সিলেটে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে ছাত্র-জনতার ওপর হামলার অভিযোগে নগরের কোতোয়ালি মডেল থানায় আরও দুটি মামলা হয়েছে। গতকাল রোববার করা দুটি মামলায় সাবেক সংসদ সদস্য, মেয়র, আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের নেতাদের আসামি করা হয়েছে।
আজ সোমবার বেলা সাড়ে তিনটার দিকে সিলেট নগরের কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জিয়াউল প্রথম আলোকে বলেন, গতকাল নগরের কাজীটুলা এলাকার বাসিন্দা মো. নীরব মিয়া (৩৪) ও দক্ষিণ সুরমার মানিকপুর ফুলসাইন্দ এলাকার মো. আকবর আলী (২৭) বাদী হয়ে পৃথক দুটি মামলা করেছেন।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, নীরব মিয়া বিস্ফোরক দ্রব্যাদি আইনে মামলা করেছেন। তাঁর মামলায় ৪১ জনের নাম উল্লেখ করে আসামি করা হয়েছে। অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে ১০০ থেকে ১৫০ জনকে। আসামিদের মধ্যে আছেন সাবেক সংসদ সদস্য হাবিবুর রহমান (হাবিব), শফিউল আলম চৌধুরী (নাদেল) ও রনজিত সরকার, সিলেট সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র মো. আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী, সিটি করপোরেশনের সাবেক কাউন্সিলর আজাদুর রহমান আজাদ, আফতাব হোসেন, বিক্রম কর ও রুহেল আহমদ। মামলার উল্লেখযোগ্য অন্য আসামিরা হলেন সিলেট জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি আফসর আজিজ ও সহসভাপতি পিযুষ কান্তি দে, যুবলীগ নেতা গিয়াস উদ্দিন আহমদ ও প্রবাল চৌধুরী, সিলেট জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক রাহেল সিরাজ।
গত ৪ আগস্ট বিকেল পাঁচটার দিকে নগরের নয়াসড়ক এলাকায় আসামিরা বিস্ফোরক দ্রব্য ও অস্ত্র নিয়ে হামলা চালিয়েছেন বলে মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে।
পুলিশ আরও জানায়, আকবর আলীর মামলায় ১০০ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে ৫০ থেকে ৬০ জনকে। এজাহারনামীয় উল্লেখযোগ্য আসামিরা হলেন সিলেট সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র মো. আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী, সাবেক সংসদ সদস্য শফিউল আলম চৌধুরী, জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সহসভাপতি দীন মোহাম্মদ ফয়সল, সিলেট মহানগর যুবলীগের সভাপতি আলম খান, সিলেট সিটি করপোরেশনের সাবেক কাউন্সিলর তৌফিক বক্স ও মো. আশিক আহমদ, সিলেট জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি নাজমুল ইসলাম, সিলেট মহানগর ছাত্রলীগের সভাপতি কিশোয়ার জাহান ও সাধারণ সম্পাদক নাঈম আহমদ।
গত ১৯ জুলাই বেলা দুইটার দিকে নগরের বন্দরবাজার এলাকায় জীবন ও সম্পত্তির ক্ষতির লক্ষ্যে বিস্ফোরক পদার্থ নিক্ষেপ ও অস্ত্র নিয়ে আসামিরা হামলা চালিয়েছেন বলে মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়।
ছাত্র-জনতার বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে হামলার ঘটনায় বিস্ফোরক ও নাশকতার একাধিক মামলায় পৃথক অভিযানে সিলেট সিটি করপোরেশনের সাবেক কাউন্সিলর মোস্তাক আহমদ (৫০) ও যুবলীগ নেতা বাবর মিয়াকে (৪৫) গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ২৩ অক্টোবর রাতে সিলেটের বন্দরবাজার থেকে পুলিশ বাবর মিয়াকে ও উপশহর এলাকা থেকে র্যাব মোস্তাক আহমদকে গ্রেপ্তার করেছে।