দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে চাঁদপুর-১ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সাবেক চেয়ারম্যান গোলাম হোসেনের মনোনয়নপত্র বাতিল ঘোষণা করা হয়েছে। স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্রের সঙ্গে দাখিল করা এক শতাংশ ভোটারের সমর্থনসূচক স্বাক্ষরের তালিকায় গরমিল পাওয়ায় এই ঘোষণা দেন রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক কামরুল হাসান।
তবে গোলাম হোসেনের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, ভোটারদের হুমকি ও ভয়ভীতি দেখানোয় তাঁরা সমর্থনসূচক সই দেওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করছেন। এমন ‘ষড়যন্ত্র’ হতে পারে আশঙ্কা করে তাঁরা আগেই বিষয়টি নির্বাচন কমিশনে জানিয়েছেন। রিটার্নিং কর্মকর্তার এই সিদ্ধান্তের বিষয়ে তাঁরা আপিল করবেন।
গোলাম হোসেন এবারের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়নপ্রত্যাশী ছিলেন। তবে দলের মনোনয়ন পেয়েছেন আওয়ামী লীগের তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক সেলিম মাহমুদ।
এই আসনে গোলাম হোসেনের পাশাপাশি স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র দাখিল করা আরও চারজনের মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়েছে। তবে কোনো ত্রুটি না থাকায় আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী দলের তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক সেলিম মাহমুদের মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণা করেছেন রিটার্নিং কর্মকর্তা। মনোনয়নপত্র বৈধ হওয়া বাকি তিন প্রার্থী হলেন জাতীয় পার্টির (জাপা) এ কে এস শহিদুল ইসলাম, জাসদের সাইফুল ইসলাম ও জাকের পার্টির মো. মাসউদুল হাসান।
রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, আজ সোমবার সকাল সাড়ে ১০টায় জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই শুরু হয়। প্রথমে চাঁদপুর-১ আসনের প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই করা হয়। এ সময় এক শতাংশ ভোটারের সমর্থনসূচক সইয়ের তালিকায় গরমিল পাওয়ায় গোলাম হোসেনের মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়। রিটার্নিং কর্মকর্তা বলেন, সরেজমিনে তালিকায় থাকাদের মধ্যে ১০ জনের তথ্য যাচাই–বাছাইয়ের সময় সাতজনই গোলাম হোসেনকে সই দেওয়ার কথা জানেন না বলে জানিয়েছেন।
সেখানে উপস্থিত গোলাম হোসেন বলেন, এ বিষয়ে তাঁর আইনজীবী বক্তব্য দেবেন। এরপর গোলাম হোসেনের আইনজীবী বলেন, সই দেওয়া ভোটারদের হুমকি দেওয়ায় তাঁরা এখন বিষয়টি অস্বীকার করছেন। মনোনয়নপত্র বাতিলের ‘ষড়যন্ত্রের’ বিষয়ে তাঁরা আগেই নির্বাচন কমিশনে অভিযোগ দিয়েছিলেন।
২ ডিসেম্বর প্রধান নির্বাচন কমিশনার বরাবর দেওয়া ওই চিঠিতে গোলাম হোসেন উল্লেখ করেছেন, তিনি নির্বাচনী এলাকা থেকে অভিযোগ পাচ্ছেন যে একটি কুচক্রীমহল বিভিন্নভাবে ভোটারদের ভয়ভীতি দেখিয়ে সমর্থনসূচক সই প্রদানকারীদের প্রভাবিত করার মাধ্যমে সরেজমিন জরিপ প্রক্রিয়াকে প্রশ্নবিদ্ধ করার অপচেষ্টা করছে। এ বিষয়ে নজরদারি বাড়ানোসহ প্রয়োজনে বিধিসম্মত ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ জানান গোলাম হোসেন। রিটার্নিং কর্মকর্তাকেও ওই চিঠির একটি অনুলিপি দেওয়া হয়।
গোলাম হোসেন বলেন, রিটার্নিং কর্মকর্তা তাঁর মনোনয়নপত্রের বিষয়ে যে সিদ্ধান্ত দিয়েছেন, তা সঠিক হয়নি। তিনি প্রার্থিতা ফিরে পেতে আপিল করবেন।
বিভিন্ন ত্রুটি থাকায় এই আসনে আরও চারজনের মনোনয়নপত্র বাতিল করেছেন রিটার্নিং কর্মকর্তা। তাঁরা হলেন বাংলাদেশ কংগ্রেসের জামাল হোসেন, স্বতন্ত্র প্রার্থী শওকত হোসেন, রাহাদ চৌধুরী ও বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্টের সেলিম প্রধান।