নাটোরের গুরুদাসপুরে পুনর্বাসনের গরু দেওয়ার কথা বলে মকছেদ আলী নামের এক ভিক্ষুকের কাছ থেকে ২৫ হাজার টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় একটি ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্যের বিরুদ্ধে। তাঁর নাম রবিন মণ্ডল। তিনি উপজেলার চাপিলা ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য।
মকছেদ আলীর অভিযোগ, হাতিয়ে নেওয়া টাকা ফেরত চাওয়ায় স্থানীয় একটি বাজারে তাঁকে আখ দিয়ে পিটিয়েছিলেন রবিন। এখন নানাভাবে ভয়ভীতি দেখানো হচ্ছে। এ ঘটনার প্রতিকার চেয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও), থানা ও ইউপি চেয়ারম্যানের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন তাঁর ছেলে কছিম উদ্দীন।
অভিযোগ অস্বীকার করেছেন ইউপি সদস্য রবিন মণ্ডল। তিনি মুঠোফোনে বলেন, ভিক্ষুক মকছেদ ও তাঁর ছেলে কছিম উদ্দিনের নামে প্রতিবন্ধী ভাতা দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া সরকারি নানা সুবিধা ভোগ করছে পরিবারটি। সর্বশেষ ১০ টাকা কেজির চালের কার্ড চেয়েছিল। না পেয়ে ক্ষুব্ধ হয়ে তাঁর বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে।
ভিক্ষুক মকছেদ আলীর বাড়ি চাপিলা ইউনিয়নের মোকিমপুর গ্রামে। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ভিক্ষুক পুনর্বাসন কর্মসূচির আওতায় উপজেলা সমাজসেবা অধিদপ্তর থেকে সরকারিভাবে একটি গরু দেওয়া হয়েছিল। গরুটি পাইয়ে দেওয়ার জন্য তিন মাস আগে তাঁর কাছ থেকে ২৫ হাজার টাকা নিয়েছিলেন রবিন মণ্ডল। ভিক্ষা ও ধার করে টাকাগুলো জোগাড় করেন তিনি।
সরকারি গরু পেতে কোনো টাকা দিতে হয় না বলে পরে জানতে পারেন মকছেদ আলী। এরপর ছেলে কছিম উদ্দীনের সহায়তায় রবিন মণ্ডলের কাছে টাকা ফেরত চান তিনি।
কছিম উদ্দীন বলেন, ‘আমার বাবা গ্রামে গ্রামে ভিক্ষা করে সংসার চালান। দেড় মাস আগে চাপিলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাহবুবুর রহমান পরিচয়পত্র ও ছবি নেওয়ার জন্য ইউপি সদস্য রবিন মণ্ডলকে আমাদের বাড়িতে পাঠান। কিন্তু তিনি মিথ্যা বলে আমার বাবার কাছ থেকে ২৫ হাজার টাকা হাতিয়ে নেন। টাকা ফেরত চাইলে স্থানীয় একটি বাজারে তাঁকে আখ দিয়ে পিটিয়েছিলেন রবিন মণ্ডল। এ কারণে বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ করতে বাধ্য হয়েছি।’
জানতে চাইলে ইউপি চেয়ারম্যান মাহবুবুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ‘অভিযোগ পাওয়ার পর নিজেদের মধ্যে সমঝোতা করে নিতে বলেছি। কিন্তু আজ (শনিবার) পর্যন্ত বিষয়টি সুরাহ হয়নি। এটা দুঃখজনক।’
পুনর্বাসন কর্মসূচির আওতায় উপজেলার ৯ ভিক্ষুককে ৯টি গরু দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মো. শফিকুল ইসলাম। তিনি বলেন, ওই নয়জনের মধ্যে মকছেদ আলী রয়েছেন। তাঁর অভিযোগটি তদন্ত করে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শ্রাবণী রায়ও তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানিয়েছেন।