দিন দিন আমরা একটি কর্তৃত্ববাদী ব্যবস্থার দিকে যাচ্ছি: বদিউল আলম মজুমদার

সুজনের বরিশাল বিভাগীয় মতবিনিময় সভায় বক্তব্য দেন বদিউল আলম মজুমদার। শুক্রবার দুপুরে নগরের সদর রোডে বিডিএস মিলনায়তনে
ছবি: প্রথম আলো

সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার বলেছেন, ‘দিন দিন আমরা একটি কর্তৃত্ববাদী ব্যবস্থার দিকে যাচ্ছি। গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার অন্যতম বৈশিষ্ট্য হচ্ছে জনগণের ভোটাধিকার। কিন্তু সেই অধিকার আজ সর্বজনীন নেই। আমাদের নিম্নমুখী দায়বদ্ধতা যতটুকু ছিল, তা–ও লোপ পেয়েছে। সমান্তরাল দায়বদ্ধতা সৃষ্টির জন্য জাতীয় সংসদ কাজ করে। কিন্তু বর্তমান জাতীয় সংসদ একমুখী—একটি দলের, ফলে গণতন্ত্রর সব বৈশিষ্ট্য লোপ পেয়েছে। এর ফলে দুর্নীতি, দুর্বৃত্তায়ন চলছে। এমন অবস্থা অব্যাহত থাকলে তা আরও ভয়াবহ আকার নিতে পারে। পরবর্তী প্রজন্মের জন্য আমাদের উচিত এই ব্যবস্থাকে রোধ করে একটি জবাবদিহিমূলক সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় কাঠামো নির্মাণে সবার সক্রিয় ভূমিকা রাখা।’

আজ শুক্রবার বরিশালে সুজনের বিভাগীয় মতবিনিময় সভায় বদিউল আলম মজুমদার এমন মন্তব্য করেন। সকাল সাড়ে ১০টায় নগরের সদর রোডে বিডিএস মিলনায়তনে এই মতবিনিময় সভার আয়োজন করা হয়। বেলা আড়াইটা পর্যন্ত এই মতবিনিময় সভা চলে। এতে বরিশাল বিভাগের বরগুনা ছাড়া বাকি পাঁচ জেলা ও মহানগর এবং উপজেলার প্রতিনিধিরা অংশ নেন।

সভায় বদিউল আলম মজুমদার আরও বলেন, ‘দেশে গণতন্ত্র, সুশাসন, জবাবদিহিমূলক সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় কাঠামোর জন্য সুজন কাজ করছে। আমরা মানুষের পক্ষে, গণতন্ত্রের পক্ষে। কোনো দলের পক্ষে নই, আমরা নিরপেক্ষ। কিন্তু আমরা সচেতন নাগরিক হিসেবে আমাদের যা করণীয় রয়েছে, এখনো তা করতে পারিনি।’

সুজন সম্পাদক বলেন, ‘এই স্বাধীনতার জন্য রক্ত, জীবন, মা-বোনেরা সম্ভ্রম দিয়েছেন। স্বাধীনতা পেয়েছি বলেই আমরা স্বাধীনভাবে কথা বলার অধিকার পেয়েছি। দেশ অনেক সমৃদ্ধ হয়েছে। কিন্তু এত কিছুর পরও দেশমাতার বদনখানি এখনো মলিন। কারণ, এখনো স্বাধীনতার অনেক স্বপ্ন পূরণ হয়নি।’

সুজনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক দিলীপ কুমার সরকারের সঞ্চালনায় মতবিনিময় সভায় বক্তব্য রাখেন সুজন বরিশাল জেলা সভাপতি আবদুল মোতালেব হাওলাদার, মহানগর সাধারণ সম্পাদক রফিকুল আলম, পিরোজপুর জেলা সভাপতি মনিরুজ্জামান নাসিম আলী, ভোলা জেলা সভাপতি মোবাশ্বের উল্লাহ, বরিশাল জেলা মহিলা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক টুলু রানী কর্মকার, বরিশাল সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি স্বপন খন্দকার, সুজনের গৌরনদী উপজেলা সভাপতি জহুরুল ইসলাম, মুলাদী উপজেলার প্রতিনিধি হ‌ুমায়ূন কবির খান প্রমুখ।

মতবিনিময় সভায় বক্তারা বলেন, মানুষ ভোট দিতে চায়। কিন্তু ভোট দিতে গিয়ে বিকল্প থাকতে হবে। নিজেদের মধ্যে ভোট হলে তো সেই বিকল্প থাকে না। তাই মানুষ ভোটকেন্দ্রে যাওয়ার ব্যাপারে আগ্রহ দেখায় না। পছন্দমতো প্রার্থী বাছাই করতে নির্বাচন সবার জন্য অংশগ্রহণমূলক হওয়া প্রয়োজন। তাঁরা বলেন, দেশকে এগিয়ে নিতে হলে শুধু ক্ষমতা পরিবর্তন হলেই চলবে না। গণতন্ত্র, জবাবদিহি, স্বচ্ছতা, ভোটাধিকারসহ সব ক্ষেত্রে ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে হবে। আর এতে সবচেয়ে বেশি ভূমিকা রাখতে পারেন সমাজের বিভিন্ন অঙ্গনের সচেতন ব্যক্তিরা।