ইজতেমার ময়দানে সাদপন্থীদের হামলার প্রতিবাদে বৃহত্তর ময়মনসিংহের আলেম-উলামাদের সংগঠন ইত্তেফাকুল উলামা মোমেনশাহী মহাসমাবেশ করেছে। আজ সোমবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত ময়মনসিংহ নগরীর আঞ্জুমান ঈদগাহ মাঠে এ মহাসমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। বেলা সোয়া একটায় মহাসমাবেশে ৫ দফার দাবি জানিয়ে ঘোষণাপত্র পাঠ করেন সংগঠনের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক মাওলানা আবুল কালাম আজাদ। এ সময় উপস্থিত হাজার হাজার আলেম, উলামা ও ধর্মপ্রাণ মুসল্লি দাবিগুলোর সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করে মুহুর্মুহু স্লোগান দেন।
দাবিগুলো হলো হামলার সঙ্গে জড়িত সাদপন্থীদের অবিলম্বে গ্রেপ্তার করে উপযুক্ত বিচার নিশ্চিত করতে হবে; দাওয়াত ও তাবলিগের মেহনত সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার জন্য ‘খুনি সন্ত্রাসীদের’ কার্যক্রম স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধ করতে হবে, ময়মনসিংহ বিভাগ থেকে যেসব সন্ত্রাসী টঙ্গীর নৃশংস হত্যাকাণ্ডে অংশগ্রহণ করেছে, তাদের চিহ্নিত করে গ্রেপ্তার করতে হবে; কাকরাইল মসজিদ ও টঙ্গী ইজতেমা মাঠে সাদপন্থীদের সব কার্যক্রম নিষিদ্ধ করতে হবে; দেশ অস্থিতিশীলতার সঙ্গে জড়িত সাদপন্থী ‘গডফাদারদের’ শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে এবং ‘মব জাস্টিস’ প্রতিরোধ করতে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।
আজ সকাল ১০টা থেকে নগরীর আঞ্জুমান ঈদগাহ মাঠে শুরু হওয়া এই মহাসমাবেশে দলে দলে মাদ্রাসার শিক্ষার্থী, আলেম-উলামা ও হাজার হাজার ধর্মপ্রাণ মানুষ যোগ দেন। একপর্যায়ে মহাসমাবেশ মাঠ পূর্ণ হয়ে জমায়েত সামনের সড়কে ছড়িয়ে পড়ে।
মহাসমাবেশে মাওলানা আব্দুর রহমান হাফেজ্জীর সভাপতিত্বে ও মুফতি শরীফুর রহমানের সঞ্চালনায় বক্তব্য দেন আল্লামা খালেদ সাইফুল্লাহ সাদী, অধ্যাপক হাফিজ উদ্দিন, অধ্যাপক মামুন, ক্যাপ্টেন শফিক সালাউদ্দিন, মুফতি মুহিব্বুল্লাহ, মুফতি মাহাবুল্লাহ, মুফতি আব্দুল্লাহ আল মামুন, মাওলানা মঞ্জুরুল হক, মাওলানা মুহাম্মদ প্রমুখ।
বক্তারা বলেন, সাদপন্থীরা ইসলামের কথা বলে সহজ-সরল মানুষদের বিপথগামী করছে। ইসলাম ও দাওয়াতে তাবলিগ নিয়ে বাইরের দেশের ইশারায় তারা ষড়যন্ত্র করে পরিকল্পিতভাবে বিভেদ সৃষ্টি করছে। এতে সাধারণ মানুষের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে।
বক্তারা এ ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের বিচার দাবি করে বলেন, দেশের সাধারণ ধর্মপ্রাণ মানুষ কোনো একক ব্যক্তিকে অনুসরণ করেন না। তাঁরা কোনো ব্যক্তিপন্থী নন। ইসলামের পথে তাঁরা হকপন্থী হিসেবে কাজ করতে চান। ধর্ম ও দেশের যেকোনো পরিস্থিতিতে সুরায়ে নেজামে আলোচনা করেই তাঁরা কাজ করছেন। তাঁরা মনে করেন, ইজতেমা ময়দানে হত্যাকারীরা পার পেয়ে গেলে দেশে বিচারহীনতার সংস্কৃতি তৈরি হবে এবং মব জাস্টিস ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়বে। যার দায় বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার কোনোভাবে এড়াতে পারবে না।