বরিশাল শহরে ছাত্রলীগের ছয় কর্মীকে ছাত্রদলের এক নেতার নেতৃত্বে কুপিয়ে ও পিটিয়ে জখম করা হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে নগরের জীবনানন্দ দাশ সড়কের মল্লিকা কিন্ডারগার্টেনের সামনে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় হওয়া একটি মামলায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
ছাত্রলীগের আহত কর্মীরা হামলার জন্য সরকারি বরিশাল কলেজ ছাত্রদলের আহ্বায়ক রফিকুল ইসলাম ও তাঁর অনুসারীদের দায়ী করেছেন। তবে এ অভিযোগ অস্বীকার করে রফিকুল বলেছেন, ছাত্রলীগের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বে এ হামলা হয়েছে।
হামলায় আহত এইচ এম রিশাদ মাহামুদ সরকারি সৈয়দ হাতেম আলী কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র। ছাত্রলীগে তাঁর কোনো পদ না থাকলেও তিনি কয়েকজন অনুসারী নিয়ে একটি পক্ষের নেতৃত্ব দেন। রিশাদ প্রথম আলোকে বলেন, ‘সরকারি বরিশাল কলেজে ছাত্রলীগের সাংগঠনিক কাজে দীর্ঘদিন ধরে ছাত্রদলের আহ্বায়ক রফিকুল ইসলাম বাধা দিচ্ছেন। এমনকি আমাদের একজনকে সম্প্রতি মারধরও করেছেন। এ নিয়ে রফিকুলের সঙ্গে আমার বিরোধ হয়। গতকাল রাত নয়টার দিকে জীবনানন্দ দাশ সড়কের মল্লিকা কিন্ডারগার্টেন স্কুল এলাকায় আমরা কয়েক বন্ধু আড্ডা দিচ্ছিলাম। এ সময় ছাত্রদল নেতা রফিকুলের নেতৃত্বে ১০-১২ জন আমাদের ওপর রামদা, দা ও লাঠি নিয়ে অতর্কিত হামলা চালান। এ সময় তাঁরা আমাকে ও আমার এক বন্ধুকে কুপিয়ে জখম করেন এবং অন্য চার বন্ধুকে বেধড়ক পিটিয়ে আহত করেন। পরে স্থানীয় লোকজন আমাদের রক্ষায় এগিয়ে এলে তাঁরা পালিয়ে যান।’
হামলায় আহত ব্যক্তিরা হলেন রিশাদ মাহামুদ, আবদুল্লাহ আল মারুফ, মো. ইমন, সোহান হোসেন, এভ্রিল ও খালিদ হাসান। তাঁদের উদ্ধার করে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আহত ব্যক্তিদের মধ্যে রিশাদের অবস্থা গুরুতর। রিশাদ ছাড়া আহত অন্য ব্যক্তিরা স্থানীয় একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী।
সরকারি বরিশাল কলেজ ছাত্রদলের আহ্বায়ক রফিকুল ইসলাম ছাত্রলীগ কর্মীদের ওপর হামলা চালানোর অভিযোগ অস্বীকার করেন। তিনি বলেন, ‘ছাত্রলীগের অভ্যন্তরীণ কোন্দলে কোপাকুপি হয়েছে শুনেছি। তবে ওই ঘটনায় ছাত্রদল জড়িত নয়। আমাকে ফাঁসাতে রাজনৈতিকভাবে নাম ব্যবহার করা হচ্ছে।’ হামলাকারী আটক হলে স্পষ্ট হয়ে যাবে ছাত্রদল নয়, ছাত্রলীগই কোপাকুপি করেছে বলে মন্তব্য করেন রফিকুল।
বরিশাল কোতোয়ালি মডেল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আরাফাত হাসান আজ শুক্রবার বিকেলে প্রথম আলোকে বলেন, এ ঘটনায় ছাত্রদল নেতা রফিকুল ইসলামকে প্রধান আসামি করে ১০ জনের বিরুদ্ধে থানায় মামলা করা হয়েছে। আহত রিশাদ মাহমুদের বড় ভাই আসিফ খান বাদী হয়ে মামলা করেন। মামলায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।