কুপিয়ে হত্যা
কুপিয়ে হত্যা

আওয়ামী লীগ ও বিএনপি সমর্থক দুই বংশের বিরোধে দুই ভাইকে কুপিয়ে হত্যা

কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলায় পূর্বশত্রুতার জেরে দুই ভাইকে নৃশংসভাবে কুপিয়ে হত্যা করেছেন প্রতিপক্ষের লোকজন। আজ বুধবার বিকেল সোয়া পাঁচটার দিকে উপজেলার আড়িয়া ইউনিয়নের ছাতারপাড়া গ্রামের বাজারে এ ঘটনা ঘটে। প্রতিপক্ষের হামলায় আহত আরও দুজনকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তাঁদের মধ্যে একজনকে অস্ত্রোপচার কক্ষে নেওয়া হয়েছে।

নিহত ব্যক্তিরা হলেন দৌলতপুর উপজেলার ছাতারপাড়া গ্রামের রমজান মণ্ডলের ছেলে হামিদুল ইসলাম (৫০) ও তাঁর ছোট ভাই নজরুল ইসলাম (৪৫)। হামিদুল পেশায় কৃষক। তাঁর ভাই কৃষক ও মৌসুমি ব্যবসায়ী। তাঁদের লাশ কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতাল মর্গে রাখা হয়েছে। এ ঘটনার পর এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এলাকায় পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ছাতারপাড়া এলাকায় আধিপত্য বিস্তার নিয়ে আওয়ামী লীগের সমর্থক গাইন বংশ এবং বিএনপির সমর্থক পিয়াদা বংশের মধ্যে তিন যুগের বেশি সময় ধরে বিরোধ চলে আসছিল। এদের বর্তমানে পিয়াদা বংশের নেতৃত্ব দিচ্ছেন গাদি নামে এক ব্যক্তি। আরেক পক্ষ নেতৃত্ব দিচ্ছিলেন নিহত হামিদুল ইসলাম। গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর হামিদুলরা এলাকার বাজারে তেমন যেতেন না।

পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, বুধবার বিকেলে হামিদুল ও তাঁর ভাইসহ কয়েকজন এলাকার বাজারে যান। এ সময় আগে থেকে প্রস্তুতি নেওয়া গাদিসহ তার অনুসারী ইন্তা মালিথা ও সুমন পিয়াদাসহ ১০–১২ জন দেশি অস্ত্র নিয়ে বাজারে তাঁদের ঘিরে ধরেন। হামিদুল ইসলাম ও নজরুল ইসলামকে তাঁরা ধারালো অস্ত্র দিয়ে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে গুরুতর জখম করেন। তাঁদের রক্ষা করতে গেলে আরও দুজনকে জখম করা হয়। পরে স্থানীয় লোকজন তাঁদের উদ্ধার করে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক হামিদুল ইসলাম ও নজরুল ইসলামকে মৃত ঘোষণা করেন।

হামলায় গুরুতর আহত অবস্থায় আসমত আলী (৪৫) ও জামাল হোসেনকে (৩২) কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এ ঘটনার পর এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়লে দৌলতপুর থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে।

হামিদুল ইসলামের ভাতিজা সুজন আলী প্রথম আলোকে বলেন, পূর্বশত্রুতার জেরে তাঁর দুই চাচাকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। তারা সবাই আওয়ামী লীগের রাজনীতি করেন। যাঁরা হামলা চালিয়ে নৃশংসভাবে হত্যা করেছেন, তাঁরা বিএনপির রাজনীতি করেন।

এ বিষয়ে চেষ্টা করেও প্রতিপক্ষ কারও সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। ফলে তাঁদের বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

কুষ্টিয়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম, অপারেশন ও মিডিয়া) পলাশ কান্তি নাথ প্রথম আলোকে বলেন, পূর্বশত্রুতার জেরে প্রতিপক্ষের হামলায় দুই ভাইকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। এলাকায় মিরপুর সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার আবদুল খালেককে পাঠানো হয়েছে। অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক আছে।