পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলায় বিজয়ী নৌকা প্রতীকের প্রার্থী মো. মহিববুর রহমানের সঙ্গে দেখা করতে যাওয়ার পথে সাত সমর্থককে কুপিয়ে জখমের অভিযোগ পাওয়া গেছে। আজ সোমবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে উপজেলার টিয়াখালী ইউনিয়নের হাঁটখোলা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
আহত ব্যক্তিরা হলেন মো. বশির উদ্দিন (৫৫), মিজানুর রহমান (৫০), শিপন (৪০), ইদ্রিস মিয়া (৬৬), সোহেল (৪২), আকিব (২৩) ও মিজান হাওলাদার (৪৮)। তাঁদের মধ্যে বশির উদ্দিনের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাঁকে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। তাঁর দুই হাঁটু, দুই হাতসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে কোপ লেগেছে। পরাজিত ঈগল প্রতীকের সমর্থকেরা এই হামলা চালিয়েছেন বলে অভিযোগ নৌকার সমর্থকদের।
কলাপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন মিজানুর রহমান নিজেকে টিয়াখালী ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক পরিচয় দিয়ে বলেন, তাঁরা টিয়াখালীর ব্রিজঘাট এলাকা থেকে ১৫টি অটোরিকশায় করে কলাপাড়া পৌর শহরে অবস্থিত উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে যাচ্ছিলেন। পথে অটোরিকশার গতি রোধ করে তাঁদের এলোপাতাড়ি মারধর করা হয়। হামলাকারীরা দেশীয় অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে জখম করেছে। এতে কারও কারও মাথা, হাঁটুসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে জখম হয়েছে। টিয়াখালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সুজন মোল্লার নেতৃত্বে এ হামলা চালানো হয় বলে অভিযোগ মিজানুরের।
এ ঘটনার পর স্থানীয় লোকজন আহত ব্যক্তিদের উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে ভর্তি করেন। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসা কর্মকর্তা মো. মিনহাজ উদ্দিন ভূঁইয়া বলেন, বশিরের মাথা, দুই হাতের কনুই, পেটের একাংশের আঘাত গুরুতর। এ ছাড়া তাঁর শরীরেও মারধরে জখম হয়েছে। তাঁর অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে বরিশালে পাঠানো হয়েছে। অন্যদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
টিয়াখালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সুজন মোল্লা অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আহত ব্যক্তিরা টিয়াখালীর জুয়েল প্যাদা হত্যা মামলার আসামি। তাঁরা নৌকার সমর্থক। সাবেক ইউপি সদস্য খোকন প্যাদা ছিলেন স্বতন্ত্র প্রার্থী ঈগলের সমর্থক। গতকাল ভোটের দিন টিয়াখালীর দুটি ভোটকেন্দ্রে হামলার ঘটনা ঘটে। এর জেরে আজ সকালে খোকন প্যাদার বাড়িতে গিয়ে বশির উদ্দিন, মিজান, শিপনসহ কয়েকজন হামলা চালান। এতে খোকন প্যাদার বাবা ফারুক প্যাদা আহত হন। এলাকাবাসীসহ ঈগলের সমর্থকেরা প্রতিরোধ করতে গেলে দুপক্ষের মধ্যে মারামারি হয়।
সুজন মোল্লা আরও বলেন, একজন ইউপি চেয়ারম্যান হয়ে তিনি কখনো এমন কাজের সঙ্গে যুক্ত থাকতে পারেন না। তাঁর কোনো ভাইও জড়িত নয়। ঈগল প্রতীকের সমর্থক হওয়ার কারণে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হয়ে হামলার সঙ্গে তাঁর নাম জড়ানো হয়েছে।
কলাপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আলী আহমেদ বলেন, এখন টিয়াখালী এলাকার পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তার করার জন্য চেষ্টা চলছে।