মামলা
মামলা

রাজশাহীতে ৮ বছর আগের গুমের ঘটনায় র‌্যাবের বিরুদ্ধে মামলা

রাজশাহীতে আট বছর আগের গুমের অভিযোগে মামলা গ্রহণ করেছেন আদালত। মামলাটি পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগকে (সিআইডি) তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। আজ বৃহস্পতিবার রাজশাহীর গোদাগাড়ী থানার আমলী আদালতের বিচারক লিটন হোসেন এ আদেশ দেন।

এর আগে গতকাল বুধবার দুপুরে র‌্যাব-৫ এর রেলওয়ে কলোনি ক্যাম্পে ২০১৬ সালে কর্মরত সাত সদস্যকে অভিযুক্ত করে মামলার আবেদন করেন গুম হওয়া ব্যক্তির স্ত্রী নাইস খাতুন। এই আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবার সকালে আদালত মামলা গ্রহণ করে তদন্তের আদেশ দেন।

নাইস খাতুনের আইনজীবী মাহমুদুর রহমান বলেন, ‘আদালত মামলাটি গ্রহণ করে সিআইডিকে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। আগামী ২৪ নভেম্বর মামলার তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।’

গুম হওয়া যুবকের নাম ইসমাইল হোসেন। তিনি গোদাগাড়ী পৌরসভার মহিষালবাড়ি আলীপুর মহল্লার ইসরাইল হোসেনের ছেলে। তিনি একজন স্বর্ণালঙ্কার ব্যবসায়ী ছিলেন। গুম হওয়ার সময় তাঁর বয়স ছিল ৩০ বছর।

নাইস খাতুন বলেন, ২০১৬ সালের ৬ সেপ্টেম্বর তাঁর স্বামী ইসমাইল দোকানে যাওয়ার জন্য মোটরসাইকেল নিয়ে বাড়ি থেকে বের হন। রাত ৯টার দিকে উপজেলা সদর ডাইংপাড়া মোড়ে পৌঁছালে র‌্যাব সদস্যরা তাঁকে তুলে নিয়ে যান। তিন দিন পর ইসমাইল অন্য এক ব্যক্তির মুঠোফোন নম্বর থেকে কল করে পরিবারকে জানান, তিনি র‌্যাবের হেফাজতে আছেন। ওই সময় র‌্যাব-৫–এর অধিনায়কের সঙ্গে একাধিকবার দেখা করেন। কিন্তু তিনি কোনো সদুত্তর না দিয়ে কালক্ষেপণ করেন। র‌্যাব ক্যাম্পে থাকা যে দুই ব্যক্তি ইসমাইলকে দেখেন এবং যাঁরা তাঁকে তুলে নিয়ে যেতে দেখেছেন, তাঁদের মামলায় সাক্ষী করা হচ্ছে।

নাইস খাতুনের মামলায় র‌্যাব-৫–এর তৎকালীন রেলওয়ে কলোনি ক্যাম্পের নায়েক সুবেদার শাহিনুর রহমান, উপপরিদর্শক (এসআই) দেবব্রত মজুমদার, দুলাল মিয়া, সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) কামাল হোসেন, ল্যান্স নায়েক মাহিনুর খাতুন, সিপাহি কহিনুর বেগম ও কনস্টেবল মনিরুল ইসলামকে আসামি করা হয়েছে।

নাইস আশঙ্কা করছেন, র‌্যাব সদস্যরা তাঁর স্বামীকে তুলে নেওয়ার পর হত্যা করে লাশ গুম করেছেন। এত দিন র‌্যাবের ভয়ে তিনি মামলা করতে পারেননি। এখন পরিবর্তিত প্রেক্ষাপটে তিনি মামলা করার উদ্যোগ নিয়েছেন। তিনি জানান এত দিন তারা মনে করতেন, কথিত আয়নাঘরে ইসমাইলকে বন্দি করে রাখা হয়েছে। তাই আওয়ামী সরকারের পতনের পর আয়নাঘর থেকে কেউ কেউ ফিরে এলে ইসমাইলের ছোট ভাই ইউসুফ আলীও ঢাকায় ছুটে যান। ইসমাইলের ছোট দুই সন্তানও বাবার অপেক্ষায় ছিল। কিন্তু ইসমাইলকে ছাড়াই বাড়ি ফিরে এসেছে ইউসুফ। এরপরই তাঁরা মামলার সিদ্ধান্ত নেন।