উজানের ঢলে তিস্তার পানি বিপৎসীমার ওপরে, রংপুরে নিম্নাঞ্চলে পানি উঠেছে

তিস্তা নদীর পানি বাড়ায় নিম্নাঞ্চলের বাড়িঘরে পানি উঠতে শুরু করেছে। আজ শনিবার সকালে রংপুরের গঙ্গাচড়া উপজেলার ইচলি এলাকায়
ছবি: মঈনুল ইসলাম

উজান থেকে পাহাড়ি ঢল নামা শুরু করায় রংপুরের নদ–নদীর পানি বাড়ছে। আজ শনিবার সকাল ৯টায় তিস্তা নদীর পানি কাউনিয়া পয়েন্টে বিপৎসীমার ৪১ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। এই পানি আরও বাড়ার শঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্টরা।

আজ সকাল ৯টায় পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) রংপুর কার্যালয়ের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, তিস্তা ব্যারাজের ডালিয়া পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার ৭ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। আর কাউনিয়া পয়েন্টে ৪১ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। সেই সঙ্গে লালমনিরহাটের ডালিয়া পয়েন্টে গত ২৪ ঘণ্টায় ১১৪ মিলিমিটার এবং রংপুরের কাউনিয়া পয়েন্টে ৯২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।

ভারতের উজানে ভারী বৃষ্টি হওয়ার কারণে তিস্তা নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে নীলফামারী, লালমনিরহাট, কুড়িগ্রাম, রংপুর জেলার নিম্নাঞ্চলের বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হতে পারে বলে আশঙ্কা করছে পাউবো। পাউবোর এক বার্তায় বলা হয়েছে, উজানে ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে তিস্তা, ধরলা, দুধকুমার, ব্রহ্মপুত্র নদ-নদীর পানি বেড়ে যাওয়ার শঙ্কা রয়েছে।

বৃষ্টি অব্যাহত থাকায় রংপুর অঞ্চলে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হতে পারে বলে আশঙ্কা করছে পাউবো। আজ শনিবার সকালে রংপুরের গঙ্গাচড়া উপজেলার ইচলি এলাকায়

পানি বাড়ায় তিস্তা নদীতীরবর্তী রংপুরের গঙ্গাচড়া উপজেলার পাঁচটি ইউনিয়নের চরাঞ্চলের মানুষের মধ্যে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা দেখা দিয়েছে। ইতিমধ্যে কিছু এলাকার বাড়িঘরে পানি উঠেছে। পানিবন্দী হওয়ার আশঙ্কায় নিরাপদ স্থানে ছুটে যাওয়ার জন্য প্রস্তুতিও নিচ্ছেন বলে চরাঞ্চলের মানুষজন জানিয়েছেন। এভাবে দুই মাসের ব্যবধানে পাঁচ দফায় পানি ওঠানামা করেছে। এর ফলে কয়েক দফায় নদীপারের মানুষজনের দুর্ভোগও হয়েছে।

আজ সকালে কাউনিয়া ও গঙ্গাচড়া উপজেলার নদীপারের বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, তিস্তার পানি গতকাল শুক্রবার রাতে থেকে বাড়তে শুরু করেছে। লক্ষ্মীটারি ইউনিয়নের কেল্লাপাড় এলাকায় বাড়িঘরে পানি উঠেছে। অধিকাংশ মানুষের ঘরে হাঁটুপানি। আবদুল লতিফ নামের এক কৃষক বলেন, তিন দিন ধরে পানি বাড়ছে আর কমছে। পানির মধ্যেই বসবাস করতে হচ্ছে।

লক্ষ্মীটারি ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আবদুল্লাহেল হাদী বলেন, ভারতের উজান থেকে পাহাড়ি ঢল নেমে আসতে শুরু করেছে। আকাশে মেঘ। আরও বৃষ্টির আশঙ্কা করা হচ্ছে। এ জন্য নদীপারের মানুষদের সতর্কাবস্থায় থাকতে বলা হয়েছে।

এদিকে গঙ্গাচড়া উপজেলার কোলকোন্দ ইউনিয়নের বিনবিনা, উত্তর চিলাখাল, সাউথপাড়া, মটুকপুর; গজঘণ্টা ইউনিয়নের ছালাপাক, মহিষাসুর, রমাকান্ত, আলালচর, জয়দেব এলাকা এবং নোহালী ও আলমবিদিতর ইউনিয়নের মানুষজনের মধ্যে আবারও নতুন করে উৎকণ্ঠা দেখা দিয়েছে বলে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানরা জানিয়েছেন।

পাউবো রংপুর কার্যালয়ের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী আহসান হাবিব বলেন, উজানের পাহাড়ি ঢল নামতে শুরু করায় ইতিমধ্যে তিস্তাসহ বিভিন্ন নদ-নদীর পানি বাড়তে শুরু করেছে।