মুরাদনগরে কালভার্টের সংযোগ সড়ক নেই, চলাচলে ভরসা সাঁকো

সংযোগ সড়ক না থাকায় সাইকেল, রিকশা ও মোটরসাইকেল নিয়ে মানুষ যেতে পারে না। ওই খালের প্রস্থ আনুমানিক ৩০ ফুট।

  • এলজিএসপি-৩ কর্মসূচির আওতায় সাড়ে ছয় লাখ টাকা ব্যয়ে কালভার্টটি নির্মাণ করা হয়।

  • ২০২২ সালের জুন মাসে কালভার্টের কাজ শেষ হয়। কিন্তু এর কোনো সংযোগ সড়ক নেই।

কুমিল্লার মুরাদনগরের রোয়াচালা গ্রামে কালভার্ট নির্মিত হয়েছে এক বছর আগে। সংযোগ সড়ক না থাকায় এটি কোনো কাজে আসছে না। সম্প্রতি তোলা

এক বছর আগে খালের ওপর কালভার্ট (ছোট আকারের সেতু) নির্মাণ করা হয়। কিন্তু সংযোগ সড়ক করা হয়নি। এ অবস্থায় গ্রামবাসী কালভার্টের সঙ্গে বাঁশের সাঁকো লাগিয়ে খালের এপার থেকে ওপারে যাচ্ছে। এতে এলাকার বাসিন্দাদের সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। কালভার্টটি গ্রামবাসীর কোনো কাজেই লাগছে না।

কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার শ্রীকাইল ইউনিয়নের রোয়াচালা গ্রামের আহাদ মিয়ার বাড়ির পাশের খালের ওপর এ কালভার্টের অবস্থান।

এলাকার কয়েক বাসিন্দার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ২০১৯-২০ অর্থবছরে লোকাল গভর্ন্যান্স সাপোর্ট প্রজেক্ট (এলজিএসপি-৩) কর্মসূচির আওতায় রোয়াচালা গ্রামের উত্তরপাড়ার আহাদ মিয়ার বাড়ির পাশের খালের ওপর সাড়ে ছয় লাখ টাকা ব্যয়ে একটি কালভার্ট নির্মাণ করা হয়। ২০২২ সালের জুন মাসে ওই কাজ শেষ হয়। কিন্তু কালভার্ট নির্মিত হলেও গ্রামবাসীর দুঃখ ঘোচেনি। কালভার্টের সঙ্গে সংযোগ সড়ক করা হয়নি। কালভার্টের ওই সড়ক দিয়ে তিন গ্রামের প্রায় পাঁচ হাজার লোক যাতায়াত করে। এ ছাড়া কুড়াখাল ও কুরুণ্ডী গ্রামের ছয়টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের এখান দিয়ে যাতায়াত করতে হয়। সংযোগ সড়ক না থাকায় সাইকেল, রিকশা ও মোটরসাইকেল নিয়ে মানুষ যেতে পারে না। ওই খালের প্রস্থ আনুমানিক ৩০ ফুট।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে অন্তত তিন গ্রামবাসী অভিযোগ করে বলেন, কোনো পরিকল্পনা না করেই প্রকল্পের শেষ পর্যায় এসে তড়িঘড়ি করে অপরিকল্পিতভাবে কালভার্টটি নির্মাণ করা হয়েছে। এতে সরকারের টাকার অপচয় হয়েছে।

রোয়াচালা গ্রামের কৃষক মমতাজ উদ্দিন ও আকবর হোসেন জানান, তাঁরা ভেবেছিলেন, কালভার্ট হওয়ার পর দুর্ভোগ কমবে। এখন দেখেন, তা আরও বেড়েছে।

শ্রীকাইল ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মো. ইকবাল বাহার বলেন, কালভার্টের দুই পাশ খুব গভীর হওয়ায় বরাদ্দের সময় সংযোগের জন্য যে টাকা ধরা হয়েছিল, তা দিয়ে কাজ করা সম্ভব হয়নি। বর্তমানে বর্ষার পানির জন্য দূর থেকে মাটি আনা যাচ্ছে না। পানি কমলেই সেখানে মাটি ফেলে কালভার্টের সঙ্গে সংযোগ করে দেওয়া হবে।

উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মোহাম্মদ আবদুল হাই খান বলেন, ‘এলজিএসপি প্রকল্পটি আমার আওতায় নয়। এটি চেয়ারম্যানদের প্রকল্প। এ প্রকল্পের দায়িত্বে থাকেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও)।’

জানতে চাইলে মুরাদনগরের ইউএনও মো. আলাউদ্দিন ভূঞা বলেন, ‘আমি এখানে যোগদানের আগেই কালভার্টটি হয়েছে। জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে কথা বলে কাজ করা হবে।’