সরিষাবাড়ীতে নির্বাচনী পথসভায় হুমকি দেওয়ার ঘটনায় গ্রেপ্তার আওয়ামী লীগ নেতা অধ্যক্ষ সাইদুল হাসান (মাঝে টুপি পরিহিত) ও খন্দকার মোতাহার হোসেন। ২৭ এপ্রিল পুলিশ সুপার কার্যালয় প্রাঙ্গণে
সরিষাবাড়ীতে নির্বাচনী পথসভায় হুমকি দেওয়ার ঘটনায় গ্রেপ্তার আওয়ামী লীগ নেতা অধ্যক্ষ সাইদুল হাসান (মাঝে টুপি পরিহিত) ও খন্দকার মোতাহার হোসেন। ২৭ এপ্রিল পুলিশ সুপার কার্যালয় প্রাঙ্গণে

সরিষাবাড়ী উপজেলা নির্বাচন

এজেন্ট দিলে হাত ভাঙার হুমকি দেওয়া সেই অধ্যক্ষ সাময়িক বরখাস্ত

জামালপুরের সরিষাবাড়ীতে অন্য প্রার্থীর এজেন্ট কেন্দ্রে ঢুকলে হাত ভেঙে দেওয়ার হুমকি দেওয়া আওয়ামী লীগ নেতা ও পিংনা সুজাত আলী ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ সাইদুল হাসানকে পদ থেকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে কলেজ কর্তৃপক্ষ।

গতকাল বৃহস্পতিবার তাঁকে বরখাস্ত করে কলেজের সহকারী অধ্যাপক আবদুল হামিদকে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয়। কলেজ পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান বিষয়টি প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেছেন।

অধ্যক্ষের পদ থেকে সাময়িক বরখাস্ত হওয়া সাইদুল হাসান পিংনা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ও উপজেলা আওয়ামী লীগের শিক্ষা ও মানবসম্পদবিষয়ক সম্পাদক। আচরণবিধি লঙ্ঘনের মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে যাওয়ার পর সম্প্রতি তিনি জামিন পেয়েছেন।

এর আগে গত ২৩ এপ্রিল প্রথম ধাপে সরিষাবাড়ী উপজেলা নির্বাচনে (স্থগিত) আনারস প্রতীকের প্রার্থী রফিকুল ইসলামের পক্ষ নিয়ে পিংনা ইউনিয়ন পরিষদের সামনে একটি পথসভায় হুমকিমূলক বক্তব্য দেন অধ্যক্ষ সাইদুল হাসান। একদিন পর সেই বক্তব্যের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। ওই পথসভায় সাইদুল হাসানের বক্তব্যের সমর্থন করে বক্তব্য দেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য এবং পিংনা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সাবেক চেয়ারম্যান খন্দকার মোতাহের হোসেন।

অধ্যক্ষ সাইদুল হাসান

ভিডিওতে সাইদুলকে বলতে শোনা যায়, ‘...আমাদের মধ্যে অসন্তোষ ও হানাহানি করার চেষ্টা করবেন না। যদি করেন, আমি স্পষ্টভাবে বলে দিতে চাই, তাঁদের দাঁত ভেঙে দেওয়া হবে। যাঁদের দাঁত নাই, তাঁদের চাপার হাড্ডি ভেঙে দেওয়া হবে। ...আমাদের বিরুদ্ধে যাঁরা কথা বলেন, তাঁদের জবান আমরা বন্ধ করে দেব। ৮ মের নির্বাচনে অন্য কোনো মার্কার এজেন্ট আমরা দিতে দেব না।’

হুমকিমূলক বক্তব্য ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ার পর ২৬ এপ্রিল উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা সাখাওয়াৎ হোসেন বাদী হয়ে অধ্যক্ষ সাইদুলসহ দুজনের বিরুদ্ধে আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগে মামলা করেন। ওই ঘটনায় পরদিন তাঁরা রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে ব্যাখ্যা দিতে গেলে ফেরার পথে পুলিশ তাঁদের গ্রেপ্তার করে।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা উপরিদর্শক খন্দকার মাসুদ খালিদ প্রথম আলোকে বলেন, আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগে মামলার পর আওয়ামী লীগের ওই দুই নেতাকে গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠানো হয়।

অধ্যক্ষ সাইদুলকে কলেজের পদ থেকে বরখাস্ত করে সহকারী অধ্যাপক আবদুল হামিদকে গতকাল ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব দেওয়া হয়। আবদুল হামিদ প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমাকে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। আমি দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছি।’