খুলনার কয়রা উপজেলার একটি বসতবাড়ির রান্নাঘর থেকে ১০ ফুট লম্বা একটি অজগর উদ্ধার করেছে বন বিভাগ। আজ রোববার সকালে উপজেলার মহেশ্বরীপুর গ্রামের সামাদ গাজীর বাড়ির রান্নাঘর থেকে অজগরটি উদ্ধার করা হয়।
বন বিভাগ সূত্র জানায়, ১০ ফুট লম্বা অজগরটির ওজন ২০ কেজি। লোকালয় থেকে উদ্ধারের পর সাপটিকে সুন্দরবনে অবমুক্ত করা হয়েছে। খাবারের সন্ধানে বা উপযুক্ত পরিবেশের খোঁজে অজগরটি বন ছেড়ে লোকালয়ে চলে আসে বলে ধারণা বন বিভাগের।
অজগরটি রান্নাঘরের মধ্যে ফোঁস ফোঁস শব্দ করছিল জানিয়ে বাড়ির মালিক সামাদ গাজী বলেন, ‘সকালে রান্নাঘরের ভেতর থেকে অস্বাভাবিক আওয়াজ শুনে ঘরের মধ্যে উঁকি মেরে দেখি একটি বিশাল অজগর শুয়ে আছে। ভয়ে দূরে সরে গিয়ে বন বিভাগকে খবর দিই। তারা এসে সাপটিকে ধরে নিয়ে গেছে। অজগরটি বাড়ির পাশের সুন্দরবনের নদী সাঁতরে লোকালয়ে চলে এসেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।’
সুন্দরবনের কয়রা টহল ফাঁড়ির ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ফারুকুল ইসলাম বলেন, মহেশ্বরীপুর গ্রামের পাশের একটি ছোট নদী পেরোলেই সুন্দরবনের গহিন জঙ্গল। আজ সকাল সাতটার দিকে স্থানীয় বাসিন্দারা সাপটিকে উদ্ধার করতে খবর দেন। পরে বনপ্রহরীদের নিয়ে সাপটি উদ্ধার করে নিয়ে আসা হয়। বেলা ১১টার দিকে অজগরটিকে সুন্দরবনের কয়রা টহল ফাঁড়ি-সংলগ্ন এলাকায় অবমুক্ত করা হয়েছে।
খাবারের সন্ধানে বা উপযুক্ত পরিবেশের খোঁজে অজগরটি বনাঞ্চল ছেড়ে লোকালয়ে চলে আসতে পারে জানিয়ে বন কর্মকর্তা ফারুকুল ইসলাম বলেন, বন সংলগ্ন লোকালয়ের বাড়িঘরে ঢুকে সহজেই অজগর হাঁস-মুরগি ধরে খেতে পারে। এখন পর্যন্ত লোকালয় থেকে যেসব অজগর উদ্ধার হয়েছে, তার বেশির ভাগই বাড়িঘরের মুরগির খোপ, রান্নাঘর বা এর আশপাশ থেকে উদ্ধার হয়েছে।
সুন্দরবনের কাশিয়াবাদ ফরেস্ট স্টেশনের কর্মকর্তা নির্মল কুমার মণ্ডল বলেন, ৬ নভেম্বর লোকালয় থেকে সাত ফুট লম্বা আরও একটি অজগর উদ্ধার করে সুন্দরবনে তাঁর স্টেশনের আওতাধীন এলাকায় অবমুক্ত করা হয়। মানুষ আগে সাপ দেখলে পিটিয়ে মেরে ফেলতেন। বন্য প্রাণী হত্যা না করতে প্রচার-প্রচারণা করায় মানুষ সচেতন হচ্ছে। তারই সূত্র ধরে আজকে উদ্ধার হওয়া অজগরটিও রক্ষা পেল।