বগুড়ার শেরপুর পৌর শহরের উত্তর বাহিনীর মহাশ্মশান থেকে মৃত নারীর লাশের মাথা কেটে নিয়ে যাওয়ায় থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন তাঁর ছেলে। গত বৃহস্পতিবার রাতের কোনো একসময় এ ঘটনা ঘটে বলে শ্মশানের তত্ত্বাবধায়ক জানিয়েছেন। শ্মশানটির অবস্থান শেরপুর শহরের করতোয়া নদীর তীরে উত্তরসাহা পাড়া মহল্লায়। পৌরসভা থেকে শ্মশানটি দেখভাল করা হয়।
মৃত ওই নারীর নাম গোলাপী সরকার (৫৩)। তিনি ছিলেন শহরের উত্তরসাহা পাড়া মহল্লার লক্ষ্মীতলা এলাকার সুরেশ সরকারের স্ত্রী। ১৭ দিন আগে শারীরিক অসুস্থতার কারণে ওই নারীর মৃত্যু হলে লাশ মহাশ্মশানে সৎকার করা হয়।
শ্মশানের তত্ত্বাবধায়ক প্রমোদ সরকার জানান, বৃহস্পতিবার দিনের বেলায়ও শ্মশানের কোনো সমাধিতে মাটি খোঁড়া ছিল না। তাঁর দাবি, বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে দুর্বৃত্তরা শ্মশানের ভেতরে প্রবেশ করে গোলাপী সরকারের সমাধিস্থল খুঁড়ে লাশের মাথা কেটে নিয়ে গেছে। শুক্রবার সকাল ছয়টায় তিনি জানতে পেরে মৃত ওই নারীর পরিবারের খবর দেন।
গোলাপী সরকারের স্বামী সুরেশ সরকার ও ছেলে রঞ্জিত সরকার বলেন, খবর পেয়ে তিনি এসে দেখেন তাঁর স্ত্রীর সমাধির মাটি খোঁড়া। পরে সমাধিস্থলের গর্ত মাটি দিয়ে ভরাট করেন।
ঘটনা শোনার পর শুক্রবার সকাল সাড়ে আটটায় শ্মশানে গিয়েছিলেন শহরের রামচন্দ্রপাড়ার বাসিন্দা শ্যামল সরকার। তিনি বলেন, গোলাপী সরকারের সমাধিস্থলে গিয়ে দেখেন সমাধির মাটির স্তূপ সরানো। লাশের শরীর পড়ে আছে মাটির নিচে। লাশের মাথা নেই। ধারালো কিছু দিয়ে শরীর থেকে মাথার খুলি কেটে নেওয়া হয়েছে। সমাধিস্থলে একাধিক মানুষের পায়ের ছাপও দেখেছেন তিনি।
এ খবর ছড়িয়ে পড়লে বিভিন্ন এলাকার দুই শতাধিক নারী-পুরুষ শুক্রবার ওই শ্মশানে ভিড় জমান। তাঁরা স্বজনদের সমাধিস্থলের খোঁজখবর নেন। সমাধিস্থল থেকে নারীর মাথা কেটে নেওয়ার ঘটনায় স্থানীয় লোকজন ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তাঁরা জানান, শেরপুর উত্তর বাহিনী মহাশ্মশানে শেরপুর উপজেলাসহ পার্শ্ববর্তী নন্দীগ্রাম, সিরাজগঞ্জের তাড়াশ ও নাটোরের সিংড়া উপজেলা অনেকের লাশ সৎকার করা হয়।
উত্তর বাহিনী মহাশ্মশানের পরিচালনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক শেরপুরের সাবেক কাউন্সিলর চন্দন কুমার দাস প্রথম আলোকে বলেন, এই প্রথম এই শ্মশানের সমাধিস্থল থেকে লাশের মাথা কেটে নিয়ে যাওয়ার ঘটনা এই প্রথম ঘটল।
শেরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শফিকুল ইসলাম জানান, এমন ঘটনার সঙ্গে কেউ জড়িত থাকলে তা অনুসন্ধান করে বের করা হবে।