নড়াইলের লোহাগড়ায় জমিজমা নিয়ে বিরোধের জেরে এক তরুণকে কুপিয়ে হত্যার অভিযোগ পাওয়া গেছে। আজ বৃহস্পতিবার সকাল ৯টার দিকে উপজেলার লক্ষ্মীপাশা ইউনিয়নের বয়রা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। এতে আরেক ব্যক্তি আহত হয়েছেন।
নিহত তরুণের নাম নয়ন শেখ (২৪)। তিনি একই গ্রামের বাসিন্দা ও পেশায় কৃষিজীবী ছিলেন। অন্যদিকে আহত ওই ব্যক্তির নাম সবুজ কাজী। তিনি নয়নের প্রতিবেশী।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, নয়নের অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী লোহাগড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি আছেন। আজ সকালে তাঁকে দেখতে সবুজকে নিয়ে মোটরসাইকেলে করে বাড়ি থেকে হাসপাতালের দিকে রওনা হন নয়ন। কিছু দূর যাওয়ার পর হামলাকারীরা তাঁদের পথ আটকে নয়নকে এলোপাতাড়ি কোপাতে শুরু করে। এ সময় সবুজ ঠেকাতে গেলে তাঁকেও কোপানো হয়। পরে স্থানীয় লোকজন দুজনকে উদ্ধার করে লোহাগড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিলে সেখানে নয়নের মৃত্যু হয়।
নয়ন শেখের ফুপাতো ভাই আবু তাহের হাসপাতালে আহাজারি করছিলেন। জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘নয়ন শেখের চাচাতো ভাইদের সঙ্গে জমিজমা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে দ্বন্দ্ব-সংঘাত চলছে। এর জেরে জুয়েল, আল-আমিন, আকাশ, ইমনসহ আরও কয়েকজন তাঁকে কুপিয়ে হত্যা করেছে।’
নয়ন শেখের চাচাতো ভাইদের সঙ্গে জমিজমা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে দ্বন্দ্ব-সংঘাত চলছে। এর জেরে জুয়েল, আল-আমিন, আকাশ, ইমনসহ আরও কয়েকজন তাঁকে কুপিয়ে হত্যা করেছে।নয়ন শেখের ফুপাতো ভাই আবু তাহের
অভিযুক্ত ব্যক্তিদের সঙ্গে কথা বলতে একই এলাকায় তাঁদের বাড়িতে গিয়ে জানা গেছে, ঘটনার পর থেকে তাঁরা পলাতক আছেন।
এদিকে হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক কৃষ্ণপদ বিশ্বাস বলেন, নয়নকে কোপানো হয়েছে। হাসপাতালে আনার পর কিছুক্ষণের মধ্যে তাঁর মৃত্যু হয়। তাঁর শরীরে ধারালো অস্ত্রের ৯ থেকে ১০টি কোপ আছে। মাথা কেটে মগজ বের হয়ে গেছে, ডান হাত প্রায় বিচ্ছিন্ন। সেই সঙ্গে বাঁ পায়ের রগও কেটে গেছে। এ ছাড়া চোয়ালে মারাত্মক কোপ আছে। আহত সবুজের অবস্থাও ভালো নয়। তাঁকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে উন্নত চিকিৎসা দেওয়ার জন্য পাঠানো হয়েছে।
এ ঘটনায় প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে বলে জানান জেলার পুলিশ সুপার মোহা. মেহেদী হাসান। তিনিসহ অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মো. দোলন মিয়া ও কয়েকজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। ময়নাতদন্তের জন্য নয়নের মরদেহ নড়াইল সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।