খুলনায় মো. শাহজালাল নামের এক যুবকের দুই চোখ তুলে ফেলার অভিযোগে খালিশপুর থানার সাবেক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাসিম খানসহ পুলিশ ও আনসারের ১২ সদস্যের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। ঘটনার সাত বছর পর আজ বুধবার দুপুরে শাহজালালের মা মোসা. রেনু বেগম বাদী হয়ে খুলনা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলাটি করেছেন।
মামলার অপর আসামিরা হলেন খালিশপুর থানার সাবেক উপপরিদর্শক (এসআই) তাপস কুমার পাল, মো. মোরসালিন মোল্লা, নূর ইসলাম ও মো. মিজানুর রহমান, পুলিশ সদস্য আল মামুন, আনসারের সিপাহি মো. আফসার আলী, নায়েক আবুল হাসান, রেজাউল হক, সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) রাসেল, সৈয়দ সাহেব আলী ও সুমা আক্তার।
নির্যাতনের শিকার যুবকের নাম মো.শাহজালাল পিরোজপুরের কাউখালী উপজেলার সুবিদপুর গ্রামের বাসিন্দা।
মামলার আরজিতে উল্লেখ করা হয়েছে, শাহজালাল ২০১৭ সালের ১৫ জুলাই স্ত্রী ও সন্তানকে নিয়ে নগরের খালিশপুর থানার নয়াবাটি রেললাইন বস্তিতে তাঁর শ্বশুরবাড়িতে যান। ১৮ জুলাই রাত আটটার দিকে তিনি শিশুকন্যার দুধ কেনার জন্য বাসা থেকে বের হন। তখন তাঁর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা থাকার মিথ্যা কথা বলে পুলিশ তাঁকে আটক করে খালিশপুর থানায় নিয়ে যায়। খবর পেয়ে পরিবারের সদস্যরা থানায় গেলে পুলিশ তাঁদের কাছে দেড় লাখ টাকা দাবি করে। কিন্তু তাঁরা টাকা দিতে পারেননি।
মামলার আরজিতে আরও উল্লেখ করা হয়, রাত সাড়ে ১১টার দিকে পুলিশ তাঁকে গাড়িতে করে গোয়ালখালী এলাকায় নির্জন স্থানে নিয়ে যায়। সেখানে নিয়ে স্ক্র-ড্রাইভার দিয়ে খুঁচিয়ে আসামিরা শাহজালালের দুই চোখ উপড়ে ফেলে। বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পর পুলিশ সুমা আক্তার নামের একজনকে দিয়ে শাহজালালের বিরুদ্ধে মিথ্যা ছিনতাই মামলা করায়।
বিষয়টি জানার পর শাহজালালের মা-বাবা খুলনায় আসেন এবং কয়েক দিন পর আদালতে মামলা করেন। কিন্তু ২০১৮ সালের ৩০ এপ্রিল জেলা আইনজীবী সমিতির সামনে থেকে পুলিশ গাড়িতে করে শাহজালাল ও তাঁর মা-বাবাকে তুলে নিয়ে যায়। এরপর ফাঁকা স্ট্যাম্প এবং সাদা ও নীল কাগজে জোরপূর্বক স্বাক্ষর করিয়ে তাঁদের ছেড়ে দেয়। পরে তাঁরা জানতে পারেন, স্বাক্ষর করা কাগজপত্র ব্যবহার করে পুলিশ সদস্যরা আদালত থেকে মামলা প্রত্যাহার করিয়ে নিয়েছেন।
বাদীর আইনজীবী মোমিনুল হক জানান, পরে শাহজালালের মা-বাবা থানায় মামলা করতে গেলে পুলিশ মামলা নেয়নি। দেশে আইনের শাসন ফিরে আসায় এখন তাঁরা মামলা করেছেন।