বাঘারপাড়ায় ঈদগাহের কমিটি গঠন নিয়ে সংঘর্ষে আহত ৬

যশোর জেলার মানচিত্র
যশোর জেলার মানচিত্র

যশোরের বাঘারপাড়ায় ঈদগাহের কমিটি গঠনকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের সংঘর্ষে অন্তত ছয়জন আহত হয়েছেন। আজ বৃহস্পতিবার সকালে উপজেলার দোহাকুলা ইউনিয়নের মামুদালীপুর গ্রামের ঈদগাহ মাঠে এ ঘটনা ঘটে। পুলিশ ঘটনার সঙ্গে জড়িত অভিযোগে তিনজনকে আটক করেছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, মামুদালীপুর গ্রামের ঈদগাহের কমিটি গঠনকে কেন্দ্র করে দুটি পক্ষের সৃষ্টি হয়। এক পক্ষের নেতৃত্বে রয়েছেন দোহাকুলা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) ৭ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য জসিম বিশ্বাস। তাঁর সঙ্গে রয়েছেন জাহাঙ্গীর হোসেন। অপর পক্ষের নেতৃত্বে রয়েছেন ইউনুস হোসেন। গত শুক্রবার গ্রামের ঈদগাহের কমিটি গঠনে একটি সভা হয়। সভায় প্রকৌশলী জামালউদ্দিন বিশ্বাসকে সভাপতি, সোহরাব মণ্ডলকে সাধারণ সম্পাদক ও নিয়ামত বিশ্বাসকে কোষাধ্যক্ষ করে তিন সদস্যবিশিষ্ট কমিটি হয়। সভায় দুই পক্ষের লোকজন উপস্থিত ছিলেন। কমিটি গঠনের শেষ পর্যায়ে জসিম বিশ্বাস ও জাহাঙ্গীর হোসেনের পক্ষের লোকজন সভাপতি পদে দোহাকুলা ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান হেকমত আলীর নাম প্রস্তাব করেন। কিন্তু তাতে সংখ্যাগরিষ্ঠ লোকের মতামত না থাকায় সে প্রস্তাব পাস হয়নি। পরে ‌‘এ কমিটি মানি না’ বলে জসিম বিশ্বাস ও জাহাঙ্গীর হোসেনের পক্ষের লোকজন ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন।

ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী মামুদালীপুর গ্রামের বাসিন্দা আলী রাজ, ইমরান হোসেন ও আমিনুর রহমান জানান, আজ ঈদের দিন সকাল সাড়ে আটটার দিকে ঈদের নামাজ শুরু হওয়ার কথা ছিল। ঠিক এ সময় জসিম বিশ্বাস ও জাহাঙ্গীর হোসেনের পক্ষের লোকজন ঘোষণা দেন ‘আগে কমিটি হবে, পরে নামাজ’। এ নিয়ে দুই পক্ষের লোকজনের মধ্যে বাগ্‌বিতণ্ডা শুরু হয়। একপর্যায়ে তা সংঘর্ষে রূপ নেয়।

সংঘর্ষে মামুদালীপুর গ্রামের ইউনুস আলীর ছেলে ইলিয়াস হোসেন (২৯), হামিদ মোল্লার ছেলে রেজাউল ইসলাম (৫৮) ও মশিয়ার রহমান (৫২), নজরুল ইসলামের ছেলে সবুজ হোসেন (৩২), মোহাম্মদ মণ্ডলের ছেলে কুবাদ মণ্ডল (৪০) এবং গোলাম সরোয়রের ছেলে মশিয়ার রহমান (৫০) আহত হন। তাঁদের মধ্যে ইলিয়াস হোসেন ও রেজাউল ইসলামকে বাঘারপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। আহত অন্যরা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন।

বাঘারপাড়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্তব্যরত চিকিৎসক অর্ণব বকসী জানান, মারামারিতে আহত হয়ে দুজন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হয়েছেন। তাঁদের অবস্থা গুরুতর নয়। আহত চারজন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন।

এ ঘটনায় জসিম বিশ্বাস (৪৫) তাঁর ছেলে মহাসিন রেজা (২৫) ও জাহাঙ্গীর হোসেনকে (৪৪) আটক করেছে পুলিশ। বাঘারপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহাদত হোসেন বলেন, মারামারির ঘটনায় তিনজনকে আটক করা হয়েছে। দুই পক্ষ আজই বসে বিষয়টি মীমাংসায় করতে সম্মত হয়েছে। মীমাংসা না হলে এ ব্যাপারে মামলা নেওয়া হবে।