বৃষ্টিতে ভিজেই শিক্ষার্থীরা কোটা পুনর্বহালের প্রতিবাদে বিক্ষোভ করছেন। আজ বেলা ১১টা ১৫ মিনিটের দিকে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকে
বৃষ্টিতে ভিজেই শিক্ষার্থীরা কোটা পুনর্বহালের প্রতিবাদে বিক্ষোভ করছেন। আজ বেলা ১১টা ১৫ মিনিটের দিকে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকে

কোটা সংস্কারের দাবি

বৃষ্টির মধ্যেই রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মহাসড়ক অবরোধ

প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির সরকারি চাকরিতে কোটা পুনর্বহালের প্রতিবাদ ও কোটা সংস্কারের দাবিতে বৃষ্টি উপেক্ষা করে ঢাকা-রাজশাহী মহাসড়ক অবরোধ করেছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।

আজ বৃহস্পতিবার সকাল ১০টা ৪৫ মিনিটে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে অবস্থান নিয়ে এ কর্মসূচি পালন করেন তাঁরা। পরে দুপুর ১২টা ১০মিনিটের দিকে অবরোধ প্রত্যাহার করেন শিক্ষার্থীরা।

এর আগে সকাল সাড়ে নয়টা থেকেই শিক্ষার্থীরা প্যারিস রোডে জড়ো হতে শুরু করেন। সকাল ১০টা ৪০ মিনিট পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের প্যারিস রোডে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন তাঁরা। পরে মিছিলটি নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে ঢাকা-রাজশাহী মহাসড়ক অবরোধ করেন। আর ওই সময় হানা দেয় বৃষ্টি। তবে শিক্ষার্থীরা বৃষ্টিতে ভিজেই বিক্ষোভ চালিয়ে যান। পরে দুপুর সোয়া ১২টার দিকে বিক্ষোভ মিছিল বের করেন তাঁরা। এটি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটক থেকে কাজলা গেট হয়ে প্যারিস রোডে এসে শেষ হয়।

কর্মসূচিতে শিক্ষার্থীদের হাতে বিভিন্ন লেখা-সংবলিত প্ল্যাকার্ড দেখা যায়। সেই সঙ্গে ‘সারা বাংলা খবর দে, কোটা পদ্ধতির কবর দে’, ‘দেশটা নয় পাকিস্তান, কোটার হোক অবসান’, ‘মেধাবীদের কান্না আর না আর না’, ‘কোটাবৈষম্য নিপাত যাক, মেধাবীরা মুক্তি পাক’, ‘মেধাবীদের যাচাই করো, কোটা পদ্ধতি বাতিল করো’, ‘মুক্তিযুদ্ধের বাংলায়, কোটাপদ্ধতির ঠাঁই নাই’, ‘১৮-এর হাতিয়ার, গর্জে উঠুক আরেকবার’ ইত্যাদি স্লোগান শোনা গেছে। এ ছাড়া বিখ্যাত কবিদের বিভিন্ন প্রতিবাদী কবিতা পড়ে শোনান শিক্ষার্থীরা।

বিক্ষোভ কর্মসূচি চলাকালে কয়েকটি দাবি উত্থাপন করা হয়। এগুলো হলো ২০১৮ সালের পরিপত্র বহাল সাপেক্ষে কমিশন গঠন করে সরকারি চাকরিতে কোটাপদ্ধতি সংস্কার; কোটায় প্রার্থী না পাওয়া গেলে মেধা কোটায় শূন্যপদ পূরণ; জীবদ্দশায় সব ধরনের সরকারি প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় একবার কোটার ব্যবহার (এর মধ্যে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষা অন্তর্ভুক্ত); প্রতি জনশুমারির সঙ্গে অর্থনৈতিক সমীক্ষার মাধ্যমে বিদ্যমান কোটার পুনর্মূল্যায়ন নিশ্চিত এবং দুর্নীতিমুক্ত, নিরপেক্ষ ও মেধাভিত্তিক আমলাতন্ত্র নিশ্চিত করতে কার্যকর ব্যবস্থা।

এ সময় বিক্ষোভ কর্মসূচির মুখপাত্র ও রাকসু আন্দোলন মঞ্চের সদস্যসচিব আমানুল্লাহ আমান বলেন, ‘আমাদের দাবিগুলো যৌক্তিক। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমাদের বিক্ষোভ চলবে।’

গত ৫ জুন সরকারি প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির চাকরিতে মুক্তিযোদ্ধাসহ অন্য কোটা বাতিল করে জারি করা পরিপত্র অবৈধ ঘোষণা করেন হাইকোর্ট। ফলে সরকারি চাকরিতে ৩০ শতাংশ মুক্তিযোদ্ধা কোটা বহাল থাকবে। মুক্তিযোদ্ধা সন্তানের করা এক রিটের পরিপ্রেক্ষিতে জারি করা রুল যথাযথ ঘোষণা করে হাইকোর্টের একটি বেঞ্চ এ রায় দেন।