উখিয়ার আশ্রয়শিবিরে পাঁচজন হত্যার ঘটনায় ৬ রোহিঙ্গা আটক

কক্সবাজারের উখিয়ার বালুখালী আশ্রয়শিবির থেকে আটক ছয়জন রোহিঙ্গা সন্ত্রাসী। আজ বিকালে
ছবি: সংগৃহীত

কক্সবাজারের উখিয়ার বালুখালী আশ্রয়শিবিরে (ক্যাম্প-৮ পশ্চিম) মিয়ানমারের দুটি সশস্ত্র গোষ্ঠীর মধ্যে গোলাগুলি ও সংঘর্ষে পাঁচজন নিহত হওয়ার ঘটনায় ছয় রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীকে আটক করা হয়েছে। গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যা থেকে আজ শনিবার ভোররাত পর্যন্ত আশ্রয়শিবিরের বিভিন্ন আস্তানায় অভিযান চালিয়ে তাঁদের আটক করে আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন (এপিবিএন)।

আটক রোহিঙ্গারা হলেন উখিয়ার বালুখালী আশ্রয়শিবিরের (ক্যাম্প-৮ পশ্চিম) এইচ-১৯ ব্লকের আবদুল হাকিমের ছেলে মোহাম্মদ ফোরকান (২৩), পাশের ক্যাম্প-৯-এর বি-৩৩ ব্লকের বাসিন্দা মোস্তাক আহমদের ছেলে এনাম উল্লাহ (২৩), ক্যাম্প-১০-এর এফ-২৮ ব্লকের মোহাম্মদ শাকেরের ছেলে এবাদ উল্লাহ (২৫) ও আরিফ উল্লাহ (৩০), ক্যাম্প-৮ পশ্চিমের বি-২৫ ব্লকের খাইরুল বশরের ছেলে মোহাম্মদ জুবায়ের (২৯) এবং একই ক্যাম্পের বি-৩২ ব্লকের ফকির আহম্মদের ছেলে বি রহমান (৩৪)। এ সময় দেশীয় তৈরি একটি ওয়ান শুটার গান ও একটি গুলি উদ্ধার করা হয়।

আশ্রয়শিবিরের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা ৮ এপিবিএনের সহকারী পুলিশ সুপার (অপারেশন ও মিডিয়া) মো. ফারুক আহমেদ বলেন, গতকাল ভোর সাড়ে পাঁচটার দিয়ে বালুখালী আশ্রয়শিবিরে (ক্যাম্প-৮ পশ্চিম) মিয়ানমারের সশস্ত্র গোষ্ঠী আরসা ও আরএসওর মধ্যে গোলাগুলিতে আরসার পাঁচজন সন্ত্রাসী নিহত হয়েছেন। ঘটনার পরপর ৮ ও ১৪ এপিবিএনের সদস্যরা আশ্রয়শিবিরে সাঁড়াশি অভিযান শুরু করেন। এ সময় হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত ছয়জন রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীকে অস্ত্রসহ আটক করা হয়। তবে আটক ছয়জন আরসা নাকি আরএসওর সদস্য তা নিশ্চিত করেনি এপিবিএন।

গতকালের গোলাগুলি ও সংঘর্ষে নিহতরা হলেন বালুখালী আশ্রয়শিবিরের (ক্যাম্প-৮ ডব্লিউ) এইচ-৪৯ ব্লকের বাসিন্দা আনোয়ার ছাদেক (২২), একই আশ্রয়শিবিরের এ-২১ ব্লকের বাসিন্দা মোহাম্মদ হামিম (২১), বালুখালী আশ্রয়শিবিরের (ক্যাম্প-১০) এইচ-৪২ ব্লকের বাসিন্দা মো. নজিবুল্লাহ (৩২), মধুরছড়া আশ্রয়শিবিরের (ক্যাম্প-৩) বি-১৭ ব্লকের বাসিন্দা নুরুল আমিন (২২) এবং অজ্ঞাতনামা ২৫ বছর বয়সী আরেকজন রোহিঙ্গা।

কক্সবাজারের উখিয়ার রোহিঙ্গা আশ্রয়শিবিরে আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের (এপিবিএন) সন্ত্রাসবিরোধী অভিযান

এ ঘটনার ৯ ঘণ্টা পর গতকাল বেলা তিনটার দিকে বালুখালী আশ্রয়শিবিরে (ক্যাম্প-১১) ছুরিকাঘাতে ছানাউল্লাহ (৪৩) নামের আরেক রোহিঙ্গা যুবককে হত্যা করা হয়। তিনিও আরসা সদস্য বলে নিশ্চিত করে পুলিশ। গোলাগুলির সময় আরএসও সদস্যরা ছানাউল্লাহকে তুলে নিয়ে যায়, ৯ ঘণ্টা পর ছুরিকাঘাত করে হত্যা করা হয়।

উখিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শেখ মোহাম্মদ আলী প্রথম আলোকে বলেন, গতকাল বালুখালী আশ্রয়শিবিরে পৃথক দুটি ঘটনায় ছয় রোহিঙ্গার মৃত্যু হয়েছে। সবাই আরসার সদস্য। এ ঘটনায় আজ বিকেল পর্যন্ত ছয়জনকে আটক করা হলেও থানায় মামলা হয়নি।

পুলিশ ও রোহিঙ্গা নেতাদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, গত ছয় মাসে রোহিঙ্গা আশ্রয়শিবিরে একাধিক সংঘর্ষ ও গোলাগুলির ঘটনায় অন্তত ৫৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে ১৭ জন রোহিঙ্গা মাঝি, ১৭ জন আরসা সদস্য, ১ জন স্বেচ্ছাসেবক। অন্যরা সাধারণ রোহিঙ্গা।