আধা কিলোমিটার অংশ খালে ভেঙে পড়েছে। ভাঙা অংশের কোথাও মাটির বস্তা ফেলে, কোথাও সাঁকো দিয়ে চলাচলের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
খাল খননের ফলে ঝুঁকিতে পড়ে সড়ক। এরপর বর্ষায় সেই পাকা সড়কের বেশ কিছু অংশ ভেঙে পড়ে খালে। এখন উপজেলা সদরে যাতায়াতের ক্ষেত্রে ভোগান্তি পোহাচ্ছেন তিন গ্রামের মানুষ। এ চিত্র সুনামগঞ্জের শান্তিগঞ্জ উপজেলার জয়কলস ইউনিয়নের শান্তিগঞ্জ-আস্তমা সড়কের পার্বতীপুর গ্রামের পাকা সড়কটির।
স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, শান্তিগঞ্জ উপজেলার জয়কলস ইউনিয়নের সুলতানপুর, ভালুকগাঁও ও পার্বতীপুর গ্রামের লোকজনের উপজেলা সদরে যাতায়াতের একমাত্র সড়ক আস্তমা-শান্তিগঞ্জ সড়ক। এ বাইরে পাশের কামরূপদলং, আস্তমাসহ আরও কয়েকটি গ্রামের মানুষ চলাচল করেন এই সড়ক দিয়ে।
গ্রামবাসী জানান, নাইন্দা খালের পাড়ের সুলতানপুর, পার্বতীপুর ও ভালকগাঁও গ্রামের অবস্থান। গত বছর নাইন্দা খাল খনন করেছে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)। ওই সময় খাল থেকে এক্সকাভেটর দিয়ে মাটি তোলায় পার্বতীপুর গ্রামের পাশের সড়কের বেশ কিছু অংশ ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে ওঠে। খালের পাড়ে থাকা পাকা সড়কের নিচ থেকে তখনই মাটি সরে যায়। তখন পানি উন্নয়ন বোর্ডের পক্ষ থেকে কিছু জিও ব্যাগ দেওয়া হয়। কিন্তু এবার বৃষ্টি ও বর্ষা শুরু হওয়ায় ভাঙতে থাকে সড়ক। পাকা সড়ক ধসে পড়ে খালে। এতে যোগাযোগের ক্ষেত্রে ভোগান্তিতে পড়েন গ্রামের বাসিন্দারা। স্থানীয় লোকজন ওই সড়ক ধরেই ইজিবাইক, অটোরিকশা কিংবা মোটরসাইকেলে চলাচল করতেন। এখন ভাঙা অংশে যাতায়াত করতে হয় হেঁটে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) সুনামগঞ্জ কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ শামসুদ্দোহা বলেন, তাঁরা নাইন্দা খাল খনন করেছেন। তখনই সড়কের কিছু অংশের মাটি সরে গিয়েছিল। তাঁরা জিও ব্যাগ ফেলে দিয়েছিলেন। এখন অবশ্য সেখানে তাঁদের কোনো কাজ নেই।
স্থানীয় বাসিন্দারা বলেন, সড়কের সুলতানপুর গ্রামের অংশ ভালো থাকলেও পার্বতীপুর গ্রামের আধা কিলোমিটারের মতো খালে ভেঙে পড়েছে। এলাকাবাসী ভাঙা অংশের কোথাও মাটির বস্তা ফেলে আবার কোথাও সাঁকো দিয়ে চলাচলের ব্যবস্থা করেছেন। সড়কের অন্য অংশও ঝুঁকির মধ্যে আছে। ভাঙা সড়কে শিক্ষার্থী ও নারীদের চলাচলে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে বেশি।
পার্বতীপুর গ্রামের বাসিন্দা তৌফিক মিয়া বলেন, আগে তারা গ্রাম থেকে উপজেলা সদরে ইজিবাইক ও সিএনজিচালিত অটোরিকশায় করে যাতায়াত করতেন। এখন আর তা হচ্ছে না।
গ্রামের আরেক বাসিন্দা রইছ উদ্দিন বলেন, ‘রোগী নিয়ে যেতে সমস্যা বেশি। সড়কটি ভেঙে যাওয়ার পর সংস্কারের কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। এখন আমাদের ঘরবাড়ি ভেঙে যাওয়ার উপক্রম হয়ে পড়ছে। গ্রামের মানুষ চাঁদা তুলে ভাঙা অংশের পাশে মাটি দিয়ে আল (আইল) দিয়েছেন চলাচলের জন্য।’
স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্য মোহাম্মদ লিটন মিয়া বলেন, পাকা সড়কের বাকি অংশও ঝুঁকিপূর্ণ। দ্রুত উদ্যোগ না নিলে মানুষের ঘরবাড়িও ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
শান্তিগঞ্জ উপজেলা প্রকৌশলী আল নূর তারেক জানান, ওই সড়কসহ আরও কিছু সড়ক বিশেষ প্রকল্পের অধীনে আছে। প্রকল্পটি অনুমোদিত হলে কাজ শুরু হবে।