পঞ্চগড়ের করতোয়ায় নৌকাডুবি

নিখোঁজ তিনজনের সন্ধানে নবম দিনের মতো চলছে উদ্ধার অভিযান

দুর্ঘটনাস্থল করতোয়া নদীর দুই পাড়ে স্থানীয় লোকজনের ভিড়
ফাইল ছবি

পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলায় করতোয়া নদীতে নৌকাডুবির ঘটনায় নিখোঁজ তিনজনের সন্ধানে নবম দিনের মতো উদ্ধার অভিযান চলছে। আজ সোমবার সকাল সাড়ে পাঁচটা থেকে ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা করতোয়া নদীতে উদ্ধার অভিযান শুরু করেন। তবে সকাল পৌনে ১০টা পর্যন্ত কোনো লাশের সন্ধান পাওয়া যায়নি।

এদিকে আজ ভোরে রংপুর, কুড়িগ্রাম ও রাজশাহী থেকে আসা ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরিরা উদ্ধার কার্যক্রম বন্ধ করে নিজ নিজ ইউনিটে ফিরে গেছেন। তবে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের পঞ্চগড়, বোদা ও দেবীগঞ্জ ইউনিটের সদস্যরা উদ্ধার অভিযান চালিয়ে যাচ্ছেন।

এর আগে গত বুধবার ঘটনার চতুর্থ দিন বিকেলে এক ব্যক্তির লাশ উদ্ধারের পর থেকে আর কোনো লাশ উদ্ধার হয়নি। ভয়াবহ এ নৌকাডুবিতে এখন পর্যন্ত ৬৯ জনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। তবে নিখোঁজ তিন ব্যক্তির সন্ধান না পাওয়া পর্যন্ত উদ্ধার অভিযান চলবে বলে জানিয়েছে জেলা প্রশাসন।

জেলা প্রশাসনের তালিকা অনুযায়ী, নৌকাডুবিতে এখন পর্যন্ত নিখোঁজ তিনজন হলেন পঞ্চগড় সদর উপজেলার ঘাটিয়ারপাড়া এলাকার জয়া রানী (৪), দেবীগঞ্জ উপজেলার হাতিডোবা-ছত্রশিকারপুর এলাকার ভূপেন্দ্র নাথ বর্মণ (৪২) এবং বোদা উপজেলার সাকোয়া ইউনিয়নের ডাঙ্গাপাড়া এলাকার সুরেন্দ্র নাথ বর্মণ (৬৫)।

ফায়ার সার্ভিসের নিয়ন্ত্রণকক্ষে কথা বলে জানা গেছে, ঘটনার দিন থেকে আজ ভোর পর্যন্ত ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরিরা ১২টি দলে ভাগ হয়ে উদ্ধার অভিযান চালান। এতে তাঁদের ৭০ জন সদস্য কাজ করেছিলেন। করতোয়া নদীর আউলিয়ার ঘাট থেকে দিনাজপুরের আত্রাই নদ পর্যন্ত প্রায় ৪২ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে আট দিন ধরে এ উদ্ধার অভিযান চলেছিল। নদীর পানির পাশাপাশি যেসব জায়গায় চর পড়েছে, সেসব স্থানে খোঁজ করছিলেন তাঁরা।

নিয়ন্ত্রণকক্ষ থেকে আরও জানা যায়, ঘটনার দিন ৪৭ ফুট দীর্ঘ ও সাড়ে ১০ ফুট প্রস্থের (মাঝের অংশ) নৌকাটিতে মোট ১০৫ জন যাত্রী উঠেছিলেন। নৌকাডুবির পর সাঁতরে পাড়ে ওঠেন ছয়জন, জীবিত উদ্ধার হন ২৭ জন, ৬৯ জনের লাশ উদ্ধার হয় এবং এখনো ৩ জন নিখোঁজ।

ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের দিনাজপুরের সহকারী পরিচালক মো. মঞ্জিল হক আজ সকাল পৌনে ১০টার দিকে মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, ঘটনার নবম দিনে এসেও নিখোঁজ তিনজনের সন্ধান পাওয়া যায়নি। আজ ভোরে রংপুর, কুড়িগ্রাম ও রাজশাহী থেকে আসা ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরিরা উদ্ধারকাজ বন্ধ করে নিজ নিজ ইউনিটে ফিরে গেছেন। এখন থেকে শুধু পঞ্চগড়, বোদা ও দেবীগঞ্জ ইউনিটের সদস্যরা উদ্ধার অভিযান চালাবেন। পরবর্তী নির্দেশনা না পাওয়া পর্যন্ত উদ্ধার অভিযান চলবে।

গত ২৫ সেপ্টেম্বর দুপুরে বোদার মাড়েয়া বাজারের পাশে করতোয়া নদীর আউলিয়া ঘাট থেকে শতাধিক মানুষ নিয়ে শ্যালো ইঞ্জিনচালিত একটি নৌকা বদেশ্বরী মন্দিরের দিকে যাচ্ছিল। যাত্রীদের অধিকাংশই বদেশ্বরী মন্দিরে মহালয়ার অনুষ্ঠানে যোগ দিতে যাচ্ছিলেন। ঘাট থেকে কিছু দূর যাওয়ার পর নৌকাটি ডুবে যায়।