কুষ্টিয়ায় চারটি আসনে জমা দেওয়া ৪৬ জনের মধ্যে ১৭ জন প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বাতিল ঘোষণা করা হয়েছে। এর মধ্যে কুষ্টিয়া-৪ আসনে আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য আবদুর রউফের মনোনয়নপত্রটিও বাতিল করা হয়েছে। ক্রেডিট কার্ডের ঋণ খেলাপির দায়ে তাঁর মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়েছে।
এ ছাড়া নানা অসংগতির কারণে এসব প্রার্থীর মনোনয়ন বাতিল ঘোষণা করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক এহেতেশাম রেজা। মনোনয়ন ফরম জমা দেওয়ার পর যাচাই-বাছাই শেষে বৈধ ও বাতিল হওয়া প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করেন তিনি। সোমবার বেলা ১১টায় জেলা প্রশাসকের সম্মেলনকক্ষে এ কার্যক্রম চলে। এখন কুষ্টিয়ায় চারটি আসনে বৈধ প্রার্থীর সংখ্যা দাঁড়াল ২৯ জনে। পরে সাংবাদিকদের বিফ্রিংয়ে রিটার্নিং কর্মকর্তা বলেন, বাতিল হওয়া প্রত্যেক প্রার্থী আপিল করতে পারবেন।
রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, কুষ্টিয়া-১ (দৌলতপুর) আসনের মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই করা হয়। সেখানে মনোনয়নপত্র জমা পড়েছিল ১৩টি। এর মধ্যে বাতিল হয়েছে চারটি। তাঁরা হলেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ফিরোজ আল মামুন, ন্যাশনাল পিপলস পার্টির ফজলুল হক, স্বতন্ত্র প্রার্থীর ফারুক হোসেন ও উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এজাজ আহমেদের ভাই নাজমুল হুদা।
কুষ্টিয়া ২ (মিরপুর-ভেড়ামারা) আসনে মনোনয়ন দাখিল করা হয় ১৩টি। এর মধ্যে বাতিল ঘোষিত হয়েছে ছয়জনের। তাঁরা হলেন ন্যাশনাল পিপলস পার্টির এ জে এম শাহিদুজ্জামান, বাংলাদেশের সাম্যবাদী দলের আনোয়ার হোসেন, স্বতন্ত্র প্রার্থী শরিফুজ্জামান, সৈয়দ কামরুল আরিফিন ও ইফতেখার মাহমুদ, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের (বিএনএম) প্রার্থী আরিফুর রহমান।
কুষ্টিয়া-৩ (সদর) আসনে ১০ জন মনোনয়নপত্র জমা দেওয়া দেন। এর মধ্যে চারটি মনোনয়নপত্র বাতিল হয়েছে। তাঁরা হলেন বাংলাদেশ তরীকত ফেডারেশনের প্রার্থী মেহেদী হাসান রিজভী, স্বতন্ত্র প্রার্থী রাকিবুজ্জামান, জাতীয় পার্টির নাফিজ আহমেদ খান, বিএনএমের মোস্তফা কামাল।
কুষ্টিয়া-৪ (কুমারখালী-খোকসা) আসনে মোট মনোনয়নপত্র দাখিল হয়েছিল ১০টি। তাঁদের মধ্যে বাতিল ঘোষিত হয়েছে তিনটি মনোনয়নপত্র। বাতিল হওয়া মনোনয়নপত্রের মধ্যে রয়েছেন কুষ্টিয়া-৪ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী ও আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য আবদুর রউফ, স্বতন্ত্র প্রার্থী খাইরুল ইসলাম, জাকের পার্টির ফারুক হোসেন। ক্রেডিট কার্ডের ঋণ খেলাপির দায়ে আবদুর রউফের মনোনয়ন বাতিল হয়। আর খাইরুল ইসলাম একটি সরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের নৈশপ্রহরী। তিনি বলেন, ১ শতাংশ ভোটারের স্বাক্ষরে ত্রুটি ছিল।
মনোনয়নপত্র বাতিলের বিষয়ে সাবেক সংসদ সদস্য আবদুর রউফকে একাধিকবার ফোন দিলেও তিনি ধরেননি। তবে তাঁর কর্মী বলেন, ‘একটি বেসরকারি ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ডের সারচার্জ বাবদ সামান্য কিছু টাকা বকেয়া ছিল, সেটা ইতিমধ্যে পরিশোধ করে অনাপত্তিপত্র পেয়েছি। কাল (মঙ্গলবার) নির্বাচন কমিশনে প্রার্থিতা ফিরে পেতে আপিল করা হবে।’
আর দুপুরে আবদুর রউফ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে তাঁর আইডিতে পোস্ট করেন, ‘প্রিয় কুমারখালী ও খোকসাবাসী আপনারা কেউ হতাশ হবেন না। মনোনয়ন বৈধতা সমাধানের পথে...।’
রিটার্নিং কর্মকর্তা জানান, বেশ কয়েকজন প্রার্থী ঋণখেলাপি। এ ছাড়া মনোনয়নপত্রের সঙ্গে দেওয়া ১ শতাংশ ভোটারের স্বাক্ষরে ত্রুটি থাকায় তাঁদের প্রার্থিতা বাতিল করা হয়েছে। তবে মনোনয়নপত্র বাতিল হওয়া প্রার্থীরা ৫ ডিসেম্বর থেকে ৯ ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন কমিশনে আপিল করতে পারবেন।