অনেক কষ্ট করে খেতে লাগিয়েছিলেন প্রায় এক হাজার করলার চারা। সেগুলো বড় হয়ে এরই মধ্যে মাচায় উঠেছে। ফুল ও ফল আসতে শুরু করেছে। আর কিছুদিন পরই করলা বাজারে তুলবেন—এমন আশা ছিল। কিন্তু রাতের অন্ধকারে খেতের সব করলাগাছের গোড়া কেটে দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। গতকাল রোববার রাতে নোয়াখালীর সুবর্ণচর উপজেলার চর জুবলী ইউনিয়নের উত্তর কচ্চপিয়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
করলাখেতটি উত্তর কচ্চপিয়া গ্রামের কৃষক আবদুল মালেকের। শাকসবজি চাষ করেই তিনি সংসার চালান। আজ সোমবার সকালে খেতে গিয়ে মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ে আবদুল মালেকের। একটি–দুটি নয়, খেতের এক হাজারের বেশি করলাগাছের একই অবস্থা। ধারদেনা করে মাথার ঘাম পায়ে ফেলে যত্ন করে বড় করে তোলা করলাখেতের এমন দৃশ্যে তিনি হতবাক হয়ে পড়েন।
আবদুল মালেকের বড় ভাই আবদুল কাদের প্রথম আলোকে বলেন, ৩৫–৪০ হাজার টাকা খরচ করে ১২ শতাংশ জমিতে করলা চাষ করেছিলেন তাঁর ভাই। গাছগুলো অনেক বড় হয়ে গেছে। আর কয় দিন পরই বিক্রির জন্য বাজারে তুলতেন। কিন্তু রাতের অন্ধকারে যে এভাবে কেউ তাঁর সর্বনাশ করবে, তা কল্পনায়ও ছিল না। কোনো মানুষ এমন কাজ করতে পারে? সকালে ঘটনাটি শুনে তিনি খেতে ছুটে যান। কীভাবে ভাইকে সান্ত্বনা দেবেন, নিজেরও মন খারাপ হয়ে যায়।
আবদুল মালেক বলেন, তাঁর সঙ্গে কারও কোনো শত্রুতা নেই। নিজে কৃষিকাজ করে সংসার চালান। তবে কিছুদিন আগে এক প্রতিবেশীর ছাগল তাঁর ভাইয়ের খেতের আলে লাগানো বরবটিগাছ খেয়ে ফেললে তিনি প্রতিবাদ করেন। তখন ওই প্রতিবেশী কীভাবে ওই খেত থেকে ফসল বাড়িতে নেন, তা দেখে নেওয়ার হুমকি দিয়েছিলেন। কিন্তু ওই হুমকির সঙ্গে করলাগাছের গোড়া কেটে দেওয়ার কোনো সম্পর্ক রয়েছে কি না, তা বুঝে উঠতে পারছেন না।
চর জুবলী ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মো. ইব্রাহিম খলিল বলেন, রাতের অন্ধকারে খেতের করলাগাছ কেটে দেওয়ার ঘটনাটি তিনি শুনেছেন। ব্যস্ততার কারণে দেখতে যেতে পারেননি। মানুষের সঙ্গে মানুষের বিরোধ থাকতে পারে, ভুল–বোঝাবুঝি থাকতে পারে। কিন্তু খেতের ফসলের সঙ্গে কারও তো শত্রুতা হয় না। কারা ওই ঘটনায় জড়িত থাকতে পারে, তাদের শনাক্ত করতে ব্যবস্থা নিতে শুরু করেছেন তিনি। কোনো তথ্য পাওয়া গেলে পরিষদ থেকে তাঁরা ব্যবস্থা নেবেন।