গোপালগঞ্জ-১ আসনে ভোট কারচুপির অভিযোগে স্বতন্ত্র প্রার্থীর সংবাদ সম্মেলন ও মানববন্ধন

অনিয়ম ও কারচুপির অভিযোগ এনে নির্বাচনের ফলাফল প্রত্যাখ্যান করেছেন গোপালগঞ্জের-১ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী (ঈগল) মো. কাবির মিয়া। সোমবার বিকেলে মুকসুদপুরে
ছবি: প্রথম আলো

গোপালগঞ্জ-১ (মুকসুদপুর-কাশিয়ানী একাংশ) আসনে দ্বিতীয় হওয়া স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. কাবির মিয়া (ঈগল প্রতীক) অনিয়ম ও কারচুপির অভিযোগ এনে নির্বাচনের ফলাফল প্রত্যাখ্যান করেছেন। আজ সোমবার বিকেলে সাড়ে পাঁচটায় মুকসুদপুরের কমলাপুরে নিজ কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে তিনি এ ঘোষণা দেন।

এরপর তিনি কয়েক হাজার কর্মী-সমর্থক নিয়ে মুকসুদপুর উপজেলার মুকসুদপুর-বরইতলা সড়কে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেন। এ সময় তিনি ভোটারদের আঙুলের ছাপ পরীক্ষা ও ভোট পুনর্গণনার জন্য নির্বাচন কমিশনের হস্তক্ষেপ দাবি করেন।

গতকাল রোববার ভোট গণনা শেষে ঘোষিত বেসরকারি ফলাফলে দেখা যায়, নৌকার প্রার্থী মুহাম্মদ ফারুক খান ১ লাখ ১৮ হাজার ৭৫৭ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ঈগল প্রতীকের প্রার্থী কাবির মিয়া পেয়েছেন ১ লাখ ৮ হাজার ৯৩৪ ভোট। ভোটের ব্যবধান ৯ হাজার ৮২৩।

সংবাদ সম্মেলনের পর কর্মী–সমর্থকদের নিয়ে মানববন্ধন করেন গোপালগঞ্জের-১ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী (ঈগল) কাবির মিয়া। সোমবার বিকেলে মুকসুদপুরের কমলাপুর এলাকায়

ফারুক খান ষষ্ঠবারের মতো এ আসনের সংসদ সদস্য নির্বাচিত হলেন। তিনি আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য। কাবির মিয়া মুকসুদপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ছিলেন। দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে অংশ নিতে তিনি ওই পদ থেকে পদত্যাগ করেন। তিনি মুকসুদপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সদস্য।

সংবাদ সম্মেলনে কাবির মিয়া অভিযোগ করে বলেন, তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী নৌকার প্রার্থী মুহাম্মদ ফারুক খানের কর্মী-সমর্থকেরা কেন্দ্র থেকে তাঁর এজেন্টদের বের করে দেন। এরপর তাঁরা ওই সব ভোটকেন্দ্রের ভেতরে অবস্থান করে জাল ভোট দেন। তাৎক্ষণিকভাবে এ ব্যাপারে প্রশাসন ও নির্বাচনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের জানানো হলেও কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। বরং জাল ভোটারদের আটকের পর আবার তাঁদের ছেড়ে দেওয়া হয়।

গোপালগঞ্জ-১ আসনে বিজয়ী নৌকার প্রার্থী মুহাম্মদ ফারুক খান (বাঁয়ে) এবং তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ঈগল প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী কাবির মিয়া

কাবির মিয়া বলেন, কেন্দ্র থেকে তাঁর এজেন্টদের বের করে দেওয়ার ফলে প্রিসাইডিং কর্মকর্তাদের কাছ থেকে তাঁরা রেজাল্ট শিট সংগ্রহ করতে ব্যর্থ হন। নির্বাচনে পরিকল্পিতভাবে সূক্ষ্ম কারচুপি করা হয়েছে। এ ছাড়া ফারুক খানের লোকজন বিভিন্ন স্থানে তাঁর কর্মী-সমর্থকদের ওপর হামলা, বাড়িঘর ও দোকানপাট ভাঙচুর করেছেন। এই পরিস্থিতিতে এলাকার পরিবেশ উত্তপ্ত হয়ে উঠছে।

কাবির মিয়া আরও বলেন, ‘একজন স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ার পরও জনগণ আমাকে মুকসুদপুরের উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান হিসেবে নির্বাচিত করেছিলেন। নির্বাচনী এলাকার জনগণের প্রত্যাশা অনুযায়ী এবারও জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আমি অংশগ্রহণ করি। আমার জনপ্রিয়তায় ভীত হয়ে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর লোকজন অনিয়ম ও কারচুপির আশ্রয় নিয়েছেন বলে আমি মনে করি।’

সংবাদ সম্মেলনে কাবির মিয়ার প্রধান এজেন্ট মো. ইকবাল মিয়া, মো. কাবির মিয়ার মেয়ে তানিমা মাহনুরসহ কয়েক হাজার কর্মী-সমর্থক উপস্থিত ছিলেন। পরে একই দাবিতে কমলাপুর এলাকার মুকসুদপুর-বরইতলা সড়কের ওপর দাঁড়িয়ে ঘণ্টাব্যাপী মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেন তাঁরা। এ সময় তাঁরা ‘প্রহসনের নির্বাচন মানি না, মানব না’, ‘পুনরায় নির্বাচন চাই’সহ বিভিন্ন ধরনের স্লোগান দেন।