গণ অধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক বলেছেন, ‘সরকারকে জনগণের পালস বুঝতে হবে, জনগণের ভাষা বুঝতে হবে। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে মানুষের কষ্ট হচ্ছে। সরকার এখন পর্যন্ত আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি সহনীয় পর্যায়ে আনতে পারেনি। প্রশাসনে আওয়ামী প্রেতাত্মারা বসে আছে।’
ঝিনাইদহ শহরে আজ শনিবার বিকেলে গণ অধিকার পরিষদের গণসমাবেশে নুরুল হক নুর এসব কথা বলেন। গণ অধিকার পরিষদ ঝিনাইদহ জেলা শাখার আয়োজনে ঝিনাইদহ ওয়াজির আলী স্কুল অ্যান্ড কলেজ মাঠে এই গণসমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। গণ অধিকার পরিষদ ঝিনাইদহ জেলা শাখার সভাপতি প্রভাষক সাখাওয়াত হোসেনের সভাপতিত্বে সমাবেশে প্রধান বক্তা ছিলেন দলের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খান। সমাবেশ সঞ্চালনা করেন গণ অধিকার পরিষদ ঝিনাইদহ জেলার শাখার সাধারণ সম্পাদক ইকবাল জাহিদ রাজন।
নুরুল হক বলেন, পাঁচ দশক ধরে যে রাজনীতি চলেছে, তা গণমানুষের রাজনীতি ছিল না, শত শত কোটি থেকে হাজার কোটি টাকা পাচার হয়েছে, ভাগবাঁটোয়ারার জায়গায় সবাই এক ছিল। তিনি বলেন, ‘নির্বাচন নিয়ে আমাদের অস্থিরতা নেই, নির্বাচন নিয়ে আমাদের তাড়া নেই। শেখ হাসিনার ১৫ বছরের জালিম শাসনকে সহ্য করেছি, এই সরকার যদি দু-এক বছর থাকে, আমরা সহ্য করতে পারব।’
প্রশাসনের উদ্দেশে নুরুল হক বলেন, ‘ওসি-এসপি, ইউএনও-ডিসিদের পরিষ্কার বলছি, আমাদের রক্তের ওপর দিয়ে আপনাদের নিয়োগ-পদোন্নতি হচ্ছে। একজন ভিক্ষুক, মুটে-মজুরও যেন আপনাদের সঙ্গে দেখা করতে পারে, সেই ব্যবস্থা করতে হবে। রাজনীতিতে জমিদারি প্রথা গড়ে উঠেছিল,এমপির ছেলে এমপি, মন্ত্রীর ছেলে মন্ত্রী, নেতার ছেলে নেতা।’
ডাকসুর সাবেক এই ভিপি আরও বলেন, ‘আজকের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূসকে শেখ হাসিনা জেলে রাখার সব বন্দোবস্ত করেছিলেন। তাঁকে পদ্মায় ফেলে দিতে চেয়েছেন, খালেদা জিয়াকে ফেলে দিতে চেয়েছিলেন। আল্লাহর কি লিখন, তাঁকেই পালাতে হয়েছে। তিনবারের প্রধানমন্ত্রী জুতা রেখে পালিয়েছেন।’
নুরুল হক নুর বলেন, ‘গণ-অভ্যুত্থান হয়েছে এটা কোনো রাজনৈতিক দলের নেতৃত্বে হয়নি। এতে সব দলের অংশগ্রহণ ছিল। কোটা সংস্কার আন্দোলনে আমরা হামলা, মামলা, নির্যাতনের শিকার হয়েছি। ছাত্রলীগ হামলা, মামলা-গুলি চালিয়েছে। এটা শেষ পর্যন্ত জাতির মুক্তির আন্দোলনে পরিণত হয়। তবে উদ্বেগের বিষয়, এখন নতুন নতুন দখলদার, চাঁদাবাজ তৈরি হয়েছে, তাদের রুখে দিতে হবে। আর রক্ত দিতে চাই না, আমাদের মনের মতো বাংলাদেশ গড়তে চাই, রাষ্ট্র গড়তে চাই।’