নরসিংদীর পলাশ উপজেলায় ঘরের ভেতরে ঢুকে কলেজপড়ুয়া এক ছাত্রীকে ছুরিকাঘাতে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। শুক্রবার রাত নয়টার দিকে উপজেলার জিনারদী ইউনিয়নে এ ঘটনা ঘটে। শনিবার সকালে বুকে বিদ্ধ হয়ে থাকা ছুরিসহ ওই কলেজছাত্রীর লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।
হত্যাকাণ্ডের শিকার ওই কলেজছাত্রীর বয়স ১৮। তিনি এলাকার একটি কলেজে দ্বাদশ শ্রেণিতে পড়তেন। কে বা কারা, কী কারণে তাঁকে এভাবে হত্যা করল, সে বিষয়ে এখনো কিছু জানাতে পারেনি পুলিশ।
ছাত্রীর মা বলেন, শুক্রবার সন্ধ্যার পর বাড়িসংলগ্ন মন্দিরে পরিবারের সদস্যরা রথযাত্রার প্রসাদ খেতে গিয়েছিলেন। বাড়িতে ফিরে নিজের ঘরে পড়াশোনা করতে বসেন ওই ছাত্রী। অন্যদিকে তাঁর মা কবিরাজি চিকিৎসা নিতে পাশের একটি বাড়িতে যান। শুক্রবার রাত নয়টার পরে তিনি (মা) বাড়িতে ফিরে দেখেন ঘরে স্বামী আর ছেলে ঘুমাচ্ছেন। এ সময় অপর ঘরে গিয়ে দেখেন বুকে ছুরিবিদ্ধ অবস্থায় তাঁর মেয়ের লাশ মেঝেতে পড়ে আছে। এ সময় ছাত্রীর গায়ে কোনো কাপড় ছিল না। তাঁর চিৎকার শুনে প্রতিবেশী ও স্থানীয় লোকজন এগিয়ে এসে থানা-পুলিশে খবর দেন।
রাতেই অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) অনির্বাণ চৌধুরী ও পলাশ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) এমদাদুল হক ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। শনিবার সকালে পলাশ থানার উপপরিদর্শক সামসুল হক নিহত কলেজছাত্রীর লাশ উদ্ধার করে সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করেন। পরে ময়নাতদন্তের জন্য লাশ নরসিংদী সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠান তিনি।
পরিবারের সদস্যরা বলছেন, দুই বছর আগে মা-বাবাকে না জানিয়ে এক ব্যক্তিকে বিয়ে করেন ওই ছাত্রী। বিয়ের দেড় বছর শ্বশুরবাড়িতে থাকলেও পারিবারিক কলহের কারণে ছয় মাস ধরে ওই ছাত্রী তাঁর মা-বাবার সঙ্গেই ছিলেন। তবে মাঝেমধ্যেই ছাত্রীর স্বামী তাঁদের এই বাড়িতে আসা-যাওয়া করতেন। শুক্রবার রাত সোয়া নয়টার দিকে ছাত্রীর স্বামীকে ওই এলাকায় খালি পায়ে দ্রুত হেঁটে যেতে দেখেছেন প্রতিবেশী এক ব্যক্তি।
এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে মুঠোফোনে ছাত্রীর স্বামীকে একাধিকবার কল দেন এই প্রতিবেদক। তাঁর ব্যবহৃত মুঠোফোন নম্বরটি প্রতিবারই বন্ধ পাওয়া গেছে। বাড়িতে গিয়েও তাঁকে পাওয়া যায়নি।
স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য জয়ন্ত দাস বলেন, ‘ঠিক কী কারণে তাঁকে এভাবে হত্যা করা হলো, কেউ কিছু বুঝতে পারছি না। হত্যাকাণ্ডের পেছনে দাম্পত্য কলহ নাকি অন্য কোনো কারণ, তা পুলিশকেই তদন্ত করে খুঁজে বের করতে হবে।’
পলাশ থানার উপপরিদর্শক সামসুল হক বলেন, ওই কলেজছাত্রীকে ধর্ষণ করা হয়েছিল কি না, নিশ্চিত হতে ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন হাতে পাওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। এ ঘটনায় মামলা প্রক্রিয়াধীন।