রাজশাহী শহরের পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া পদ্মা নদীর বাঁধের ১৭ কিলোমিটার দখলমুক্ত করার দাবি জানানো হয়েছে। সেই সঙ্গে পদ্মা নদী খনন করে উত্তর রাজশাহী সেচ প্রকল্পের বাস্তবায়নের দাবি জানানো হয়েছে। আন্তর্জাতিক নদী দিবস উপলক্ষে রাজশাহীতে বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) আয়োজিত মানববন্ধন থেকে এসব দাবি জানানো হয়। আজ সোমবার সকালে নগরের সাহেববাজার জিরো পয়েন্টে এই মানববন্ধন হয়।
মানববন্ধনে বক্তব্য দেন বাপা রাজশাহী জেলার সভাপতি ও রাজশাহী রক্ষা সংগ্রাম পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মো. জামাত খান, বাপার কেন্দ্রীয় যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান, রাজশাহীর স্থানীয় সোনার দেশ পত্রিকার সম্পাদক আকবারুল হাসান মিল্লাত, বাপার কেন্দ্রীয় সদস্য আফজাল হোসেন, বাপা জেলা শাখার ক্রীড়া সম্পাদক গোলাম নবী, বাপার সদস্য সোনিয়া বেগম ও রোমানা সিদ্দিকা, সমাজকর্মী অপূর্ব শাখা, নারীনেত্রী সেলিনা বেগম, ওয়েব রাজশাহী শাখার সভাপতি আঞ্জুমান আরা, রাজশাহী সার্ভে ইনস্টিটিউটের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মাহমুদ হোসেন, জাতীয় আদিবাসী পরিষদের নেতা সুভাষ চন্দ্র হেমব্রন প্রমুখ।
বক্তারা বলেন, বাংলাদেশ নদীমাতৃক দেশ। অথচ দখল-দূষণসহ মনুষ্যসৃষ্ট বিভিন্ন কারণে নদীগুলো নানামুখী সংকটের মধ্যে পড়েছে। রাজশাহী অঞ্চলের অনেক নদ-নদীর এখন রুগ্ণদশা। অন্যতম নদী পদ্মারও করুণ অবস্থা। নদী নিয়ে একাধিকবার প্রকল্প গ্রহণ করলেও তা অপরিকল্পিত হওয়ায় দুর্নীতি, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার অভাবে জনগণের অর্থ লুটপাট ও অপচয় হয়েছে। রাজশাহীর গোদাগাড়ী থেকে নাটোরের লালপুর পর্যন্ত পদ্মা নদীর বিভিন্ন পয়েন্টে ৬৮টি স্লুইসগেট অচল হয়ে পড়েছে। এ কারণে বর্ষার মৌসুমে বন্যার মতো দুর্যোগ সৃষ্টি হচ্ছে। ফারাক্কা বাঁধের কারণে সময়মতো পদ্মা নদীতে পানি থাকে না। বর্ষাতেও কাঙ্ক্ষিত পানি আসে না পদ্মায়। আবার শীত শুরুর আগেই পুরো নদী শুকিয়ে খালে পরিণত হয়। এতে পদ্মার সব শাখা নদী ইতিমধ্যে মরেও গেছে। অস্তিত্ব সংকটে পড়েছে চারঘাটের বড়াল। এসব নদী বাঁচাতে হবে। পানির ন্যায্য অধিকার দিতে হবে এবং পদ্মায় পানিপ্রবাহ ফেরাতে হবে।
জামাত খান বলেন, রাজশাহী শহরের পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া পদ্মা নদীর অনেকগুলো শাখা নদী রয়েছে। এগুলোর প্রবাহ নেই। শুকিয়ে গেছে। পদ্মা নদীর ১৭ কিলোমিটার বাঁধ দখল করেছে। নদী দখল করে প্রভাবশালীরা নানা স্থাপনাসহ ইটভাটা, বসতবাড়ি ও বাগানবাড়ি করেছেন। এই দখলকারীরা ১৭ কিলোমিটারের বাঁধ দখল করেছেন। দখলমুক্ত না করার এই ব্যর্থতা পানি উন্নয়ন বোর্ড ও সরকারের। এই বাঁধ দখলমুক্ত করতে হবে।
জামাত খান আরও বলেন, গঙ্গা চুক্তি শেষ হবে ২০২৬ সালে। জানা নেই এই চুক্তির কী হবে। এখানে পানি না থাকলে সব নদী মরে যাবে। পানি ছাড়া এই অঞ্চল মরুভূমি হয়ে যাবে। পানিই যদি না থাকে, তাহলে কিসের উন্নয়ন। পদ্মা নদী শুকিয়ে গেছে। এই পদ্মা নদীকে বাঁচাতে হলে খনন করতে হবে।