বন্যার কারণে শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাস অনলাইনে, পরীক্ষার নতুন সময়সূচির সিদ্ধান্ত

সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়
ফাইল ছবি

সিলেট বিভাগে চলমান বন্যা পরিস্থিতির কারণে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাস ও পরীক্ষার বিষয়ে নতুন সিদ্ধান্ত নিয়েছে কর্তৃপক্ষ। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপরেজিস্ট্রার মো. ইউনুস আলী স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ সিদ্ধান্ত জানানো হয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, দেশে বিশেষ করে সিলেট বিভাগের বন্যা পরিস্থিতি অবনতির কারণে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত ২৩ জুন থেকে এ বিশ্ববিদ্যালয়ের সব ক্লাস অনলাইনে অনুষ্ঠিত হবে। বন্যা পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে স্ব স্ব বিভাগের বিভাগীয় প্রধানেরা পরীক্ষার সময়সূচি পুনর্নির্ধারণ করবেন। এ ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের অফিসগুলো ২৩ জুন থেকে যথারীতি খোলা থাকবে। কর্তৃপক্ষের অনুমোদনক্রমে এ বিজ্ঞপ্তি জারি করা হলো।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ-উপাচার্য মো. কবির হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, বন্যার পানি সরে গিয়ে পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের সব ক্লাস অনলাইনে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া কয়েকটি বিভাগে ২৩ থেকে ২৫ জুনের মধ্যে পরীক্ষা ছিল। শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধিদের সঙ্গে কথা বলে পুনরায় পরীক্ষার সময়সূচি করার কথা বলে হয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক স্তরের সবার সম্মতি মোতাবেক এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানান সহ-উপাচার্য। তিনি আরও বলেন, ‘শিক্ষার্থীরা অনেকেই বাসাবাড়িতে পানিবন্দী অবস্থায় রয়েছেন। সিলেট ও সুনামগঞ্জে যাতায়াতের সড়কগুলোর পানির নিচে তলিয়ে গেছে। বিশ্ববিদ্যালয়সংলগ্ন এলাকার শিক্ষার্থীদের মেসে ও যাতায়াতের সড়কেও বন্যার পানি প্রবেশ করেছে। তাই জরুরি ভিত্তিতে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।’

গ্রীষ্মকালীন ছুটি ও পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে গত ২৬ মে থেকে ২০ জুন পর্যন্ত ২৬ দিন বিশ্ববিদ্যালয়ের সব ক্লাস বন্ধ ছিল। ২১ ও ২২ জুন (শুক্র ও শনিবার) সাপ্তাহিক বন্ধ থাকায় ২৩ জুন থেকে ক্লাস, পরীক্ষা ও দাপ্তরিক কাজ যথারীতি শুরু হওয়ার কথা ছিল। এর আগেই চলমান বন্য পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে নতুন সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। তবে ছুটিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের সব আবাসিক হল খোলা রাখা হয়।

বন্যার মধ্যে শিক্ষার্থীরা হলে ফিরতে পারবেন কি না, জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের হল প্রাধ্যক্ষ কমিটির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আবু সাঈদ আরফিন খান প্রথম আলোকে বলেন, ‘হল সব সময় খোলা আছে। যেকোনো শিক্ষার্থী হলে এলে তাঁদের সিটে থাকতে পারবেন।’

গত ১৫ দিনে সিলেট নগরীতে অতি ভারী বৃষ্টিতে পাঁচবার তলিয়েছে শতাধিক এলাকা। পরে উজান থেকে নেমে আসা পানিতে সুরমাসহ সিলেটের নদ-নদীগুলো বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। এতে সিলেটের সব কটি উপজেলায় বন্যা পরিস্থিতি দেখা দিয়েছে।

এর আগে গত ২৯ মে ভারী বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের কারণে সিলেটে বন্যা দেখা দেয়। ৮ জুনের পর থেকে বন্যা পরিস্থিতি অনেকটা স্বাভাবিক হয়ে আসে। সর্বশেষ গত সোমবার শুরু হওয়া অবিরাম বৃষ্টিতে আবার জেলায় বন্যা পরিস্থিতি দেখা দিয়েছে। এর আগে ২০২২ সালের মে মাসে ভারতের উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল ও বৃষ্টিতে নগরে বন্যা দেখা দেয়।