক আয় চার লাখ টাকা। তাঁর নগদ ১২ লাখ ১৯ হাজার ৯৩৪ টাকা ও ব্যাংকে ২ লাখ টাকা রয়েছে। স্থায়ী আমানত রয়েছে ৫৫ লাখ টাকা, স্ত্রীর নামে ব্যাংকে রয়েছে ৭৫ লাখ টাকা। নিজের ৫০ ভরি স্বর্ণ ও স্ত্রীর ১০০ ভরি স্বর্ণ রয়েছে। তাঁর ৩ দশমিক ৬৬ একর কৃষিজমি ও সাত বিঘা অকৃষি জমি রয়েছে।
জাহাঙ্গীরের মা জায়েদা খাতুন সশিক্ষিত। তাঁর নগদ টাকা রয়েছে ৩৫ লাখ টাকা। ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে জামাকৃত অর্থের পরিমাণ ৫০ হাজার। তাঁর নামে ৩০ তোলার স্বর্ণালংকার রয়েছে।
আবদুল্লাহ আল মামুন মণ্ডল বিএ পাস। তিনি ৩৫ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর। ব্যবসা থেকে আয় ১১ লাখ ৫০ হাজার। ব্যাংকে আছে ৩০ লাখ। একটি জিপ গাড়ি রয়েছে। স্ত্রীর নামে স্বর্ণ আছে ৪০ ভরি।
ইসলামী আন্দোলনের প্রার্থী গাজী আতাউর রহমান তাকমিল পাস। তাঁর শিক্ষকতা ও চিকিৎসা আইন পরামর্শ খাত থেকে আয় ৩ লাখ। নগদ টাকা আছে ৩ লাখ ৮২ হাজার।
সরকার শাহনুর ইসলাম এমবিএ পাস। নগদ টাকা আছে ২৫ লাখ আর ব্যাংকে আছে ১০ লাখ ৫৫ হাজার ৩০৮ টাকা। স্বর্ণ আছে ৫৩ ভরি।