গাজীপুরের শ্রীপুরের বনখরিয়া এলাকায় ঢাকা-ময়মনসিংহ ট্রেন দুর্ঘটনার ১৫ ঘণ্টা পর ক্ষতিগ্রস্ত রেলপথ মেরামত করা হয়েছে। বুধবার সন্ধ্যা সাড়ে সাতটায় কাজ শেষ হয়। তবে রাত পৌনে ১০টা পর্যন্ত ওই পথে ট্রেন চলাচল শুরু হয়নি।
ক্ষতিগ্রস্ত রেলপথ মেরামতের বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন বাংলাদেশ রেলওয়ের ঢাকা বিভাগের বিভাগীয় রেলওয়ে ব্যবস্থাপক মোহাম্মদ সফিকুর রহমান।
রেলওয়ে সূত্র জানায়, ক্ষতিগ্রস্ত রেললাইন মেরামতের পর উদ্ধারকারী ট্রেন সেখানে পরীক্ষামূলকভাবে চলাচল করেছে। রেললাইনের ওই অংশের স্থাপকতা ও অন্যান্য বিষয় পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর সেখানে ট্রেন চলাচল শুরু করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তবে ঘটনাস্থলে লাইন থেকে বিচ্যুত হওয়া বগিগুলো ও লোকোমোটিভ উদ্ধার করা যায়নি। সেগুলো উদ্ধারে কাজ চলছে।
রেলওয়ের পরিবহন বিভাগের একটি সূত্র জানায়, দুর্ঘটনার পর দুটি উদ্ধারকারী ট্রেন ঘটনাস্থলে আসে। দুটি উদ্ধারকারী ট্রেনে লোকো বিভাগ, ক্যারেজ বিভাগ ও প্রকৌশল বিভাগের ৭০ জন কর্মী কাজ করেছেন। এ ছাড়া রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনীর (আরএনবি) ২০ জনের বেশি সদস্য সেখানে নিয়োজিত ছিলেন।
রেলওয়ের কর্মকর্তারা বলেন, ঘটনাস্থলে ২০০ মিটার রেললাইন প্রতিস্থাপন করতে হয়েছে। দুর্ঘটনায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে লোকোমোটিভ (ট্রেনের ইঞ্জিন)। ক্ষতিগ্রস্ত বগিগুলো উঠিয়ে ঢাকার ক্যারেজ ডিপোতে নিয়ে যাওয়া হবে। কিছু কোচ পাঠানো হবে চট্টগ্রামের ক্যারেজ শপে। লোকোমোটিভ উঠিয়ে সেটিকে প্রথমে ঢাকার ক্যারেজ ডিপোতে নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হবে। প্রয়োজনে সেটিকে চট্টগ্রামের ক্যারেজ শপে পাঠানো হতে পারে।
এর আগে ভোর সাড়ে চারটার দিকে ঢাকা-ময়মনসিংহ রেলপথের শ্রীপুরের প্রহ্লাদপুর ইউনিয়নের বনখরিয়া এলাকায় আন্তনগর মোহনগঞ্জ এক্সপ্রেস ট্রেনের লোকোমোটিভসহ মোট সাতটি বগি লাইনচ্যুত হয়। এতে আসলাম হোসেন (৩৫) নামের ময়মনসিংহের গফরগাঁওয়ের একজন যাত্রী নিহত হন। আহত হন আরও ১২ জন। ট্রেনটি নেত্রকোনার মোহনগঞ্জ থেকে ঢাকার কমলাপুরের দিকে যাচ্ছিল।
মঙ্গলবার রাতের কোনো এক সময় গাজীপুরের রাজেন্দ্রপুর ও ভাওয়াল রেলস্টেশনের মাঝামাঝি স্থানে বনখরিয়া এলাকায় রেলপথের একটি অংশ কেটে রাখে দুর্বৃত্তরা। ফলে ভাওয়াল রেলস্টেশনে পৌঁছানোর আগেই ট্রেনটি লাইনচ্যুত হয়ে যায়।
বেলা দেড়টার দিকে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন ঢাকা রেঞ্জ পুলিশের উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি) সৈয়দ নুরুল ইসলাম। তিনি বলেন, রেললাইন কাটতে অক্সিঅ্যাসিটিলিনের ব্যবহার করেছে দুর্বৃত্তরা। অক্সিঅ্যাসিটিলিনের মাধ্যমে রেললাইন গলিয়ে দুর্বৃত্তরা এই নাশকতা করেছে। ঘটনাস্থল থেকে অক্সিঅ্যাসিটিলিন ও এলপিজি সিলিন্ডার জব্দ করা হয়েছে।