স্নাতক প্রথম বর্ষে শিক্ষার্থী ভর্তি পরীক্ষার টাকা বণ্টনে বৈষম্য ও অনিয়মের অভিযোগে অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতি পালন করছেন গোপালগঞ্জের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বশেমুরবিপ্রবি) কর্মচারীরা। আজ রোববার সকাল ১০টা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে কর্মচারীরা কর্মবিরতিতে বসেন।
বেলা দেড়টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের গিয়ে দেখা যায় কর্মচারীরা প্রশাসনিক ভবনের সামনে অবস্থান নিয়ে কর্মবিরতি পালন করছেন। এ সময় তাঁদের বৈষম্যবিরোধী বিভিন্ন স্লোগান দিতে দেখা যায়।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায় ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষে গুচ্ছ পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষায় গোপালগঞ্জ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় বরাদ্দ পেয়েছিল ৩ কোটি ৯ লাখ ১৩ হাজার ২৩০ টাকা। ওই টাকা থেকে ১ কোটি ৮৮ লাখ ২৭ হাজার ৪৩৫ টাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের মধ্যে বণ্টন করা হয়। এর মধ্যে শিক্ষকেরা ৫০ শতাংশ, কর্মকর্তা ৩১ দশমিক ২৫ শতাংশ, কর্মচারীদের মধ্যে ১৮ দশমিক ৭০ শতাংশ হিসেবে টাকা বণ্টন করা হয়।
তুলনামূলক কম টাকা দেওয়ায় কর্মচারীদের মধ্যে অসন্তুষ্টি দেখা দিয়েছে। এর জের ধরে কর্মচারীরা আজ সকাল থেকে এ কর্মবিরতিতে বসেন। তাঁদের দাবি এই বৈষম্য দূর করে ন্যায্য টাকা দেওয়া হোক। তা না হলে তাঁরা কাজে যোগ দেবেন না।
কর্মচারী সমিতির নেতাদের ভাষ্য, যখন নিজ নিজ বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ভর্তি পরীক্ষা নেওয়া হতো, তখন শিক্ষকেরা প্রশ্ন করতেন, পরীক্ষায় ডিউটি দিতেন এবং খাতা দেখতেন। তাঁদের অনেক কাজ থাকত। গুচ্ছ পরীক্ষা শুরু হওয়ার পর থেকে ভর্তি পরীক্ষা নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক বা কর্মকর্তাদের কোনো কাজ নেই। কেন্দ্র থেকে (বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন) প্রশ্ন আসে এবং তারাই খাতা দেখেন। তবে কেন টাকা বণ্টনে বৈষম্য করবেন?
সভাপতি তরিকুল ইসলাম বলেন, ভর্তি কমিটির সদস্যসচিব হিসেবে নিয়েছেন ১ লাখ টাকা। বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষক পেয়েছেন ৪৯ হাজার। শিক্ষকেরা অন্যান্য পদের জন্য সম্মানীও নিয়েছেন। কোর কমিটির সদস্য হিসেবে ৩০ হাজার, ডিনের হিসেবে ৮ হাজার, চেয়ারম্যান হিসেবে ৫ হাজার, প্রক্টর হিসেবে ৩ হাজার এবং প্রভোস্ট হিসেবে ৩ হাজার টাকা সম্মানী নিয়েছেন। একজন শিক্ষক তিন-চার ধাপে টাকা নিয়েছেন। আমরা কেন এত কম টাকা পাব?’
শিক্ষকেরা ভাগাভাগি করে অবশিষ্ট যা ছিল তাই কর্মচারীদের দিয়েছেন। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ভর্তি পরীক্ষার টাকা হিসেবে প্রতিজন কর্মচারী ১৬ হাজার টাকা করে পেয়েছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মচারী সমিতির সাধারণ সম্পাদক তৌফিক আহমেদ বলেন, ‘এই বৈষম্য মানি না। তারাও ডিউটি করেছে, কর্মচারীরা ডিউটি করেছে, তাহলে কেন বৈষম্য হবে?’
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় রেজিস্ট্রার মো. দলিলুর রহমান বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মচারীরা গুচ্ছ পরীক্ষার অর্থ বণ্টন নিয়ে কর্মবিরতি পালন করছে। আমি এ বছর প্রথম এসেছি। আমি জানতে পেরেছি এর আগেও এই অনুপাতে এই টাকা ভাগ করা হতো। এখন উপাচার্য স্যারের সঙ্গে আলোচনা করে এর একটা সমাধান করা হবে।’