মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা (মাউশি) অধিদপ্তরের রাজশাহী আঞ্চলিক কার্যালয়ের পরিচালককে কার্যালয় থেকে বের করে তালা দেওয়ার অভিযোগে যুবদল ও ছাত্রদলের সাবেক দুই নেতাকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। গতকাল সোমবার রাতে রাজশাহী মহানগর বিএনপি এক চিঠিতে এ তথ্য জানায়।
আবুল কালাম আজাদ (সুইট) ও তোরাব আলীকে (পারভেজ) বিএনপির প্রাথমিক সদস্যপদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
আবুল কালাম আজাদ রাজশাহী মহানগর যুবদলের সাবেক সভাপতি। তিনি এখনো বিএনপির কোনো পদে নেই। তবে তিনি বিএনপি নেতা হিসেবেই পরিচিত। তোরাব আলী ছাত্রদলের রাজশাহী কলেজ শাখার সাবেক সাধারণ সম্পাদক।
মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক এরশাদ আলী ঈশা, সদস্যসচিব মামুন-অর-রশিদ ও যুগ্ম আহ্বায়ক নজরুল হুদা স্বাক্ষরিত চিঠিতে বলা হয়েছে, সোমবার রাজশাহী অঞ্চলিক শিক্ষা ভবনে অবৈধভাবে তালা ঝোলানো, পরিচালক অধ্যাপক বিশ্বজিৎ ব্যানার্জিকে প্রাণনাশের হুমকি এবং তাঁকে অফিস থেকে বের করে দেওয়ার সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে আবুল কালাম আজাদ ও তোরাব আলী পারভেজকে বিএনপির প্রাথমিক সদস্যপদ থেকে অস্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হলো। পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য চিঠি কেন্দ্রীয় দপ্তরেও পাঠানো হলো।
এর আগে গতকাল বিকেলে একদল তরুণ মাউশির আঞ্চলিক পরিচালক অধ্যাপক বিশ্বজিৎ ব্যানার্জির অফিসে যান। ‘আমরা স্থানীয়’ পরিচয় দিয়ে তাঁরা পরিচালককে কার্যালয় থেকে বের হয়ে যাওয়ার জন্য চাপ দেন। একপর্যায়ে পরিচালক মাউশির মহাপরিচালককে ফোন করার জন্য মুঠোফোন হাতে তোলেন। কিন্তু ওই তরুণেরা তাঁকে ফোন করতে বাধা দেন। চাপের মুখে অধ্যাপক ব্যানার্জি কার্যালয় থেকে বের হয়ে যান। এরপর ওই তরুণেরা কার্যালয়ে তালা দেন। এই তরুণেরা যুবদলের সাবেক নেতা আবুল কালাম আজাদের অনুসারী বলে অভিযোগ উঠেছে।
জানতে চাইলে আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘ওরা কেউ আমার লোক না। তারা সাধারণ ছাত্র-জনতা। তারা দুর্নীতির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করেছে। এতে আমার সমর্থন ছিল। এটা যদি আমার অপরাধ হয়, তাহলে অপরাধ। এ কারণে আমাকে বহিষ্কার করলে দলের জন্যই দুঃখজনক।’
আবুল কালাম আজাদ আরও বলেন, ‘আমি বিএনপির কোনো পদে নেই। তাহলে আমাকে বহিষ্কার করে কীভাবে? আর আমি মহানগর বিএনপির কোনো পদে থাকলেও মহানগর বিএনপি আমাকে বহিষ্কার করতে পারে না। তারা কেন এটা করেছে, সেটা তারাই ভালো বলতে পারবে।’
এ ব্যাপারে কথা বলার জন্য আজ মঙ্গলবার সকালে তোরাব আলীর মুঠোফোন যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তিনি ফোন ধরেননি।
অফিস থেকে বের করে দেওয়ার পর মাউশির আঞ্চলিক পরিচালক বিশ্বজিৎ ব্যানার্জি বিষয়টি বিভাগীয় কমিশনার দেওয়ান মোহাম্মদ হুমায়ুন কবিরকে জানান। এ বিষয়ে বিভাগীয় কমিশনার বলেন, যাঁরা ওই কর্মকর্তার দপ্তরে গিয়েছিলেন, তাঁরা কেউ শিক্ষার্থী নন। কারও বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ থাকলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এভাবে আইন হাতে তুলে নিয়ে কাউকে কার্যালয় ত্যাগ করতে বাধ্য করা যাবে না। এই বিষয়ে কোনো ছাড় দেওয়া যাবে না।