ঘূর্ণিঝড় ‘হামুন’–এর আঘাতে কক্সবাজারের পর চট্টগ্রামের বাঁশখালী উপজেলায় সবচেয়ে বেশি ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার রাতে ঘূর্ণিঝড় আঘাত হানে চট্টগ্রাম উপকূলে। ঝড়ে বাঁশখালীর বিভিন্ন এলাকায় গাছ উপড়ে পড়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে পাঁচ হাজার ঘরবাড়ি। এর মধ্যে ২৮৩টি বাড়ি সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
জেলা প্রশাসন থেকে পাঠানো ক্ষয়ক্ষতির তালিকায় বাঁশখালীর সরল ইউনিয়নে এক নারীর মৃত্যু হয়েছে। তবে বাঁশখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. কামাল উদ্দিন বলেছেন, সরল ইউনিয়নের উত্তর সরল গ্রামের মমতাজ বেগম (৮০) নামের এক নারীর মারা গেছেন, তবে ঝড়ে তাঁর মৃত্যু হয়নি। পুলিশের তদন্তের পর জানা গেছে, তিনি মারা গেছেন জ্বরে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় গাছ ভেঙে পড়ে সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। উপড়ে পড়েছে বিদ্যুতের খুঁটি। উপজেলার বেশির ভাগ এলাকায় বিদ্যুৎ ও মুঠোফোনের নেটওয়ার্ক নেই।
উপজেলার খানখানাবাদ ইউনিয়নের প্রেমাসিয়া এলাকার নুরুল আলমের ঘর ঝড়ে বিধ্বস্ত হয়েছে। জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘মাত্র কয়েক মিনিটের বাতাসে আমার ঘরের টিন উড়ে যায়। পরে বৃষ্টিতে মাটির ঘরও ক্ষতিগ্রস্ত হয়।’
উপজেলার সাধনপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কে এম সালাউদ্দিন কামাল বলেন, ‘বাতাসে সড়কে গাছ ভেঙে চলাচল বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। আমরা তা সরিয়ে দিতে পেরেছি। এর বাইরে ইউনিয়নের সাড়ে তিন শ ঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।’
জানতে চাইলে জেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ কর্মকর্তা মো. সাইফুল্লাহ মজুমদার বলেন, ঝড়ে বাঁশখালীতে বেশি ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। সেখানে একজন লোক মারা গেছেন। আহত হয়েছেন বেশ কয়েকজন। ২৮৩টি বাড়ি সম্পূর্ণ এবং ৪ হাজার ৬৬১ ঘর আংশিক বিধ্বস্ত হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় জরুরি ত্রাণকার্যক্রম চলছে বলে তিনি জানান।
বাঁশখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জেসমিন আক্তারের পাঠানো ক্ষয়ক্ষতির তালিকায় দেখা যায়, ঝড়ে উপজেলায় ১ জনের মৃত্যুর পাশাপাশি ৮৫ জন আহত হয়েছেন। উপড়ে পড়েছে ৫০৭টি বৈদ্যুতিক খুঁটি। এ ছাড়া ১১টি গরু-মহিষ ও ৭টি ভেড়ার মৃত্যু হয়েছে।