মন্দিরের চারপাশে পানি, আয়োজন নিয়ে সংশয়

ঝিনাইদহ সদর উপজেলার ধোপাবিলা সার্বজনীন পুজা মন্দিরের তিন পাশে পানি জমে আছে। গতকাল সোমবার দুপুরে
ছবি: প্রথম আলো

শুরু হতে যাচ্ছে বাঙালি সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব দুর্গাপূজা। ঝিনাইদহের সদর উপজেলার ধোপাবিলা সর্বজনীন পূজা মন্দির কমিটির পক্ষ থেকে নেওয়া হয়েছে সব ধরনের প্রস্তুতি। তবে মন্দির ঘিরে জলাবদ্ধতার কারণে সব আয়োজন থমকে গেছে। মন্দিরের সামনে এখন দুই ফুটের বেশি পানি জমে আছে।

স্থানীয় কয়েকজন বাসিন্দা বলেন, ওই এলাকায় অন্তত ৫২টি হিন্দু পরিবার এ মন্দিরে পূজা দেন। এখন মন্দিরটির তিন পাশেই পানি। গত এক সপ্তাহের বৃষ্টিতে এ জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। মন্দির কমিটির কর্মকর্তারা বলছেন, তাঁরা কীভাবে পূজা করবেন, তা বুঝতে পারছেন না।

সরেজমিনে দেখা গেছে, সদর উপজেলার কুমড়াবাড়িয়া ইউনিয়নের গ্রাম ধোপাবিলা। এ গ্রামে একটি ছোট্ট বাজার গড়ে উঠেছে। বাজারের সঙ্গেই রয়েছে একটি মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও একটি মন্দির। বিশাল মাঠের দুই পাশে স্কুল ভবন আর উত্তর-পূর্ব কোনায় রয়েছে ধোপাবিলা সর্বজনীন মন্দির। এই মাঠ বর্তমানে পানিতে তলিয়ে আছে। বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী–শিক্ষকেরা মাঠে নামতে পারছেন না। এক ভবন থেকে আরেক ভবনে পানি মাড়িয়ে বা রাস্তা ঘুরে যেতে হচ্ছে। আর মন্দিরটির তিন পাশ পানি জমে আছে।

মন্দির কমিটির সাধারণ সম্পাদক উত্তম কুমার মজুমদার বলেন, ৫০ বছরের বেশি সময় থেকে এই মন্দিরে পূজা-পার্বণ হচ্ছে। তাঁদের গ্রামের ৫২টি হিন্দু পরিবারের জন্য এটাই একমাত্র মন্দির। ৪ শতক জমির ওপর এই মন্দির প্রতিষ্ঠিত। ইতিমধ্যে তাঁরা প্রতিমা তৈরির কাজ সম্পন্ন করেছেন। ডেকোরেটর দিয়ে প্যান্ডেল তৈরি শুরু হয়েছিল। এরই মধ্যে বৃষ্টি শুরু হয়। বৃষ্টিতে তাঁদের মন্দিরের সামনে ও স্কুল মাঠে পানি জমেছে। এখন মনে হচ্ছে তাঁদের সব প্রস্তুতি বিফলে যেতে বসেছে।

ধোপাবিলা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মিজানুর রহমান বলেন, মন্দির ও স্কুলের একই মাঠ। মাঠের উত্তর–পূর্ব কোণে মন্দির রয়েছে। ধোপাবিলা বাজারের পাশ দিয়ে একটি ব্যক্তিমালিকানার খাল ছিল। সেই খাল দিয়ে পানি প্রবাহিত হয়ে পাশের কুটিদুর্গাপুর বিলে গিয়ে পড়ত। খালটি এখন ভরাট হয়ে গেছে। যে কারণে স্কুল মাঠের পানি প্রবাহিত হতে পারছে না। স্কুল মাঠটি একটু নিচু জায়গায়। তাঁরা প্রতিবছর মাটি ভরাটের কাজ করেন। অন্য বছরগুলোয় এতটা খারাপ অবস্থা হয় না। মাঠে পানি জমলেও সরে যায়। এবার বৃষ্টি বেশি হওয়ায় খারাপ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।

ওই গ্রামের বাসিন্দা পল্লব বিশ্বাস বলেন, মাঠটি অনেকটা উঁচু করা প্রয়োজন। মাটি ভরাট করলে এ অবস্থার অবসান হবে। এবার যে পানি জমেছে, তা এক মাস লাগবে হয়তো শুকাতে। মাঠে মাটি ভরাটের জন্য সরকারের বরাদ্দ প্রয়োজন। পানির কারণে এবার তাঁরা কীভাবে পূজা করবেন, তা নিয়ে চিন্তায় আছেন তাঁরা।

সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রাজিয়া আক্তার চৌধুরী জানান, বিষয়টি তাঁকে এখনো কেউ জানায়নি। তবে তিনি দ্রুত খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নেবেন।