মাগুরার শ্রীপুর উপজেলায় জুলাই মাসের প্রথম পাঁচ দিনে অন্তত ২১ জন ডেঙ্গু রোগী শনাক্ত হয়েছে।
শ্রীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা গেছে, এই পাঁচ দিনে শনাক্ত রোগীদের বেশির ভাগের বাড়ি পাশাপাশি তিনটা গ্রামে। প্রতিদিন পাঁচ থেকে ছয়জন ডেঙ্গু রোগী হাসপাতালের বহির্বিভাগে চিকিৎসা নিতে আসছেন বলে জানিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা গেছে, জুন মাসে ১৮ জন সন্দেহভাজন রোগীর ডেঙ্গু পরীক্ষা করা হয়। তাঁদের মধ্যে চারজনের ডেঙ্গু শনাক্ত হয়। তাঁদের মধ্যে অন্তত দুজন জেলার বাইরে থেকে এলাকায় এসে অসুস্থ হন। তবে ঈদের পর জুলাই মাসের প্রথম দিন থেকে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা বাড়তে থাকে। জুলাই মাসের ১ তারিখে ৩ জনের পরীক্ষা করে ২ জন, ২ তারিখে ১১ জনের মধ্যে ৪ জন, ৩ তারিখে ১৬ জনের মধ্যে ৮ জন, ৪ তারিখে ১৬ জনের মধ্যে ৪ জন এবং বুধবার ১৪ জনের পরীক্ষা করে ৩ জনের ডেঙ্গু পজিটিভ পাওয়া গেছে।
হাসপাতালে প্যাথলজি বিভাগে কর্মরত ব্যক্তিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গত পাঁচ দিনে শনাক্ত ২১ জনের বেশির ভাগেরই বাড়ি উপজেলার রাজাপুর, তখলপুর ও দুর্গাপুর গ্রামে। এই তিনটি গ্রাম পাশাপাশি।
মঙ্গলবার হাসপাতালে ভর্তি অন্তত চারজন রোগীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, তাঁদের সবার বাড়ি রাজাপুর ও তখলপুর গ্রামে। তাঁদের অন্তত দুজনের বাড়ি কাছাকাছি এলাকায়।
শ্রীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা চিকিৎসক আশরাফুজ্জামান লিটন বুধবার মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, গত দুই সপ্তাহে ১৫ জন ডেঙ্গু রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। যাঁদের বেশির ভাগই সুস্থ হয়ে বাড়িতে ফিরেছেন। আর এখন প্রতিদিন পাঁচ থেকে ছয়জন রোগী বহির্বিভাগে চিকিৎসা নিতে আসছেন।
অবশ্য ভিন্ন চিত্র দেখা গেছে শালিখা ও মহম্মদপুর উপজেলায়। শালিখা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা গেছে, সেখানে গত ১৫ দিনে কোনো ডেঙ্গু রোগী শনাক্ত হননি। একই সময়ে মহম্মদপুরে দুজন ডেঙ্গু রোগী পাওয়া গেছে।
মাগুরা ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট সদর হাসপাতালে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বুধবার সেখানে পাঁচজন ডেঙ্গু রোগী ভর্তি আছেন। জানুয়ারি থেকে জুলাই মাসের ৪ তারিখ পর্যন্ত এই হাসপাতালে মোট ২০ জনের ডেঙ্গু শনাক্ত হয়েছে।
জানতে চাইলে মাগুরার সিভিল সার্জন চিকিৎসক শহীদুল্লাহ দেওয়ান বুধবার মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, চলতি বছর ডেঙ্গুতে জেলায় কোনো মৃত্যু হয়নি। এখন পর্যন্ত যাঁরা আক্রান্ত হয়েছেন, তাঁদের বেশির ভাগই সুস্থ হয়ে গেছেন। আর গত কয়েক দিনে শ্রীপুর থেকে বেশি ডেঙ্গু রোগী শনাক্ত হয়েছে। যেসব এলাকায় রোগী পাওয়া যাচ্ছে, তাঁরাসহ সবাইকে এ ব্যাপারে সচেতন হতে হবে। বাড়ির আশপাশে জমে থাকা পানি ও ময়লা-আবর্জনা পরিষ্কার করতে হবে, যাতে ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব ব্যাপকভাবে ছড়াতে না পারে।