জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়

উপাচার্যের বাসভবনে হামলার ঘটনায় মামলা, সাবেক উপাচার্যসহ আসামি ২১৪

বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন চলাকালে গত ১৫ জুলাই রাতে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের বাসভবনে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনায় সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক নূরুল আলমকে প্রধান আসামি করে ১৪ জনের নাম উল্লেখ করে ও অজ্ঞাতানামা ২০০ জনকে আসামি করে মামলা করা হয়েছে।

গতকাল শনিবার রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের ৪৮তম ব্যাচের শিক্ষার্থী সাজ্জাদুল ইসলাম (২৩) বাদী হয়ে আশুলিয়া থানায় মামলাটি করেন। আজ রোববার সন্ধ্যায় মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু বকর সিদ্দিক।

মামলায় অধ্যাপক নূরুল আলম ছাড়াও শিক্ষকদের মধ্যে সাবেক প্রক্টর অধ্যাপক আলমগীর কবির, আ স ম ফিরোজ উল হাসান, সহযোগী অধ্যাপক মেহেদী ইকবাল, অধ্যাপক বশির আহমেদ, সহযোগী অধ্যাপক ইখতিয়ার উদ্দিন ভূঁইয়া, আরেক সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক শরীফ এনামুল কবির, অধ্যাপক ফরিদ আহমেদ ও অধ্যাপক ইসরাফিল আহমেদকে আসামি করা হয়। এ ছাড়া কর্মকর্তাদের মধ্যে রাজিব চক্রবর্তী, নাহিদুর রহমান খান, সুদীপ্ত শাহীন এবং ছাত্রলীগের নেতাদের মধ্যে সভাপতি আখতারুজ্জামান সোহেল ও সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমানকে আসামি করা হয়েছে।

মামলার সংক্ষিপ্ত এজাহারে বলা হয়, ১৫ জুলাই সন্ধ্যা ছয়টায় সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর ছাত্রলীগের হামলার প্রতিবাদে উপাচার্যের বাসভবনের সামনে বাদীসহ শতাধিক শিক্ষার্থী উপস্থিত হন। এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, প্রক্টরসহ কয়েকজন শিক্ষক আলোচনার নামে কালক্ষেপণ করেন। তাঁরা শিক্ষার্থীদের দাবি না শুনে উল্টো তাঁদের হুমকি দেন। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষক ও প্রশাসনের সরাসরি নির্দেশে শিক্ষার্থীদের ওপর ছাত্রলীগ সভাপতি আখতারুজ্জামান ও সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমানের নেতৃত্বে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মী ও বহিরাগত সন্ত্রাসীরা সশস্ত্র হামলা চালায়। এ সময় কয়েকজন কর্মকর্তা ও শিক্ষক উপস্থিত ছিলেন।

এজাহারে আরও বলা হয়, উপাচার্যের বাসভবনে আটকে পড়া শিক্ষার্থীদের হত্যার উদ্দেশ্যে দফায় দফায় হামলা করা হয়। এতে নিরস্ত্র শিক্ষার্থীদের মধ্যে অন্তত ১৫ জন মারাত্মকভাবে জখম ও আহত হন। হামলাকালে অভিযুক্ত ব্যক্তিদের কাছে রামদা, পেট্রলবোমা ও আগ্নেয়াস্ত্র ছিল বলে উল্লেখ করা হয়।

মামলার বাদী সাজ্জাদুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমাদের ওপর অতর্কিত হামলার বিচার চাইতে গেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন প্রশাসনের মদদে ছাত্রলীগ ও ভাড়াটে সন্ত্রাসীরা হামলা করেছিল। দীর্ঘদিন অপেক্ষা করলেও পুলিশ বা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেউ মামলা করেনি। ১৫ জুলাইয়ের ঘটনায় আমিসহ আমার সহযোদ্ধাদের ওপর হামলার ঘটনায় প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে যুক্ত থাকায় অভিযুক্ত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে মামলা করেছি। আশা করি, আসামিদের পুলিশ দ্রুতই গ্রেপ্তার করে আইনের মুখোমুখি করবে।’

আশুলিয়া থানার ওসি আবু বকর সিদ্দিক প্রথম আলোকে বলেন, গতকাল সাজ্জাদুল ইসলাম বাদী হয়ে ১৪ জনের নামসহ এবং অজ্ঞাতনামা ১৫০ থেকে ২০০ জনের বিরুদ্ধে একটি মামলা করেছেন।