কুড়িগ্রামের চর রাজীবপুর উপজেলায় গতকাল মঙ্গলবার রাতে এক চেয়ারম্যান প্রার্থীর চাচাতো ভাই ও ভাগনেকে অপহরণের ঘটনা ঘটেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এর প্রায় দুই ঘণ্টা পর টাকা আদায় করে তাঁদের ছেড়ে দেওয়া হয়।
এই দুজন হলেন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ঘোড়া মার্কার চেয়ারম্যান প্রার্থী মো. আরিফুল কবির তালুকদারের (রানা) চাচাতো ভাই রিফাত তালুকদার (১৮) ও ভাগনে নাজমুল হাসান (২৫)। রিফাত তালুকদার মোহনগঞ্জ ইউনিয়নের গোয়ালপাড়া গ্রামের আবুল কালাম তালুকদারের ছেলে। নাজমুল হাসান একই গ্রামের আবু বক্কর সিদ্দিকের ছেলে।
চর রাজীবপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আশিকুর রহমান এই খবরের সত্যতা নিশ্চিত করেন।
নাজমুল হাসানের ভাষ্য, ‘আমরা তিনজন রাত সাড়ে ১২টার দিকে চর রাজীবপুরে এসেছিলাম পোস্টার ও লিফলেট নিতে। একজনকে পোস্টারসহ ভ্যানে পাঠিয়ে দেওয়ার পর আমি ও রিফাত হাতে কিছু লিফলেট নিয়ে থানার সামনের রোড দিয়ে মোটরসাইকেলে বাড়ি ফিরছিলাম। কিছু দূর এগিয়ে যাওয়ার পর কাচারিপাড়া এলাকায় চারজন আমাদের মোটরসাইকেলের গতি রোধ করেন। তারপর চাবি কেড়ে নিয়ে আমাদের মোটরসাইকেল ছিনিয়ে নেন। তাঁদের একজন আমাদের মোটরসাইকেল নিয়ে চলে যান। অপর তিনজন আমাদের টেনে অপরিচিত জায়গায় নিয়ে যান।’
নাজমুল হাসানের দাবি, অপহরণকারীরা তাঁদের কাছে টাকা দাবি করেন। রিফাত বাসায় যোগাযোগ করে ২০ হাজার টাকা অনলাইন ব্যাংকিংয়ের একটি নম্বরে ১৯ হাজার ৯০০ টাকা পাঠান। রাত তিনটার দিকে তাঁদের ছেড়ে দেওয়া হয়। পরে পুলিশের ভ্যান দেখে তাঁরা সেখানে গেলে পুলিশ দুজনকে থানায় নিয়ে যায়। তবে কারা তাঁদের তুলে নিয়েছিলেন, তিনি বা রিফাত চিনতে পারেননি।
পুলিশ জানায়, মোটরসাইকেলটি রাজীবপুর সদর ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের কাচারিপাড়ায় ঘটনাস্থল থেকে কিছু দূরে রাস্তার পাশ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। অপহরণের শিকার রিফাতের বিকাশ নম্বর থেকে যে নম্বরে রাত ২টা ৫৭ মিনিটে টাকা পাঠানো হয়েছে, নম্বরটি কাচারিপাড়া এলাকার রংমিস্ত্রি এমদাদুল হক নামের এক ব্যক্তির। তিনি চেয়ারম্যান প্রার্থী শফিউল আলমের সমর্থক।
ঘোড়া মার্কার চেয়ারম্যান প্রার্থী মো. আরিফুল কবির তালুকদার রানা বলেন, ‘ঘটনাটি দুঃখজনক। ভোটের আগের রাতে এমন কিছু হবে, সেটা আমি ধারণা করতে পারিনি। প্রশাসনের কাছে সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচারের আশা করছি।’
চর রাজীবপুর থানার ওসি আশিকুর রহমান বলেন, ‘রাত দেড়টার দিকে ঘোড়া মার্কার চেয়ারম্যান প্রার্থী মো. আরিফুল কবির তালুকদার রানা আমাকে অপহরণের ঘটনাটি জানান। পরে আমি নিজেও টহল দলের সঙ্গে বের হই। এমন ঘটনা যেন আর না ঘটে, এ জন্য টহল দলের সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে। দুজনের কাছে ঘটনা শুনেছি। অভিযোগ দিলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’