নেত্রকোনার বারহাট্টা উপজেলায় স্কুলছাত্রী মুক্তি রানী বর্মণ (১৫) হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় করা মামলায় আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেছে পুলিশ। গতকাল সোমবার মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা উপপরিদর্শক (এসআই) আবু সায়েম মোহাম্মদ আবদুর রহমান মামলার একমাত্র আসামি মো. কাওছার মিয়াকে (১৮) অভিযুক্ত করে এ অভিযোগপত্র জমা দেন।
আজ মঙ্গলবার দুপুরে প্রথম আলোকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন নেত্রকোনা পুলিশ সুপার মো. ফয়েজ আহমেদ। পুলিশ সুপার বলেন, মুক্তি হত্যা মামলার অভিযোগপত্র গত সোমবার আদালতে দাখিল করা হয়েছে। অবশ্য পুলিশ আরও আগেই তদন্ত কার্যক্রম শেষ করেছিল। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন দেরি করে পাওয়ায় অভিযোগপত্র জমা দিতে কিছুটা সময় লেগেছে। গত ২৭ জুলাই ডাক্তারি প্রতিবেদন পুলিশের হাতে পৌঁছায়। এতে দায়ের কোপে প্রচুর রক্তক্ষরণে মুক্তি বর্মণের মৃত্যু হয় বলে উল্লেখ করা হয়।
পুলিশ সুপার আরও বলেন, ‘আমরা স্কুলছাত্রী হত্যায় অভিযুক্ত বখাটে কাওছারকে ঘটনার ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই আটক করতে পেরেছিলাম। পরে মেয়েটির বাবার করা মামলায় তাঁকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে হাজির করা হলে বিচারকের কাছে তিনি ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিও দিয়েছেন।’
নিহত মুক্তি বর্মণ উপজেলার প্রেমনগর ছালিপুরা গ্রামের নিখিল বর্মণের মেয়ে এবং প্রেমনগর ছালিপুরা উচ্চবিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিল। সে উদীচী বারহাট্টা শাখা কমিটির সাধারণ সদস্য, নারী প্রগতির ইয়ুথ গ্রুপ ও কংস থিয়েটারের সঙ্গেও কাজ করত। আর অভিযুক্ত কাওছার একই গ্রামের বাসিন্দা।
স্থানীয় বাসিন্দা ও থানা–পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, কাওছার মিয়া দীর্ঘদিন ধরে মুক্তি বর্মণকে উত্ত্যক্ত করে আসছিলেন। গত ২ মে বিদ্যালয় থেকে সহপাঠীদের সঙ্গে হেঁটে বাড়ি ফিরছিল মুক্তি। ফেরার পথে মুক্তিকে কুপিয়ে হত্যা করেন কাওছার। ঘটনার পরদিন সন্ধ্যায় স্থানীয় একটি জঙ্গল থেকে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ কাওসারকে আটক করে। পরে নিহতের বাবা বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলা করেন। মামলায় কাওছারকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়। কাওছারের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে দেশের বিভিন্ন স্থানে মানববন্ধন, বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ সমাবেশ হয়।
বারহাট্টা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খোকন কুমার সাহা বলেন, তদন্তকাজ সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করে জেলা জ্যেষ্ঠ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেওয়া হয়েছে। আদালত অভিযোগপত্রটি গ্রহণ করেছেন।