চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলায় দুজনকে কুপিয়ে আহত করার জেরে গণপিটুনিতে মিজানুর রহমান (৩০) নামের এক যুবক নিহত হয়েছেন। গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে উপজেলার বালিয়াডাঙ্গা ইউনিয়নের শিমুলতলা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। আজ শুক্রবার সদর থানায় বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলা করেন তাঁর বাবা তরিকুল ইসলাম। এতে পাঁচজনের নাম উল্লেখ এবং পাঁচ থেকে ছয়জন অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিকে আসামি করা হয়েছে।
ওই ঘটনায় আহত দুজন হলেন শিমুলতলা গ্রামের মসজিদের ইমাম মো. হোসেন ও রাজমিস্ত্রি মো. হারুন। তাঁদের রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয়েছে।
ঘটনা প্রসঙ্গে বালিয়াডাঙ্গা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান তরিকুল ইসলাম ও স্থানীয় কয়েকজন বাসিন্দা বলেন, শিমুলতলা এলাকায় মাদকসেবী ও বিক্রেতাদের দৌরাত্ম্য থামাতে সম্প্রতি একটি মাদক নির্মূল কমিটি গঠিত হয়। এতে সভাপতি হন মো. হোসেন। কমিটির লোকজন কয়েকজন মাদকসেবী ও বিক্রেতাকে পুলিশের হাতে তুলে দেন। এলাকাটিতে মাদকসেবী হিসেবে পরিচিত মিজানুরকেও সতর্ক করা হয়। মিজানুরের বিরুদ্ধে মাদক সেবন করে তাঁর বাবাকে মারধরের অভিযোগ আছে।
সূত্রগুলো আরও জানায়, সতর্ক করার জেরে ক্ষিপ্ত হয়ে গতকাল সকাল সাড়ে সাতটার দিকে শিমুলতলা ঘাটে হোসেনকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কোপাতে শুরু করেন মিজানুর। তাঁকে বাঁচাতে এলে হারুনকেও ছুরিকাঘাত করেন মিজানুর। পরে একটি ডিঙি নৌকায় চড়ে পালানোর চেষ্টা করলে মিজানুরকে ধরে ফেলেন স্থানীয় বাসিন্দারা। তাঁকে গ্রামে এনে গণপিটুনি দিয়ে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়। পরে পুলিশের উদ্যোগে জেলা হাসপাতালে নেওয়া হলে মিজানুরকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক।
মিজানুরের বিরুদ্ধে মাদকসেবন ও মাদক বিক্রির অভিযোগটি সত্য বলে জানান সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এস এম জাকারিয়া। তিনি জানান, হোসেন ও হারুনকে কুপিয়ে আহত করার জেরে ক্ষুব্ধ গ্রামবাসী মিজানুর গণপিটুনি দিয়ে পুলিশকে খবর দেন। পুলিশ তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
মামলার এজাহারে বাদী উল্লেখ করেন, ‘আমার ছেলে মাদকসেবী। মো. হোসেন আমার ফুফাতো ভাই ও এলাকার মাদক নির্মূল কমিটির সভাপতি। তাঁকেসহ দুজন আহত করার জেরে মিজানুরকে গণপিটুনিতে মেরে ফেলেছে এলাকার লোকজন।’