ফুলপরীকে নির্যাতন

কারণ দর্শানোর জন্য আরও সময় পেলেন ছাত্রলীগ নেত্রী সানজিদাসহ তিন শিক্ষার্থী

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, কুষ্টিয়া
ছবি: সংগৃহীত

কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ফুলপরী খাতুনকে নির্যাতনের ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রম থেকে বহিষ্কৃত ছাত্রলীগ নেত্রী সানজিদা চৌধুরীসহ তিন শিক্ষার্থীকে কারণ দর্শানোর জন্য আরও সাত দিন সময় দেওয়া হয়েছে।

বুধবার বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার কার্যালয় থেকে তাঁদের কাছে নোটিশটি পাঠানো হয়। এতে বলা হয়েছে, আগামী ৫ এপ্রিল পর্যন্ত কারণ দর্শানোর সময়সীমা বাড়ানো হলো। পরে আর সময়সীমা বাড়ানো হবে না।

বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার কার্যালয় ও একাডেমিক শাখা সূত্রে জানা গেছে, ১৫ মার্চ বুধবার ছিল তাঁদের শোকজের জবাব দেওয়ার শেষ সময়। ওই দিন অফিস সময় (বিকেল চারটা) পর্যন্ত তাবাসসুম ইসলাম ও মুয়াবিয়া জাহান শোকজের জবাব দিয়েছেন। তবে ছাত্রলীগ নেত্রী সানজিদা চৌধুরী ওরফে অন্তরা, হালিমা আক্তার ওরফে ঊর্মি ও ইসরাত জাহান ওরফে মিম নোটিশের জবাব দেননি। তাঁরা সময় বাড়ানোর আবেদন করেছেন। আবেদনে তাঁরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে তদন্ত প্রতিবেদন ও হাইকোর্টের নির্দেশনার কপি চেয়েছেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার এইচ এম আলী হাসান স্বাক্ষরিত নোটিশে উল্লেখ করা হয়েছে, ওই তিন শিক্ষার্থীর আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন প্রশাসকের মতামতের ভিত্তিতে তাঁদের চাওয়া (সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট ডিভিশনের রিট পিটিশন, ১ মার্চের নির্দেশ, ৪ মার্চ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র শৃঙ্খলা কমিটির সভায় গৃহীত সুপারিশ, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও দেশরত্ন শেখ হাসিনা হল এবং জেলা প্রশাসকের তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন) কাগজপত্র সরবরাহ করা গেল না। তবে ওই তিন শিক্ষার্থীর ছাত্রত্ব বাতিলে কেন চূড়ান্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে না—এ বিষয়ে লিখিত জবাব দেওয়ার জন্য আগামী ৫ এপ্রিল পর্যন্ত সময়সীমা বাড়ানো হলো।

এর আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র উপদেষ্টা শেলীনা নাসরীন প্রথম আলোকে বলেছিলেন, ১৫ মার্চ পর্যন্ত নোটিশের জবাব দেওয়ার শেষ সময় ছিল। দ্রুতই পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়ার কথা রয়েছে। তবে ছাত্র শৃঙ্খলা কমিটির সভায় এ বিষয়ে আলোচনা হবে। ওই কমিটির সভা আহ্বান করতে পারেন শুধু উপাচার্য।

গত ১২ ফেব্রুয়ারি রাতে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের দেশরত্ন শেখ হাসিনা হলের গণরুমে সাড়ে চার ঘণ্টা আটকে রেখে নির্যাতন করার অভিযোগ করেন প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী ফুলপরী খাতুন। নির্যাতনের সময় তাঁকে বিবস্ত্র করে ভিডিও ধারণ, গালিগালাজ ও ঘটনা কাউকে জানালে মেরে ফেলার হুমকিও দেওয়া হয়। পরে এ বিষয়ে ফুলপরী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর, হলের প্রাধ্যক্ষ ও ছাত্র উপদেষ্টার কাছে লিখিত অভিযোগ দেন।

ঘটনাটি নিয়ে দুটি তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের পর গত বুধবার হাইকোর্টের বিচারপতি জে বি এম হাসান ও বিচারপতি রাজিক-আল-জলিলের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ কয়েক দফা নির্দেশসহ আদেশ দেন। নির্যাতনের ঘটনায় জড়িত বলে তদন্ত প্রতিবেদনে আসা শাখা ছাত্রলীগের সহসভাপতি সানজিদা চৌধুরীসহ পাঁচ ছাত্রীকে শিক্ষা কার্যক্রম থেকে সাময়িক বহিষ্কার করতে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেন আদালত। এ ঘটনায় হলের প্রাধ্যক্ষ শামসুল আলমকে প্রত্যাহার করতেও নির্দেশ দেওয়া হয়।