পরিবারের সঙ্গে ঈদের ছুটি কাটিয়ে এরই মধ্যে কর্মস্থলে ফিরেছেন দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের অনেক মানুষ। এখনো কেউ কেউ কর্মস্থলে ফিরছেন। তবে আজ সোমবার সকালে রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া ঘাটে ফেরিতে চাপ কম থাকলেও লঞ্চে যাত্রী বেশি দেখা যায়।
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন করপোরেশনের (বিআইডব্লিউটিসি) দৌলতদিয়া কার্যালয়ের ব্যবস্থাপক মো. সালাহ উদ্দিন বলেন, ঘাটে ছোট-বড় ১৮টি ফেরি থাকলেও গাড়ির চাপ না থাকায় ৮-১০টি ফেরি যানবাহন পার করছে। গাড়ির চাপ বুঝে অন্যান্য ফেরি পর্যায়ক্রমে ছাড়ছে।
আজ সোমবার সকালে দীর্ঘক্ষণ দৌলতদিয়া ঘাটে অবস্থান করে দেখা যায়, ঢাকামুখী পরিবহন ঘাটে আসা মাত্র সরাসরি ফেরিতে উঠে নির্বিঘ্নে নদী পাড়ি দিচ্ছে। লঞ্চঘাটে যাত্রীর চাপ তুলনামূলক বেশি। দৌলতদিয়ার ৭ নম্বর ঘাটে অপেক্ষমাণ কেটাইপ ফেরি কপোতি প্রায় পৌনে এক ঘণ্টা অপেক্ষার পর সকাল সোয়া ৯টার দিকে মানিকগঞ্জ পাটুরিয়ার উদ্দেশে ছেড়ে যায়। এ সময় একটি যাত্রীবাহী বাস, দুটি পণ্যবাহী ট্রাক, তিনটি অ্যাম্বুলেন্সসহ কয়েকটি ছোট গাড়ি নিয়ে ফেরিটি ঘাট ছাড়ে। অন্যান্য ঘাটে অপেক্ষমাণ ফেরিগুলোর অবস্থাও একই রকম।
কর্তব্যরত বিআইডব্লিউটিএ ট্রাফিক বিভাগের ঘাট তত্ত্বাবধায়ক মো. শিমুল ইসলাম বলেন, ছুটি শেষে রোববার বিকেল থেকে কর্মস্থলে ছুটতে শুরু করেছেন মানুষ। পদ্মা সেতু চালুর আগে যে চাপ থাকত, তার অর্ধেকটাও এখন নেই। যে কারণে সবাই স্বস্তিতে কর্মস্থলে যেতে পারছেন।
৭ নম্বর ঘাটে রাজবাড়ী থেকে আসা সৌহার্দ্য পরিবহনের চালক মো. রাশেদ বলেন, পদ্মা সেতু চালুর আগে নদী পাড়ি দিতে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হতো। ঈদের ছুটি শেষে আজ অফিস খুলেছে। ভেবেছিলেন অন্তত আজকের দিন যানজট হতে পারে। কিন্তু ঘাটে এসে দেখেন ফাঁকা।
পরিবহনটির ঘাট তত্ত্বাবধায়ক মনির হোসেন বলেন, পদ্মা সেতু চালুর আগে ঈদের ছুটি শেষে নদী পাড়ি দিতে আসা গাড়িতে ঘাট এলাকায় ছয়-সাত কিলোমিটার যানজট হতো। ভোগান্তিতে পড়তেন হাজারো মানুষ। এখন যানজট নেই, ভোগান্তিও নেই।
জেলা পুলিশ সূত্রে জানা যায়, দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌপথে ছোট-বড় ১৮টি ফেরি ও ২০টি লঞ্চ আছে। দৌলতদিয়ায় ৭টির মধ্যে ৩, ৪ ও ৭ নম্বর ফেরিঘাট এবং একটি লঞ্চ ঘাট সচল রয়েছে। গতকাল রোববার সকাল ৬টা থেকে আজ সোমবার সকাল ৬টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় দৌলতদিয়া ঘাট দিয়ে ৫২১টি বাস, ২৯২টি ট্রাক, ১ হাজার ৬১৭টি ছোট গাড়ি এবং ১ হাজার ৫১৪টি মোটরসাইকেল নদী পাড়ি দিয়েছে।
সাভারের একটি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত ফারজানা আক্তার নামের এক নারী ঈদের ছুটি শেষে কর্মস্থলে ফিরছেন। আলাপকালে তিনি বলেন, পদ্মা সেতু চালুর আগে ঈদে বাড়ি আসা–যাওয়া করতে চরম ভোগান্তিতে পড়তে হতো। এখন কোনো ভোগান্তি নেই। সরাসরি ঘাটে এসে লঞ্চে উঠে পড়েছেন।